সংবাদ শিরোনাম
দোয়ারাবাজারে পুলিশের অভিযানে ভারতীয় ৭১ টি গরুসহ চোরাকারবারি আটক  » «   হুমায়ুন রশিদ চত্বরে চাদাঁবাজ সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি অটোরিক্সা চালক শ্রমিকরা-অভিযোগ  » «   ১ মন গাঁজাসহ সিলেটের ৩ কারবারি নবীগঞ্জে আটক  » «   প্রবীণের বুদ্ধি নবীনের শক্তির সমন্বয়ে সমাজের অন্যায় অবিচার দূর করতে হবে-জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান  » «   জৈন্তাপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের মাসিক প্রেস-ব্রিফিং  » «   গোয়াইনঘাটে পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু  » «   যাদুকাটায় নৌকা ডুবে পাথর শ্রমিকের মৃত্যু  » «   দোয়ারাবাজারে অবৈধ ভাবে বসত ঘরসহ দোকান পার্ট নির্মান ও রাস্তার গাছ কাটার অভিযোগ  » «   সিলেটে জন্ম নিবন্ধন করাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন অভিভাবকরা  » «   সিলেটে তালামীযে ইসলামিয়ার মীলাদুন্নবী (সা.) র‍্যালি অনুষ্ঠিত  » «   দক্ষ জনশক্তি দেশ বিদেশের শ্রমবাজারে অবদান রাখবে-শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি  » «   খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশযাত্রা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে-নাসিম হোসাইন  » «   দোয়ারাবাজারে ভারতীয় চিনিসহ আটক ২    » «   দোয়ারাবাজারে চোরাইপথে আসা ভারতীয় ৩৬ গরুসহ আটক ৮  » «   চুনারুঘাটে বানের পানির মত আসছে বিভিন্ন প্রকার মাদক  » «  

মাছের সাথে এ কেমন শত্রুতা!

21সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি মাছের ঘেরে শত্রুতা করে বিষ প্রয়োগে ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে দুর্বৃত্তরা। অন্যদিকে পাউডার জাতীয় এই বিষ প্রয়োগের ফলে ওই মাছের ঘেরসহ হাইল হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকার পানি দূষিত হয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জীব বৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে।

মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের হাইল হাওরের হালদিঘা বিলে মৎস্য ব্যবসায়ী মো. আশিক মিয়ার মাছের ঘেরে এই বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে আশিক মিয়া অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে সংসার ও ঋণের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এদিকে সংবাদ পেয়ে উপজেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা ওই ঘেরের পানির নমুনা পরীক্ষা করে বিষ প্রয়োগের প্রমাণ পেয়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত ঘেরের মালিক আশিক মিয়া জানান, ঘেরে বিষ প্রয়োগের ঘটনায় তিনি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। স্থানীয় এনজিও কারিতাস ও গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে প্রায় ৬ মাস ধরে লিজ নেয়া জায়গায় মাছের চাষ করে আসছিলেন। এজন্য প্রচুর বিনিয়োগও করে রেখেছেন। আসছে শুকনো মৌসুমে সেখান থেকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার মাছ আহরণ করার কথা ছিল। কিন্তু মাছের ঘেরে শত্রুতাবশত বিষ প্রয়োগের ফলে ১ থেকে ৭ কেজি ওজনের বড় আকারের অনেক মাছ ঘের থেকে বেরিয়ে হাওরের পানিতে মিশে গেছে। আর ছোট আকারের মরা মাছগুলো পানিতে ভেসে উঠেছে।

বিষয়টি স্থানীয় সংবাদ কর্মীর মাধ্যমে জেনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোবাশশেরুল ইসলামের তাৎক্ষণিক নির্দেশে উপজেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা সহিদুর রহমান সিদ্দীকি বুধবার দুপুরে স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের নিয়ে সরেজমিন মাছের ঘেরটি পরিদর্শন করেন।

সেখানে তিনি বিষাক্ত পানি পরীক্ষা শেষে সাংবাদিকদের জানান, পানিতে স্বাভাবিক মাত্রায় ৭ দশমিক ৫ থেকে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার প্রেজেন্ট অব হাইড্রোজেআয়ন (পিএইচ) থাকার কথা কিন্তু সেখানে ৫ দশমিক ৩ থেকে ৫ দশমিক ৪ মাত্রায় পিএইচ পাওয়া গেছে। এছাড়া পানিতে যেখানে ৫ মাত্রায় পিপিএম থাকার কথা সেখানে শূন্য দশমিক ৫ পিপিএম পাওয়া যায়। এর ফলে পানিতে যে পরিমাণ অক্সিজেন থাকার কথা তা অস্বাভাবিক কমে গেছে।

পিএইচ ও পিপিএম কমে যাওয়ায় পানিতে বিষের উপাদান আছে বলে মৎস্য কর্মকতা দাবী করেন।

বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, মাছের ওই ঘেরের পানিতে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিস্তৃর্ণ এলাকাজুড়ে ভেসে আছে। মাথার উপরে একদল শঙ্খচিল এসব ভাসমান বিষাক্ত মাছ শিকার করে উড়ে যাচ্ছে। মাছের ঘেরের পাড়ে চূর্ণ করা এক ধরনের বিষাক্ত পাউডার ছড়িয়ে ছিঁটানো পাওয়া গেছে। এসব বিষাক্ত পাউডারের নমুনা পরীক্ষার জন্য মৎস্য বিভাগের লোকজন সংগ্রহ করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্থ মাছের ঘেরের মালিক আশিক মিয়া জানান, বুধবার সকালে ঘেরে মাছের খাদ্য দিতে এসে দেছেন চিলের উড়াউড়ি। পরে পানিতে নেমে দেখেন প্রচুর পরিমাণে মাছ মরে ভেসে উঠেছে।

হাউমাউ করে কেঁদে তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, এলাকার কিছু লোক শত্রুতামূলক আমার মাছের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে থাকতে পারে। গত ৬টা মাস ধরে বাড়িঘর ছেড়ে হাওরে পড়ে আছি। এর উপরই আমার ৯ সদস্যের পরিবারের নির্ভরতা, বাচ্চাদের স্কুল কলেজে লেখাপড়ার খরচপাতি চালাতে হয়। সমিতি, ব্যাংক এনজিও মিলে আমার অনেক টাকা ঋণ। মাছের খাদ্যের দোকানেও দেনা আছে। এখন আমার মরণ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোবাশশেরুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.