সংবাদ শিরোনাম
দোয়ারাবাজারে পুলিশের অভিযানে ভারতীয় ৭১ টি গরুসহ চোরাকারবারি আটক  » «   হুমায়ুন রশিদ চত্বরে চাদাঁবাজ সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি অটোরিক্সা চালক শ্রমিকরা-অভিযোগ  » «   ১ মন গাঁজাসহ সিলেটের ৩ কারবারি নবীগঞ্জে আটক  » «   প্রবীণের বুদ্ধি নবীনের শক্তির সমন্বয়ে সমাজের অন্যায় অবিচার দূর করতে হবে-জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান  » «   জৈন্তাপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের মাসিক প্রেস-ব্রিফিং  » «   গোয়াইনঘাটে পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু  » «   যাদুকাটায় নৌকা ডুবে পাথর শ্রমিকের মৃত্যু  » «   দোয়ারাবাজারে অবৈধ ভাবে বসত ঘরসহ দোকান পার্ট নির্মান ও রাস্তার গাছ কাটার অভিযোগ  » «   সিলেটে জন্ম নিবন্ধন করাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন অভিভাবকরা  » «   সিলেটে তালামীযে ইসলামিয়ার মীলাদুন্নবী (সা.) র‍্যালি অনুষ্ঠিত  » «   দক্ষ জনশক্তি দেশ বিদেশের শ্রমবাজারে অবদান রাখবে-শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি  » «   খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশযাত্রা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে-নাসিম হোসাইন  » «   দোয়ারাবাজারে ভারতীয় চিনিসহ আটক ২    » «   দোয়ারাবাজারে চোরাইপথে আসা ভারতীয় ৩৬ গরুসহ আটক ৮  » «   চুনারুঘাটে বানের পানির মত আসছে বিভিন্ন প্রকার মাদক  » «  

কলকাতায় বসে বাংলাদেশে নাশকতার ছক কষছিল তারা

23সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::এড়ানো গেল আর একটি খাগড়াগড়। বর্ধমানের সেই বিস্ফোরণের পেছনে ছিল জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ-এর (জেএমবি) সদস্যরা। মঙ্গলবার লালবাজারের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স সামশাদ মিয়াঁ ওরফে তনবির এবং রিয়াজুল ইসলাম ওরফে সুমন নামে যে দুই বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে, তারা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য বলে দাবি করেছে পুলিশ। কলকাতার আশপাশে আস্তানা গেড়ে বাংলাদেশে নাশকতামূলক কাজকর্ম চালানোই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বলেও দাবি করেছেন গোয়েন্দারা।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, সামশাদদের সঙ্গে ধরা পড়েছে মনোতোষ দে ওরফে শ্যামল দে ওরফে জিয়ারুল নামে এক স্থানীয় অস্ত্র ব্যবসায়ী। কিন্তু এবিটি-র আরও কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশ থেকে এসে কলকাতায় ঘাঁটি গাড়ার কাজে যুক্ত ছিল বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

খাতা-কলমে মঙ্গলবার কলকাতা স্টেশনের কাছ থেকে সামশাদদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দেখানো হলেও এসটিএফ সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগেই তাদের ধরা হয়েছিল। এই কয়দিন লাগাতার জেরা করার পর পুলিশের ধারণা, সম্প্রতি এত ভাল জঙ্গি নেটওয়ার্ক আর ধরা পড়েনি। কারণ, বাংলাদেশে বিস্ফোরক পাঠানো এবং কলকাতায় জিহাদি যুবক-যুবতী নিয়োগ করে এবিটি-র সংগঠন তৈরির যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলেছিল সামশাদ, রিয়াজুলরা। স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘শুধু ঢাকা নয়, বড় বিপদ থেকে বাঁচল কলকাতাও। কিন্তু এদের দলের আরও কয়েকজন অধরা। সংশয় হচ্ছে, এটাই কি একমাত্র মডিউল? যদি আরও মডিউল থেকে থাকে, তাদেরও ধরতে হবে।’

কেন বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গেল তার ব্যাখ্যা দিয়ে স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, গ্রেফতারদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরিতে তাদের পরিকল্পনার যে ছক কষা রয়েছে, তা চমকে উঠার মতো। তারা কলকাতার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, এমনকি বহু বাস স্টপ, রেল স্টেশন পায়ে হেঁটে ঘুরেছে। যা ভবিষ্যতে নাশকতা চালানোর প্রাথমিক ধাপ বলেই গোয়েন্দাদের দাবি। গ্রেফতাররা কথাবার্তা চালাত প্রোটেক্টেড টেক্সট বা পিটি অ্যাপ ব্যবহার করে। হুন্ডির মাধ্যমে নিয়মিত টাকাও পেয়েছে তারা। সেই সঙ্গে বেশ কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দাকেও তারা নিজেদের দলে নিয়েছিল।

এসটিএফ গোয়েন্দারা জেনেছেন, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র সামশাদ মিয়াঁ ওরফে তনবির বনেদি ঘরের ছেলে। তার এক ভাই ইতালিতে থাকেন। ২০১৪ সালে সিলেটে পড়ার সময় জনৈক মামুনের সঙ্গে তার আলাপ হয়। এই মামুনের হাতেই সামশাদের দীক্ষা। মামুনকে বাংলাদেশ পুলিশ আগেই গ্রেফতার করেছে। এসটিএফ-এর ডিসি মুরলীধর শর্মা এদিন বলেন, ‘সামশাদের মগজ ধোলাই করেছিল এবিটি-র বাংলা টিমের প্রধান মেজর জিয়া।’

তিনি জানান, সামশাদ ও রিয়াজুল দেড় বছর আগে হায়দরাবাদের মান্নেগুড়ার এক কারখানায় কাজ করতো। মাস তিনেক পর ওই কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা কর্নাটকের বেলগাঁওতে নির্মাণকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, সেখানেই ভুয়া আধার কার্ড ও প্যান কার্ড তৈরি করে সামশাদ। বেলগাঁওতে দু-তিন মাস কাজ করার পর সামশাদ ও রিয়াজুল পুণেতে যায়। সেখানে কয়েক মাস থাকার পর হায়দরাবাদে ফিরে এসে একটি কম্পিউটার কোর্স করে তারা। এরপর কয়েক মাস রাঁচী ও পাটনায় কাটিয়ে এ বছর দুর্গাপূজার সময় কলকাতায় আসে।

মুরলীধর বলেন, ‘গ্রেফতার দুই বাংলাদেশি বিস্ফোরক পদার্থ কেনার জন্য রাঁচী ও পাটনায় একাধিক জায়গায় গিয়েছিল। সে ব্যাপারে তথ্যও মিলেছে।’

সামশাদদের সঙ্গে গ্রেফতার মনোতোষের কাছ থেকে ভারত বা বাংলাদেশের কোনও পরিচয়পত্র পাওয়া না গেলেও ডিসি (এসটিএফ) জানান, সে আগেও একাধিক বার অস্ত্র আইনে গ্রেফতার হয়েছে। মূলত অস্ত্র ব্যবসার কারবারি মনোতোষ বিহারের মুঙ্গের থেকে অস্ত্র কিনত। সে গত ৬ মাসে ৪-৫ বার বাংলাদেশে অস্ত্র পাঠিয়েছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি।

গ্রেফতার তিন জনকে বুধবার দুপুরে কড়া নিরাপত্তায় ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়। চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যঅর্ণব ঘোষাল তাদের ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.