সিলেটপোস্ট রিপোর্ট ::রাজধানীর গণপরিবহনে ‘সিটিং সার্ভিস’ বন্ধের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করতে বাস মালিকদের সঙ্গে বসছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ।
রাজধানীর এলেনবাড়িতে বিআটিএর প্রধান কার্যালয়ে আজ বিকালে এ বৈঠক হওয়ার কথা। পরিবহন মালিক, পরিবহন বিশেষজ্ঞ, যাত্রী ও নাগরিক প্রতিনিধি এবং বিআরটিএ চেয়ারম্যান-সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন এ বৈঠকে।
‘সিটিং সার্ভিস’ বন্ধের পর গত কয়েক দিন ধরে মালিকরা গাড়ি কম বের করায় জনভোগান্তির প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওই সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার জন্য বৈঠক করার নির্দেশনা দেন।
সূত্রে জানা গেছে, বিকেলের বৈঠক থেকে সিটিং সার্ভিস চলবে এমন ঘোষণা আসতে পারে। একটি আইনি কাঠামোর মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের বৈধতা দেয়া হতে পারে। মালিক ও শ্রমিকদের চাপের মুখে সরকার ফের পিছু হটতে পারে এমন আশ্বাস মিলেছে বিভিন্ন সূত্রে থেকে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, বিআরটিএ বৈঠক ডেকেছে। সেখানে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। আমাদেরও থাকতে বলেছে। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ১৫ এপ্রিল থেকে থেকে সিটিং সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দেয়। এরপর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) জানায়, ঢাকায় সিটিং সার্ভিস বন্ধে ১৬ এপ্রিল থেকে অভিযান চালানো হবে।
গত রবিবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন শুরুর পর গত চার দিন ধরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বচসা-মারামারির ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন স্থানে। অনেক মালিক রাস্তায় গাড়ি না ছাড়ায় যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের বলেন, তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযান করছেন বিষয়টি জনস্বার্থে রিভিউ করতে বলেছি। সবাইকে নিয়ে বসে জনস্বার্থে বাস্তবভিত্তিক নিয়ামক সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেছি।
পরিবহন খাতের প্রভাবশালীদের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘‘কেউ নানা অজুহাতে যদি গাড়ি না চালায় আমরা কি আমাদের দেশের বাস্তবতায় জোর করে গাড়ি নামাতে পারব? আর গাড়ির সাথে যারা জড়িত, তারা খুব সামান্য মানুষ না, তারা অনেকেই খুব প্রভাবশালী।”
দেশের পরিবহন শ্রমিকদের শীর্ষ সংগঠন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা পরিবহন মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি।
আর ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
মন্ত্রী-এমপিরা পরিবহন নেতা হওয়ায় দেশের পরিবহন খাত এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে।
খন্দকার এনায়েত উল্যাহ দাবি করেন, ‘সিটিং সার্ভিস’ বন্ধ হওয়ার পর প্রথম দুই দিন পরিস্থিতি ‘একটু খারাপ’ থাকলেও আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু ক্রমাগত সমালোচনার কারণে মন্ত্রী গতকাল বিষয়টি ‘রিভিউ’ করতে বলেন।
আমরা কাজটা ধরেছিলাম যে জিনিসটাকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসি। শৃঙ্খলা এলে দরকার হলে এই ভাড়া দিয়েই সিটিং সার্ভিস চালু করে দিতাম। কিন্তু তারপরও আমরা সমালোচনার পাত্র হচ্ছিলাম। এ কারণে তিনি রিভিউ করার কথা বলেছেন।