সিলেটপোস্ট রিপোর্ট:সিলেটের নর্থ ইস্ট মেডিকেলে সহকারি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ডা. ফাহমি ইকবাল রাব্বী। ডাক্তারি আর শিক্ষকতা এই দুই পেশার পাশাপাশি গাড়ি বিক্রেতাও ছিল তার পরিচয়। ডাক্তার হওয়ার সুবাদে সহজেই তার সখ্যতা গড়ে ওঠে চিকিৎসক কমিউনিটিসহ সিলেটের এলিট শ্রেণীর মানুষদের সাথে। এ সুযোগটিই কাজে লাগান ফাহমি।
গাড়ি বিক্রেতা হিসেবে তিনি তাদের কাছে পরিচিত হওয়াও এলিট শ্রেণীর মানুষরা আসতেন তার কাছে গাড়ি ক্রয় করতে। এভাবেই ফাহমি চট্টগ্রাম থেকে অবৈধভাবে আনা চোরাই গাড়ি বিক্রি করেছেন সিলেটের প্রায় ১৫/২০ মানুষের কাছে। প্রতারণার স্বীকার হয়ে অনেকেই ঘুরেছেন তার দ্বারে দ্বারে।
কেউই তার কাছ থেকে পাননি সদোত্তর। উল্টো ফাহমি এড়িয়ে গেছেন তাদের।
এমনই দুই ক্রেতা ডা. ফজলুল হক ও আব্দুস সামাদ অবশেষে মামলা ঠুকে দেন প্রতারক ডা. ফাহমি ইকবাল রাব্বী ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে।
এই মামলার সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নামে র্যাব-৯। গাড়ি বিক্রয়ে প্রতারনার মূল হোতা ডা. ফাহমি ইকবাল রাব্বিসহ তার তিন সহযোগী র্যাবের খাচায় আটকা পড়েন সোমবার।
আটককৃতরা হচ্ছে- নগরীর নয়াসড়ক এলাকার বিহঙ্গ ২২/এ এর বাসিন্দা ডা. ফাহমী ইকবাল রাব্বী(৩৮), তার সহযোগী দক্ষিণ সুরমা থানার রুমেল আহমেদ (৩৫), বিমানবন্দর থানার আম্বরখানা বড় বাজারের মো. ইমাদুর রহমান রাফি (২৮) ও গোলাপগঞ্জের দড়া এলাকার মো. শাহআলম মুন্না (২৬)।
যেভাবে প্রতারণা করতেন রাব্বী ও সহযোগিরা:
ঢাকা ও চট্টগ্রাম হতে চোরাইকৃত গাড়ী ব্রাক্ষনবাড়িয়া হতে শুভ ও রুমেল নামের দুই ব্যক্তির মাধ্যমে সিলেট নিয়ে আসতেন ডা. ফাহমি ইকবাল রাব্বী। সিলেটে প্রতারণা মাধ্যমে বিক্রি করতেন এসব গাড়ী। ‘সিলেট কার গার্ডেন’ নামের ওই শোরুম থেকেই ক্রেতাদের কাছে গাড়ী হস্তান্তর করতেন রাব্বী। তার সহযোগি নজরুল, লিটন, আনোয়ারসহ আরোও কয়েকজন।
একটি ‘ডিএক্স করোলা’ গাড়ী তার শোরুম থেকে উপশহর নিবাসী শিক্ষক সালেহ ক্রয় করেছিলেন। গাড়িটির কাগজপত্রে ঝামেলা থাকায় পরে এক বছর ব্যবহার করে তিনি ফেরত দেন।
ওই গাড়ীটিই ২৯ আগষ্ট সকালে মুন্না নামক এক ব্যক্তির বাড়ী থেকে উদ্ধার করে র্যাব। মুন্না, রাফি, নওশাদ, ও মনসুর কার চোরাই দলের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে র্যাব অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছে।
তারা চোরাই গাড়ী বিভিন্ন পন্থায় কাগজ পত্র তৈরী করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রয় করত।
সোমবার সন্ধ্যার পর আটক হওয়া ডাক্তার ফাহমি ইকবাল রাব্বীর তথ্যমতে নগরীর কাজীটুলায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় একটি ‘এক্স স্যালুন করোলা’ গাড়ী উদ্ধার করে র্যাব।
তার বিক্রিত ‘করোলা এক্সিও’ মডেলের আরেকটি কাগজপত্র বিহীন গাড়ি রবিবার সন্ধ্যায় মীরের ময়দান এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।