সিলেটপোস্ট রিপোর্ট ::মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি নীলনয়না মডেল কন্যা রাউধা আতিফের বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফের। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। রাউধার বাবা বলেন, যদি ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করত তবে যেসব চিহ্ন চোখে-মুখে ও শরীরে থাকার কথা তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি রাউধার শরীরে। অন্যদিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার সব আলামত ফুটে উঠেছে রাউধার শরীরে। তাকে সুপরিকল্পিতভাবেই হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার মেয়ে যে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে তার কোনো প্রমাণ মিলছে না। এমনকি ফ্যানের সাথে ঝুলেছিল কি না সেটাও পরিষ্কার নয়। কারণ- একজনও দেখেনি যে সে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। তার মৃত্যুর পর যে ছবি পাওয়া যায় তা বিছানায় শোয়ানো অবস্থায়। ছবি না থাকলে কীভাবে বাবা হিসেবে বিশ্বাস করবো যে- ফ্যানে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে রাউধা।
তিনি আরও বলেন, আত্মহত্যা করলে স্যালিভা বেরিয়ে আসে। মূত্র বেরিয়ে আসে। হাত-পা ছড়ানো থাকে। কিন্তু রাউধার হাত মুষ্টিবদ্ধ ছিল। সাধারণত শ্বাসরোধ করা হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। এছাড়া রাউধার গলায় হাতের আঙ্গুলের স্পষ্ট ছাপ রয়েছে। তার গলায় যে দাগ রয়েছে তা সুতি কাপড়ের ওড়নার নয়। ফলে সুতি কাপড়ের যে ওড়না দিয়ে রাউধা গলায় ফাঁস দিয়েছে বলে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে তা মিথ্যা।
রাউধার বাবা আতিফ সুনির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন তুলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট নিয়ে। তিনি বলেন, রাউধার গলায় যে চিহ্ন রয়েছে তা প্রকৃতপক্ষে কিসের তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য এক্স-রে এমনকি এমআরআই করা প্রয়োজন। কিন্তু তা করা হয়নি। এটা ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের গাফিলতি এবং প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা বলে দাবি তার।
গত ২৯ মার্চ রাজশাহী নগরের নওদাপাড়ায় অবস্থিত ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল থেকে মালদ্বীপের নাগরিক মডেল কন্যা রাউধা আতিফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩১ মার্চ তিন সদস্যের বোর্ড গঠন করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ফরেন্সিক বিভাগে রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত হয়। পরের দিন ১ এপ্রিল পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে রাজশাহী মহানগরীর হেতেমখাঁ গোরস্থানে রাউধাকে দাফন করা হয়। গত ১০ এপ্রিল মডেল কন্যার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে শ্বাসরোধ করে রাউধাকে হত্যা করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এ মামলায় একমাত্র আসামি করা হয়েছে রাউধার বান্ধবী ভারতের কাশ্মীরি কন্যা সিরাত পারভীন মাহমুদকে। গত ১৩ এপ্রিল রাউধা হত্যা মামলা সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। গত ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় তদন্ত কার্যক্রম। আসামি সহপাঠী সিরাতের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে এবং তাকে কলেজ না ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিআইডির পক্ষ থেকে।