সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও বিসিএস ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকরা দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছেন। ‘নো বিসিএস, নো ক্যাডার’ শ্লোগান নিয়ে তাদের এ আন্দোলন ফের শুরু হবে নতুন বছরের জানুয়ারিতে।
আজ (সোমবার) বিকেলে শেষ হয়েছে তাদের দুদিনের কর্মবিরতি। এরপর বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে কোন কর্মসূচি নেই। তবে জানুয়ারিতে তারা ফের ৩দিনের কর্মবিরতি পালন করবেন বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন।
তাদের এমন ঘোষণায় সারা দেশের লাখলাখ শিক্ষার্থী আতংকে ভূগছেন। তাদের ধারণা, এ দুদিনের কর্মবিরতির কারণে তারা অন্তত ৫/৬ মাসের সেশনজটে পড়বেন।
নতুন জাতীয়করণকৃত কলেজ শিক্ষকদের ক্যাডার বহির্ভূত রেখে ২০১০ সালের শিক্ষানীতির আলোকে স্বতন্ত্র বিধি তৈরির দাবিতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির আহ্বানে সারাদেশে এ কর্মসূচি পালন হয়েছে।
কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনে আজও (সোমবার) শিক্ষকরা কোন ক্লাস নেননি। অনুষ্ঠিত হয়নি অভ্যন্তরিন বা জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের নির্ধারিত কোন পরীক্ষা। এসময়টাতে মোট ৪টি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলো। সিলেট বিভাগের সবগুলো সরকারি কলেজই ফাঁকা ছিলো বলে খবর পাওয়া গেছে।
দুপুর ১২টার দিকে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি সিলেট বিভাগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমদ সিলেটভিউ২৪ডটকমকে বলেন, আজ আমাদের কর্মবিরতি শেষ হচ্ছে। এরপর ডিসেম্বরে কোন কর্মসূচি নেই। আবার জানুয়ারিতে আমরা ৩দিনের কর্মবিরতি পালন করবো।
এ আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীরা ৬ মাসের সেশনজটে পড়বেন বলে আশংকা করছেন। এ প্রসঙ্গে সাব্বির আহমদ বলেন, তাদের কিছুটা ক্ষতি হবে, তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে দিলে আমরা যেকোন দুটি শুক্রবারে পরীক্ষা নিয়ে ক্ষতিটা পুষিয়ে দিবো। এত লম্বা জটে পড়বেনা তারা।
সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্য কয়েকজন শিক্ষক সংবাদ মাধ্যমের সাথে আলাপকালে আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, ক্যাডারভূক্ত শিক্ষকদের পদোন্নতির যে সরকারি নিয়ম আছে, নতুন সরকারিকরণকৃত কলেজ শিক্ষকরা ক্যাডারভূক্ত হলে সেক্ষেত্রে মারাত্মক বিশৃঙখলা সৃষ্টি হবে। তারা চাকুরির বয়স বিবের্চনায় একজন বিসিএস ক্যাডারের আগেই পদোন্নতি পেয়ে যাবে। এতে যেমন হতাশা সৃষ্টি হবে, তেমনি শিক্ষার মানও নেমে যাবে। তাছাড়া বদলি এবং আরও নানা বিষয়ে সমস্যা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
তাদের যুক্তি, আমরা পরীক্ষা দিয়ে বিসিএস পাস করে পিএসসির মাধ্যমে ক্যাডারভূক্ত হয়েছি। আর তারা এমনি এমনি ক্যাডারভূক্ত হয়ে গেলে সেটা আমাদের অবমূল্যায়ন। এটা কেউ মানবেনা।
সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স পরীক্ষার্থী শাম্মি ও সাহানা এবং এমসি কলেজের মুকুল বলেন, গত দুদিনে আমাদের দুটি পরীক্ষা নির্ধারিত ছিলো। কিন্তু তা আর হলোনা। কবে হবে কেউ বলতে পারবেনা। এতে আমরা অন্তত ৫/৬ মাসের সেশন জটে পড়তে পারি।
অর্থাৎ শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে শাম্মি-মুকুলদের জীবন থেকে অন্তত ৫/৬টি কর্মব্যাস্ত মাস হারিয়ে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, সিলেট বিভাগের ২৯টি সরকারি কলেজে প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।