সিলেটপোস্ট রিপোর্ট :গণতান্ত্রিক সুশাসন পুনর্বহাল নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। ইউরোপীয় রাজনৈতিক জোট ইইউ পার্লামেন্টে বাংলাদেশ সংক্রান্ত ১৭টি বিষয় উত্থাপন করে। আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশ সংক্রান্ত বেশকিছু প্রস্তাব পাশ হয়। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকেলে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট অধিবেশনে এসব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হয়।সমাজতন্ত্রী ও গণতন্ত্রীদের জোট গ্রুপ অব দ্য প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স অব সোশ্যালিস্ট অ্যান্ড ডেমোক্রাটস ইন দ্য ইউরোপীয় পার্লামেন্ট, যা এস অ্যান্ড ডি গ্রুপ নামে পরিচিত তারা গত মঙ্গলবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশের বিষয়ে কিছু প্রস্তাব দেয়। এতে বাংলাদেশের মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের লঙ্ঘন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয় গুরুত্ব পায়। একই দিনে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয়টি আলাদা রাজনৈতিক গোষ্ঠী এসব বিষয় ছাড়া আরও কিছু বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। পৃথক পৃথক ওই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হয় ইউরোপীয় পার্লামেন্টে।এসময় বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ক্রমবর্ধমান নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট (ইপি)। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ধর্মীয় মৌলবাদ, অসহিষ্ণুতা এবং চরমপন্থী সহিংসতা বাড়বে বলেও তারা মনে করছে। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইপি।বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ লেখক, ব্লগার, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং বিদেশি উন্নয়নকর্মীদের ওপর ইসলামী চরমপন্থীদের হামলার ঘটনায়ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইপি।এছাড়া গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইপি। সরকারের সমালোচনামূলক লেখা প্রকাশের কারণে প্রকাশক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তুলে নিতে এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া গণমাধ্যমগুলো খুলে দিতেও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় তারা। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও দায়মুক্তি বিষয়ে ২০১৩ সালে ঘোষিত জাতিসংঘের কর্মপরিকল্পনা বাংলাদেশে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিও জানানো হয়।
গতকাল ইউরোপীয় একটি রাজনৈতিক (এস অ্যান্ড ডি গ্রুপ) জোট বাংলাদেশের চলমান সংকটের অবসান এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সবগুলো রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সংলাপে বসতে সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব পেশ করে।এস অ্যান্ড ডি গ্রুপের ওই প্রস্তাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা পর্যবেক্ষণে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোকে কাজ করার সুযোগ করে দেয়া, গণমাধ্যম বিষয়ক নতুন নীতিমালা প্রত্যাহার এবং মত ও বাক প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের গুম নিয়ে তদন্তের জন্যও এতে আহ্বান জানানোর কথা বলা হয়েছে।