সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::এভাবে কেউ চলে যায়? এভাবে কারো চলে যেতে হয়? ক্লাবের চেয়ে কি খেলোয়াড় বড়? এমন নানা প্রশ্নের ঝড় নেইমারের যাওয়ার প্রক্রিয়ার সময় বার্সেলোনাতে ছিল। এখনো ঘুরছে। সমর্থক-ভক্তদের মনে জমে থাকা সেই ক্ষোভের বরফ বুঝি ভেঙে দিতে চাইলেন খোদ বার্সেলোনা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ। ধুয়ে দিলেন তাদের সদ্য সাবেক হওয়া খেলোয়াড়কে। নেইমারের বার্সা ছেড়ে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে চলে যাওয়ার প্রক্রিয়াটাকে অসৌজন্যমূলক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি। সোমবার সেই সাথে জানিয়েছেন এই ট্রান্সফার ‘ফেয়ার প্লে’ লঙ্ঘিত বলে উয়েফার কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি।
তবে বার্তোমেউ এও জানালেন, ২৫ বছরের ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারকে বার্সায় ধরে রাখার চেষ্টা তারা করেছিলেন। ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের যা করার তা তারা করেছেন। কিন্তু নেইমার নিজেই নিশ্চিত ছিলেন ২২২ মিলিয়ন ইউরোর বাই আউট ক্লজ মিটিয়ে তিনি পিএসজির হবেনই হবেন। তাই তাকে ঠেকানো যায়নি।
তবে সোমবারই নেইমারকে ভুলে হুয়ান গাম্পার ট্রফির ম্যাচ দিয়ে নু্য ক্যাম্পে খেলায় ফিরছে বার্সেলোনা। প্রতিপক্ষ ব্রাজিলের সেই বিয়োগান্ত দল শাপেকোয়েন্স। আর এমন সময় সমর্থক গোষ্ঠির সাথে এক সমাবেশে নেইমারকে একহাত নিয়ে বার্সা প্রধান বার্তোমেউ বললেন, ‘নেইমার এখন ইতিহাস। সে চলে যেতে চেয়েছে। এসব তো করার একটা প্রক্রিয়া আছে। কেউ ক্লাবের চেয়ে বড় হতে পারে না। এই যাওয়া নিয়ে উয়েফার কাছে অভিযোগ করেছি আমরা।’ নেইমার চলে যেতে পারেন তা আগে থেকেই কিছুটা আঁচ করেছিলেন বলে জানালেন বার্তোমেউ, ‘আমরা বুঝেছিলাম, নেইমারের চলে যেতে পারে। এই কারণেই তার বাই আউট ক্লজ বাড়িয়ে দিয়েছিলাম।’
কিন্তু তাতেও তো কাজ হয়নি। কাতারের টাকায় পুষ্ট ফরাসি ক্লাবটি যে কোনো মূল্যে নেইমারকে নিতে চেয়েছে। ঝড় তুলে নেইমারকে বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে দামী ফুটবলার বানিয়েই ঘরে তুলেছে। তাতে এমএসএন বা মেসি-সুয়ারেস-নেইমার ত্রিফলা ভেঙেছে। ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা ত্রিমুখী আক্রমণ বলা হচ্ছিল যাকে। নেইমারের বিকল্প হয় না। কিন্তু বার্সাকে তো তার অভাব পুরণের চেষ্টা করতে হবে। সেটাই বলছিলেন বার্সা প্রেসিডেন্ট, ‘এখন আমরা বিকল্প খুঁজছি। যাই ঘটুক না কেন শেষ পর্যন্ত তা বার্সেলোনার জন্য ভালোই হয়েছে। কারণ, সে থাকলে আমাদের সাথে একজন গ্রেট খেলোয়াড় থাকতো। আর সে চলে যাওয়ায় আমরা পেয়েছি অনেক টাকা। এই ২২২ মিলিয়ন ইউরো আমরা বুঝেশুনে, শক্ত হাতে, প্রজ্ঞার সাথে খরচ করবো। এটা ক্লাবের উন্নতিতে ব্যবহৃত হবে। এই টাকা আমাদের হাতে আছে বলে ভালো খেলোয়াড়কে সই করানোর জন্য খুব চমৎকার অবস্থানে আছি আমরা।’
বার্তোমেউয়ের কথায় শাপেবরের মতো ব্যাপার আছে। কিন্তু নেইমারের চলে যাওয়া তাদের মতো ক্লাবের মানুষের অহংয়ে কতোটা আঘাত হেনেছে তাও তার কথায় স্পষ্ট। টাকার চেয়ে এই ক্লাব বড়। মেসি, ইনিয়েস্তার উদাহরণ টেনে বার্তোমেউ বলেছেন, ‘আমাদের ক্লাবের ইতিহাস ১১৮ বছরের। এখানে গ্রেট খেলোয়াড়, ১৪০,০০০ সদস্য, সব আমাদের…এই সদস্যরা এবং এই ক্লাবের মালিকানা কোনো শেখ বা বণিকের না। লিওনেল মেসি বা আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাদের আনুগত্যই উদহারণ হওয়া উচিৎ। লিও মেসি এই দলের নেতা থাকবে।’