সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় ডাকাতদের হামলায় গৃহকর্তাসহ তিনজন আহত হয়েছেন। বুধবার (২২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে আড়াইটার দিকে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের নান্দুয়া গ্রামের হাজী শাহাব উদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন-গৃহকর্তা হাজী শাহাব উদ্দিন (৬৫), পরিবারের সদস্য হাজী ফিরোজা বিবি (৮৫) ও মরিয়ম বেগম (১৬)। এরমধ্যে গুরুতর আহত হাজী শাহাব উদ্দিনকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশের পৃথক দুটি টহল টিম উত্তর শাহবাজপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাগলা গ্রামের ডাকাত আনোয়ার আলমকে (৪১) গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ঘটনার সাথে জড়িত উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের নান্দুয়া গ্রামের বাসিন্দা চিহ্নত ডাকাত সামছুল ইসলাম (৬০) ও তার ছোট ভাই ডাকাত জয়নালের স্ত্রী খালেদাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদেরকে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ডাকাত কবলিত বাড়ির লোকজন, থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে আড়াইটার দিকে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের নান্দুয়া গ্রামের হাজী শাহাব উদ্দিনের বাড়িতে চার থেকে পাঁচ জনের একটি ডাকাত দল হানা দেয়। ডাকাতরা বারান্দার কলাপসেবল গেট ও পরে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে বাড়ির লোকজনকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। এক পার্যায়ে ডাকাতদের অস্ত্রের আঘাতে গৃহকর্তা হাজী শাহাব উদ্দিন (৬৫), পরিবারের সদস্য হাজী ফিরোজা বিবি (৮৫) ও মরিয়ম বেগম (১৬) আহত হন। ডাকাতরা ঘরের আলমারি ও ড্রয়ার তছনছ করে কিছু মালামাল ও নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় শাহাব উদ্দিনের রক্তাক্ত দেহ দেখে পরিবারের লোকজন চিৎকার দিলে আশাপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। ঘটনাটি বড়লেখা থানা পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে রাতেই বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সহিদুর রহমান ও উত্তর শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ধ্রুবেশ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পৃথক দুটি টহল টিম উত্তর শাহবাজপুর এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযান চালিয়ে উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের পাবিজুড়ী পার এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ী আহমেদ শরীফ দেলোয়ারের নির্মানাধীন কমিউনিটি সেন্টার থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামসহ সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাগলা গ্রামের ডাকাত আনোয়ার আলমকে (৪১) গ্রেফতার করে। এসময় কয়েকজন ডাকাত পালিয়ে যায়। পরে ডাকাত আনোয়ার আলমের দেওয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ঘটনার সাথে জড়িত উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের নান্দুয়া গ্রামের বাসিন্দা চিহ্নত ডাকাত সামছুল ইসলাম (৬০) ও তার ছোট ভাই কমিউনিটি সেন্টারের পাহারাদার ডাকাত জয়নালের স্ত্রী খালেদাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সহিদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করে বলেন, ‘এ ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া অন্য ডাকাতদের ধরতে অভিযান চলছে। মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’