
ব্যাংকে নগদ টাকা জমে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের সোনালী ব্যাংকের সিইও ও এমডি মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ইত্তেফাক’কে বলেন, প্রায় সব ব্যাংকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় এডি শাখাগুলোই মূলত বড় বড় ঋণ দেয়। এতে একটি ব্যাংকের ২৫/২৬টি এডি শাখার মাধ্যমেই ওই ব্যাংকের প্রায় ৮০ ভাগ ঋণ দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এদেরকে লাগাম টেনে ধরে সারা দেশে যেসব শাখা রয়েছে ওই সব শাখার মাধ্যমে ঋণের সরবরাহ করতে হবে। ওই শাখাগুলোতে ঋণের প্রবাহ একেবারে নেই বললেই চলে। এর কারণ হিসেবে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, শহরের বাইরের শাখাগুলোর কর্মকর্তাদের মধ্যে নানা কারণে ভীতি রয়েছে। ঋণ ঠিকভাবে ফেরত আসবে কীনা, না আসলে নানা ঝামেলা এসব কিছু চিন্তা করে তারা ঋণই দিতে চায় না। তাদেরকে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে উত্সাহিত করতে হবে। যথাযথ বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ছোট ছোট আকারের ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ আরো বলেন, একটি দেশের উন্নয়ন মানে শুধু নগরের উন্নয়ন নয়। বরং দেশব্যাপী উন্নয়ন হলেই সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত হয়। আর উন্নয়নের জন্য ঋণ হলো জীবনীশক্তির মতো। তাই সারা দেশে ঋণের প্রবাহ সৃষ্টি হলে ঋণ প্রবাহে সুষম বণ্টন হবে। অর্থনীতির জন্যও ইতিবাচক হবে।
অতিরিক্ত তারল্যকে অলস টাকা বলা যাবে না উল্লেখ করে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এ অর্থ বিভিন্ন বিল বা ট্রেজারি বন্ডে রাখা হয়। এগুলো থেকে ব্যাংকগুলো কিছু সুদ পায়। তবে এটা ব্যাংকের প্রকৃত ব্যবসা নয়। তাই এ অর্থের প্রকৃত ব্যবহার নিশ্চিত করতে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে হবে। ব্যাংকের সব শাখার মাধ্যমে অল্প অল্প করেও যদি ঋণ প্রবাহ বাড়ানো যায় তবে ব্যাংকের মোট ঋণ প্রবাহ বাড়বে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকেও ব্যাংকগুলোকে সব শাখার মাধ্যমে ও এসএমই খাতে ঋণ প্রবণতা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপরও ব্যাংকগুলোর মধ্যে বড় বড় গ্রাহকদেরকে ও অল্প কিছু শাখার মাধ্যমেই ঋণ বিতরণের প্রবণতা দেখা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এপ্রিল মাসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা তারল্যের পরিমাণ দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিধিবদ্ধ আমানত হিসেবে (সিআরআর ও এসএলআর) এবং অন্যান্য খাতে জমা রাখার কথা কমপক্ষে এক লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। এই হিসেবে অতিরিক্ত রয়েছে প্রায় এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা।