সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন ক্রমশ আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করছে। যেকোনো উপায়ে সেখান থেকে জীবন নিয়ে পালানোর সুযোগ খুঁজছেন রোহিঙ্গারা। জীবন বাঁচাতে মরিয়া রোহিঙ্গারা বিভিন্ন উপায়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে।
অনেক রোহিঙ্গা সাঁতার কেটে বাংলাদেশে আসছে। যারা সাঁতার জানে না তারা শরীরের সাথে তেলের ড্রাম বেঁধে নিয়ে ভেসে পড়ছেন পানিতে।
গত এক সপ্তাহে কয়েক ডজন রোহিঙ্গা শিশু ও যুবক হলুদ রঙ্গের তেলের ড্রামে ভেসে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসেন।
তেলের ড্রামে ভেসে আসা শিশুদের একজন হচ্ছে নবী হোসেন (১৩)। সে আগে কখনও সমুদ্র দেখেনি। সাঁতারও জানত না।
নভেম্বরের ৪ তারিখে সে তেলের ড্রামে চেপে নাফ নদী পাড়ি দেয়। প্রায় আড়াই মাইল পানি সাঁতরে কক্সবাজারের শাহপরীর দ্বীপে এসে নামে। বাংলাদেশে পৌঁছানোর পরও তাকে হলুদ ড্রামটি আঁকড়ে ধরে থাকতে দেখা যায়।
নবী বলে, ‘আমার শুধু ভয় হচ্ছিল যে বোধহয় মরে যাব। মনে হচ্ছিল আজকেই বুঝি জীবনের শেষ দিন।’
তেলের ড্রামে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে আরেকজনের নাম কামাল হুসেইন (১৮)। তিনি বলেন, ‘ওইখানে অনেকরকম যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছিল। সে কারনে, ডুবে মরাও ওখানে থাকার চেয়ে ভাল মনে করি।’
বহুবছর ধরে মিয়ানমারের অধিবাসী হলেও মিয়ানমারের বৌদ্ধরা রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী বলে মনে করে। সেখানকার সরকারও তাদেরকে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছে।
জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদেরকে বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হিসেবে আখ্যায়িত করছে।
এবছরের আগস্ট মিয়ানমারের বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী ও সেখানকার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা শুরু করে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।