সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::প্রতি পাঁচজনে একজনের বেশি নারী অনলাইনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে ওঠে এসেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের চালানো এক জরিপে। চার হাজার নারীর ওপর চালানো এ জরিপে দেখা যায়, বেশিরভাগ হয়রানিই ঘটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। এ বিষয়ে নির্দিষ্ট আইন ও নীতিমালার ঘাটতির বিষয়টিও গুরুত্ব পায় জরিপে।
জরিপে অর্ধেকরও বেশি নারী বলছেন, তারা সেক্সিস্ট বা যৌন বিষয়ক আচরণের হয়রানির শিকার হয়েছেন। আবার এক-চতুর্থাংশ নারী বলেছেন, অনলাইনে তারা শারীরিক ও যৌন হামলার হুমকিও পেয়েছেন।
আটটি দেশের নারীদের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। এতে ওঠে আসে আক্রান্ত নারীদের নিরাপত্তা ও মানসিক অবস্থার বিষয়টি। এ বিষয়ে সংস্থাটির মানবাধিকার ও প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষক আজমিনা ধরদিয়া বলেন, ‘ইন্টারনেট নারীদের জন্য ভিবীষিকাময় ও আতঙ্কজনক জায়গা হয়ে উঠতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নারীদের প্রতি বিদ্বেষ ও হামলার ঘটনা অহরহ ঘটছে, এটা প্রায় সবাই জানে। কিন্তু এই জরিপটির ফলে দেখা যাচ্ছে, অনলাইনে হয়রানি নারীদের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে।’
জরিপটিতে বলা হয়েছে, এ ধরণের পরিস্থিতির ফলে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির মুখেও পড়তে পারেন নারীরা। বাধাগ্রস্ত হতে পারে তাদের জীবন যাপনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। জরিপে ৪১ শতাংশ নারী জানান, হয়রানির শিকার হওয়ার পর থেকে তারা আগের থেকেও কম নিরাপদ অনুভব করে। প্রতি চারজনের একজন নারী তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। যৌন আচরণ, বর্ণবাদী ও সমকামী-সংশ্লিষ্ট হামলা ছাড়াও ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনার শিকার হয়েছেন জানান ১৭ শতাংশ নারী। অংশগ্রহণকারীদের একটি বিশাল অংশ জানান, হয়রানির শিকার হওয়ার পর থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে শঙ্কিত বোধ করেন।
হয়রানি মোকাবেলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো নানা পদক্ষেপ নিলেও সেগুলো খুব একটা কার্যকরী নয় বলে ওঠে এসেছে জরিপটিতে। বিশেষ ক্রএ ফেসবুক ও টুইটারের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আক্রান্ত নারীরা। এ বিষয়ে ধরদিয়া জানান, মানবাধিকার ও স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর দায়িত্ব। অতএব নারীরা যাতে শঙ্কা ও ভীতিহীনভাবে এটি ব্যবহার করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে তাদের।