সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সাথে যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে, তা জনগণের সামনে প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে আপনারা নাকি চুক্তি করলেন। কি চুক্তি করলেন তা জনগণকে জানান।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা কি বুঝি না, জানি না? সই করেছেন কিন্তু তা বাস্তবায়নের টাইম নেই। জাতিসংঘ মধ্যস্থতা করছে, তার নামই নেই! তাদের কোনো প্রতিনিধিকেও রাখা হয়নি। এখন শুনছি রোহিঙ্গারা নাকি যাবে না, গেলেও মিয়ানমারে নয়, সেইফ জোনের ক্যাম্পে। তাহলে তাদের উপর যে নির্যাতন চলছে তা কি বন্ধ হবে?’ এসব ব্যাপারে সরকারের কোনো সফলতা নেই বলে দাবি করেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ জনদল-বিজেডি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অতীত ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত সহযোগিতা করেছে। ইন্দিরা গান্ধী আমাদের স্বাধীনতার দাবির পক্ষে সমর্থন আদায়ে ৮টি দেশ ঘুরেছেন। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বের কয়টি দেশের সমর্থন পেয়েছেন। চীনকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। রাশিয়াও পাশে নেই। আর যে ভারতকে নিয়ে আপনাদের দাপট, সেই ভারতও সমর্থন দিলো না। এরপরেও নিজেদের সফল বলেন কি করে?’
বৃহস্পতিবার সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের সাথে ভিন্ন মত পোষণ করে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘বড় বড় রাষ্ট্রে গুম হওয়ার যে সংখ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন, তার হিসাব সঠিক নয়। পৃথিবীর অন্য দেশে গুম হয় খুন হয় মানছি, কিন্তু সেসব দেশে খুন হলে খুনিরা ধরা পড়ে, গুম হলেও উদ্ধার হয়, ফিরে আসে। কিন্তু আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোটাই ব্যর্থ। খুন হলে খুনি থাকে অধরা, বিচার হয় না। আর গুম হলে তো কথাই নেই। ফেরে না অথবা লাশ পাওয়া যায়। কেউ ফিরলেও কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে।’
তিনি বলেন, ‘এটা কোনো সরকার হলো, যে সরকার প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পারে না? সে সরকার নাকি দুর্নীতি ঠেকাবে! প্রশ্নফাঁস আমাদের লজ্জার। প্রশ্নফাঁসের ফলাফল ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ হবে। আমাদের জাতিগতভাবে দুর্নীতিপ্রবণতা তৈরি করবে।’
সরকারের সমালোচনা করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ভোটারবিহীন এই সরকার ক্ষমতায় এসে যেসব ওয়াদা দিয়েছিল তার একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। ১০ টাকায় চাল খাওয়াবেন বলেছিলেন। সে চাল এখন ৭০ টাকা। পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা, এটাই কি সোনার বাংলা? তুলনা করলে বলবো সোনার চেয়ে চালের দাম বেশি। আট বার বিদ্যুতের দাম বাড়ালেন? কার স্বার্থে? কি কথা দিয়েছিলেন? ভুলে গেছেন? এমন অবস্থায় সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখেন? সে আশা কখনো পূরণ হবে না।’
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান ডা. এস এম শাহজাহানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) কমরেড খালেকুজ্জামান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক প্রমুখ।