সিলেটপোস্ট রিপোর্ট::আজ ৬ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধে মুখে হবিগঞ্জ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। মুক্ত হয় হবিগঞ্জ জেলা। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও হবিগঞ্জের অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণবাসন ও বীরাঙ্গনাদের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের একটাই দাবি রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ চাই।
১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় তেলিয়াপাড়া ডাকবাংলো থেকে সারা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। ৩নং সেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন মেজর শফিউল্লাহ। তাঁর নেতৃত্বে হবিগঞ্জের সীমান্ত এলাকার দুর্গম অঞ্চলগুলোতে পাকিস্তানিদের সাথে তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ডিসেম্বরের শুরুতে মুক্তিবাহিনী জেলা শহরের কাছাকাছি এসে পৌঁছে। তখন মুক্তিযোদ্ধারা তিন দিক থেকে আক্রমণ শুরু করে। ৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা হবিগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে এবং ৬ ডিসেম্বর ভোর রাতে পাকসেনাসহ রাজাকাররা শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা মো. শাহাজাহান মিয়াসহ মুক্তিযোদ্ধারা হবিগঞ্জ সদর থানা কম্পাউন্ডে বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে জেলার ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধে আহত হন ৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়া নিরীহ অসংখ্য নর-নারী হানাদার বাহিনীর নির্মম নিষ্ঠুররতার শিকার হন। এসব শহীদদের জন্য তেলিয়াপাড়া, ফয়জাবাদ, কৃষ্ণপুর, নলুয়া চা বাগান, বদলপুর, মাখালকান্দিতে বধ্যভূমি নির্মিত হয়।
হবিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ও তরুণ প্রজন্মের দাবি রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ চাই। পাশাপাশি অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণবাসন এবং বীরঙ্গনাদের তালিকা প্রকাশ করা প্রয়োজন।
এদিকে, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা কমান্ডার মো. আব্দুস সহিদ জানান, ৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে বিজয় মিছিল বের করবে হবিগঞ্জ সদর থানা কমান্ডার। আজ বুধবার সকাল ১০টায় হবিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামন থেকে এ মিছিলটি বের হবে। মিছিল শেষে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।