সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ৯ম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রবিবার সন্ধ্যায় সাজ্জাদুল করিম ওরফে টিপু নামে এক স্কুল শিক্ষককে আটক করেছে থানা পুলিশ।
আটক সাজ্জাদুল করিম ওরফে টিপু উপজেলার চন্ডিপুর এটিএন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং নির্যাতিতা শিক্ষার্থীকেই স্কুল থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগে রবিবার বিকেলে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে। পরে এই শিক্ষককে আটক করে পুলিশ।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আতিয়ার রহমান জানান, ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠায় অভিযুক্ত ওই স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষক সাজ্জাদুল করিমকে আটক করে পুলিশ।
তিনি আরো জানান, টিপুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধর্ষণের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া এঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়েরেরও প্রস্তুতি চলছে।
নির্যাতিতা ছাত্রীর অভিযোগ, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিষয়ের শিক্ষক সাজ্জাদুল করিম ওরফে টিপু সাজেশন দেওয়ার কথা বলে তাকে বিদ্যালয় ছুটির পরও থাকতে বলে। এ সময় মেয়েটি বাথরুমে গেলে তাকে জোরপুর্বক ধর্ষণ ও ভিডিও চিত্র ধারণ করে অভিযুক্ত শিক্ষক।
সে আরো বলে, ‘পরর্তীতে তার (ওই শিক্ষক) যখন মন চাইতো তখনই তিনি সেই ভিডিওটি আমাকে দেখাতো এবং ভিডিওটি নেটে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আমার ওপর নির্যাতন চালাতো। এইসব কথা আমি লজ্জায় কাউকে বলতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে ঘনিষ্ট কয়েকজন বান্ধবীকে ঘটনাটি খুলে বলি। এ বছরের নভেম্বরে আমার জন্মদিনে বান্ধবীরা বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানায়।
নির্যাতিত ছাত্রীর অভিভাবকরা জানান, ঘটনার নয় মাস পর নভেম্বরে মেয়েটির বান্ধবীদের কাছে ঘটনা জানতে পারেন তারা। পরর্তীতে গত ২৯ নভেম্বর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক রাজার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন মেয়েটির বাবা। তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং নির্যাতিত ছাত্রীটিকে বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র দেয়। এরপর অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ও তার লোকজন বিষয়টি মিমাংসা করে নেওয়ার জন্য তাদেরকে হুমকি প্রদান অব্যাহত রাখে।
গাইবান্ধা জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ও ওই এলাকার বাসিন্দা জামিউল আনছারি লিংকন জানান, বিষয়টি জানাজানি হলে রবিবার বিকালে এলাকাবাসী শিক্ষকের অপসারণসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম গোলাম কিবরিয়ার জানান, তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং নির্যাতিতার পরিবারকে সব ধরণের আইনী সহায়তাও দেয়া হবে।
তবে এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয় ও এলাকায় গিয়ে প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি।