সিলেটপোস্ট ডেস্ক::সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি সাইফুরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক ধারায় ২টি চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এবং চাঁদাদাবি ও ছিনতাইর অভিযোগে দুটি চার্জশিট প্রদান করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সিলেটের চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেমের আদালতে তিনি এ চার্জশিট প্রদান করেন।
আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণের কার্যালয়ে উপ কমিশনার সোহেল রেজা প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, মামলায় গ্রেফতার ৮ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে ২টি চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তরা হলো ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, রবিউল হাসান ওরফে রবিউল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান মাছুম, মো. আইনুদ্দিন আইনুল ও মিজবাউল ইসলাম রাজন।
তিনি বলেন, ডিএনএ রিপোর্টে ৬ জনের নমুনা ম্যাচ করেছে। বাকী ২ জনকে সহযোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। চার্জশিটে ৪৯ জনকে স্বাক্ষী করা হয়। মোট ৩৪৭ পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।
এদিকে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার দুই মাস পর গত ২৯ নভেম্বর অভিযুক্ত ৮ আসামির ডিএনএ রিপোর্ট তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে। এর আগে গত ১ অক্টোবর ও ৩ অক্টোবর ২ দিনে এ মামলায় গ্রেফতার ৮ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহের পর ঢাকায় সিআইডির বিশেষায়িত ল্যাবে তা পরীক্ষা করা হয়।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ওই গৃহবধূকে গণধর্ষণ কওে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এ ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে এসএমপির শাহপরাণ থানায় নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার তদন্তে এজাহারনামীয় ৪ আসামিসহ এজাহারের বাইরের আরো ২ আসামির ধর্ষণে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পায় পুলিশ। এছাড়া এজাহারনামীয় ২ আসামির সরাসরি ধর্ষণে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রমানিত না হলেও সহযোগিতার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
মামলার পর র্যাব ও সিলেট জেলা পুলিশের অভিযানে আটক ৮ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার সকলেই ৫ দিন করে রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। গত ২২ নভেম্বর অস্ত্র আইনে সাইফুর রহমান ও শাহ মাহবুবুর রহমান রনির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ।
এছাড়াও গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত চার আসামির ছাত্রত্ব এবং সার্টিফিকেট বাতিল করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি তাদের স্থায়ীভাবে এমসি কলেজ থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলো, সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসান।