সিলেটপোস্ট রিপোর্ট :সিলেট শহরের ইসলামপুরে স্ত্রীকে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতনকারী পাষন্ড স্বামীকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। বুধবার বিকালে ইসলামপুরের ৭৫/এ গার্ডেন ভিউ’র বাসিন্দা শামীম খানকে আদালতে নেওয়া হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। নির্যাতনের শিকার সুমি সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।এর আগে মঙ্গলবার ইসলামপুরের গার্ডেন ভিউ থেকে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছিল। শাহপরান থানা পুলিশ শামীমকে আটক করে।জানা যায়, ১১ বছর আগে ইসলামপুর এলাকার শামীম খানের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিলো জকিগঞ্জের সুমির। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে সুমির উপর নির্যাতন শুরু করেন শামীম। নির্যাতন ঢাকতে সুমিকে প্যাথেডিন ইনজেকশন দিতেন শামীম। তাতে ক্ষান্ত না হয়ে সর্বশেষ স্ত্রীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে ছুরিকাঘাত করে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালান তিনি।সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকালে পরিবারের লোকজন অজ্ঞান অবস্থায় নির্যাতনের শিকার সুমিকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। আর নির্যাতনকারী শামীমকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায় শাহপরাণ থানায়।সুমির পরিবারের লোকজন জানান, বিয়ের পর কিছুদিন ভাল কাটলেও এর পর থেকেই সুমির উপর শুরু হয় নির্যাতন। বিয়ের বছর পূর্ণ হতে না হতেই কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে সন্তান। তার নাম রাখা হয় তাহনু আক্তার। এভাবে কাটতে থাকে সুমির জীবন। তাহনুর জন্মের তিন বছর পর আরো একটি সন্তান আসে সুমির ঘরে। তার নাম রাখা হয় তাকিব। দুটি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়েই ১১ বছর ধরে মুখ বুঝে সংসার করছেন সৈয়দা জেরিন আক্তার সুমি।একপর্যায়ে স্বামীর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। স্বামী শামীম খান নির্যাতন ঢাকতে স্ত্রী সুমিকে প্যাথেডিন ইনজেকশন দিতে শুরু করে। তাতেই ক্ষান্ত হয়নি শামীম। সর্বশেষ স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়। তাহনু ও তাকিব মাকে নির্যাতন না করার জন্য বাবার কাছে আবদার করে। কিন্তু ক্ষুদ্ধ শামীম সন্তানদের সামনেই সুমিকে ছুরিকাঘাত করে বলে স্থানীয় লোকজন জানান।সুমির উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে শামীমের বৃদ্ধ মা ফোন দিয়ে সুমিকে যেকোন উপায়ে উদ্ধার করার জন্য জানান। সুমির শাশুড়ির ফোন পেয়ে পরিবারের লোকজন পুলিশ নিয়ে গিয়ে উদ্ধার করে তাকে। এ সময় সুমি অজ্ঞান ছিলেন। তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল। তার গায়ে ছিল একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন। ঘরে পাওয়া যায় প্যাথেডিন ইনজেকশনের খালি বোতল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে পাঠানো হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বর্তমানে সুমি হাসপাতালের ৪র্থ তলার ৬ নং ওয়ার্ডে চিকিসাধীন।সুমির মা আলেয়া বেগম বলেন, বড় কষ্ট করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। সাধ্যমত সব দিয়েছি। তাকে এমন নির্যাতন চালানো হয়েছে আমি তার শাস্তি চাই।নির্যাতনের শিকার সুমি বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় দায়েরকৃত মামলায় (মামলা নং-২) আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।