সিলেটপোস্ট রিপোর্ট :২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর কুপিয়ে হত্যা করা হয় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা জাপার আহবায়ক আবদুল্লাহ সিদ্দিকীর ছেলে প্রকৌশলী মেহরান সিদ্দিকী সজিবকে। এরপর কালের গহ্বরে হারিয়ে গেছে ৩টি বছর। সজিব হত্যা মামলায় আদালতে চার্জশিট প্রদান করা হলেও এখনো শুরু হয়নি বিচার কাজ। একইদিন ঢাকায় ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে খুন হওয়া বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলার রায় ঘোষিত হলেও এখনো বিচারের অপেক্ষায় সজিবের পরিবার।২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর তরুণ স্থাপত্য প্রকৌশলী মেহরান সিদ্দিকী সজিব ছাত্রদল ক্যাডারদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন। ওইদিন রাত ৮টায় নগরীর খরাদিপাড়াস্থ বাসভবনে ঢুকে ছাত্রদল ক্যাডাররা চায়নিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সজিবকে। বাসার সামনে ছাত্রদল ক্যাডারদের আড্ডা দিতে নিষেধ করাটাই ছিল সজিবের ‘দোষ’!সজিব হত্যাকান্ডের পর তার বাবা আবদুল্লাহ সিদ্দিকী বাদি হয়ে ছাত্রদল ক্যাডার, আব্দুল খালিক মিল্টন, টিটন মল্লিক, ইকবাল, শফিক, ভিডিও সুমন, একরামসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ২০১৪ সালের জুন মাসে তদন্তকারী কর্মকর্তা ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন। কিন্তু চার্জশিট প্রদানের পর ১৮ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলার শুনানিই শুরু হয়নি।যেদিন সিলেটে সজিব হত্যাকান্ড ঘটে, ঠিক ওইদিন পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক মোড়ে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিৎ দাস। ইতোমধ্যেই বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে। রায়ে ২১ আসামির ৮ জনকে মৃত্যুদন্ড এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। কিন্তু একই দিনে সিলেটে খুন হওয়া সজিব হত্যা মামলার শুনানি পর্যন্ত হয়নি। এ নিয়ে সজিবের পরিবারে হতাশা বিরাজ করছে।সজিবের বাবা জাপা নেতা আবদুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় বোঝা হচ্ছে বাবার কাঁধে ছেলের লাশ। আমার ছেলে সজিবকে নির্মমভাকে কুপিয়ে হত্যা করা হলো। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আটকে আছে বিচারিক কার্যক্রম। ছেলে হত্যার ৩ বছর পেরিয়ে গেল। বর্তমানে কতো অপরাধীদের বিচার হচ্ছে। কিন্তু আমি জানিনা, কেন আমার ছেলে হত্যার বিচারকাজ আটকে আছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’আবদুল্লাহ সিদ্দিকী আবেগাপ্লুত কন্ঠে আরো বলেন, ‘একই দিনে রাজধানীতে বিশ্বজিৎ দাস ও সিলেটে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়। বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার রায় হলেও আমার ছেলে হত্যা মামলার কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। তবে আদালতের ওপর আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে, আমি বিচার পাবই।’