জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার নলজুর নদীটি খননের পর খালে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ফলে নদী খননের পুরোপুরি সুফল না পাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে উপজেলাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলা সদরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নলজুর নদী এক সময়স্রোতস্বিনী নদী ছিল। এ নদী
দিয়ে লঞ্চ, ষ্টীমারসহ বড় বড় নৌযান চলাচল করত। নদীর দুই পাশ বেদখল করে গড়ে উঠেছে নামে বেনামে
অসংখ্য স্থাপনা, ঘর-বাড়ি, আবাসিক হোটেল, দোকান-ঘরসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে
এলাকাবাসী নদী খননের দাবি জানিয়ে আসলে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবার নদী খননের উদ্যোগ নেয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলা সদরের বাদাউড়া থেকে এরালিয়া
বাজার পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৫০ ফুট প্রস্থে নদী খননের উদ্যোগ নেয়া হয়। ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান ন্যাশন টেক লিমিটেড ঢাকা সাড়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দে কাজ বাস্তবায়ন করছে। ১৮ জানুয়ারি কাজ
শুরুহয়েছে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খনন যন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে নদীর একপাশে জমা রাখায় নদীটি খালেব পরিণত হচ্ছে। বৃষ্টি হলে খননকৃত মাটি আবার নদীতে মিশে যাবে। জগন্নাথপুর বাজার বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমেদ জানান, নদীর দুই পাশ বেদখল করে গড়ে উঠা স্থাপনার কারণে নদীটির স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হয়ে ক্রমশ এটি বিলীন হতে যাচ্ছে। খননের পর নদীটি আবারও আগের রূপে ফিরে যাবে আশা ছিল। এখন দেখছি নদী আরো সংকোচিত হয়ে খালে পরিণত হচ্ছে। ফলে নদীর বুকের অবৈধ স্থাপনা বহাল থাকছে। সদ্য বদলিকৃত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসির আরাফাত বলেন, নলজুর নদীতে ৪৯ জন দখলদার রয়েছে। আমরা গত বছর তাদের উচ্ছেদের জন্য উচ্ছেদ মামলা দায়ের করেছি। উচ্ছেদের আদেশ হলে উচ্ছেদ করা হবে। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নলজুর নদী ৫০ ফুট প্রস্থ খনন হলে দখলদাররা আবারো দখলে উ সাহী হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড পুরো অংশ নদীর খনন করলে সুফল মিলত। পানি উন্নয়ন বোর্ড উপজেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডেরবনদী খননের সাথে সম্পৃক্ত প্রকৌশলীর ডিজাইন ও প্রাক্কলনের প্রেক্ষিতে নদী খনন কাজ হচ্ছে। আমরা কাজ তদারকি করছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী কামরুজ্জামান খান বলেন, আমরা প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করছি। নদীর দুই পাশে বাঁধের মতো হবে। নদীর ওপর অংশে ৩৫ মিটার নীচে ১৫ মিটার খনন হবে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, নলজুর নদীর খননকৃত মাটি সরাতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। খননকৃত মাটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজে লাগলে স্ব উদ্যোগে নিয়ে যেতে বলেছি।##