সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::সৌদি আরব লেবাননের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বসে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সা’দ আল-হারিরি পদত্যাগ ঘোষণার সপ্তাহ না পেরোতেই এ অভিযোগ করলেন হিজবুল্লাহ নেতা। খবর: বিবিসি, আলজাজিরা। লেবাননের জনপ্রিয় ও শক্তিশালী সংগঠন হিজবুল্লাহ। বলা হয়, ইরান শিয়া মতাবলম্বী সংগঠনটিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকে। আর ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরব লেবাননে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ হিজবুল্লাহর।
হিজবুল্লাহ নেতা আরও অভিযোগ করেন, সৌদি সরকার সা’দ আল-হারিরির ইচ্ছে অনুযায়ী তাকে আটকে রেখেছে। তার পদত্যাগ অবৈধ।
গত ৪ নভেম্বর সৌদি আরবের টিভি চ্যানেলে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সা’দ আল-হারিরি ঘোষণা করেন, তিনি আর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকবনে না। কারণ, তার জীবনের ওপর হুমকি আছে এবং তিনি ইরান ও হিজবুল্লাহ দ্বারা আক্রান্ত।
অবশ্য লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল ওউন এবং অন্য জ্যেষ্ঠ রাজনীতিকরা সা’দ আল-হারিরিকে দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা অভিযোগ করেন, সৌদি আরব লেবাননের প্রধানমন্ত্রীকে ‘গৃহবন্দি’ করে রেখেছে।
প্রেসিডেন্ট সা’দ আল-হারিরির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতেও অস্বীকৃতি জানান।
তবে সপ্তাহখানেক আগের ওই ঘোষণার পর থেকে সা’দ আল-হারিরিকে আর জনসম্মুখে কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি।
এরই মধ্যে শুক্রবার বৈরুতে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, সৌদি আরব যেকোনো মূল্যে লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চাইছে।
তিনি বলেন, ‘এটা সহজ এবং স্পষ্ট যে, সৌদি আরব এবং দেশটির কর্মকর্তারা লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু, আমি বলতে চাই- এ ঘোষণা শুধু হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে নয়, লেবাননের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণার শামিল।’
হাসান নাসরুল্লাহ আরও বলেন, ‘ইসরাইল যাতে লেবাননের বিপক্ষে সামরিক পদক্ষেপে যায়, সেজন্য সৌদি আরব দেশটিকে বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর এটি হবে খুবই ভয়ঙ্কর।
তিনি আগেই অভিযোগ করেছিলেন, সা’দ আল-হারিরি সৌদি আরবের চাপে পড়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আর শুক্রবার ফের বললেন, এ বিষয়ে সন্দেহের আর কোনো অবকাশ নেই।
সৌদি আরব হারিরিকে সরিয়ে তার অনুগত রাজনীতিক বসিয়ে লেবাননের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন হিজবুল্লাহ প্রধান।
সা’দ আল-হারিরি পদত্যাগ ঘোষণার পরই সৌদি আরব, ইরান ও লেবাননের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে সৌদি আরব এবং কুয়েত তাদের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসেন লেবাননের প্রক্সি যুদ্ধে জড়ানোর বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। একই সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষেও অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
এছাড়া জাতিসংঘের মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসও সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, এই অঞ্চলে নতুন করে সংঘাত ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনবে।