সিলেটপোস্ট রিপোর্ট:: বেড়েছে শীতের প্রবণতা, এমন দিনে দেহ-মন চাঙ্গা করতে চাই এক কাপ উষ্ণতা! মানে, এক কাপ চা কিংবা কফি। যার ছোঁয়াতে নিমিষেই হয়ে উঠবেন চনমনে।
শীতের ঠাণ্ডা হাওয়া গায়ে লাগতে শুরু করেছে। শীতে সন্ধ্যা কিংবা কুয়াশা মাখা সকালে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা কিংবা কফির কি কোনো বিকল্প হতে পারে! এসময় কাজের ফাঁকে, আলসেমি ভরা দুপুর কিংবা ব্যস্ত বিকালে নিমিষেই চনমনে হয়ে উঠতে সঙ্গী করতে পারেন এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা কিংবা কফি। চা বহুকালের অভ্যাস, একাকিত্বের সঙ্গী অথবা জমিয়ে আড্ডা দেয়ার বাহনও বলতে পারেন। তাইতো চা কিংবা কফি পানের জন্য শীত-গ্রীষ্মের প্রয়োজন পড়ে না। তবে শীতে চা, কফি পানের আয়েশটাই যেন অন্যরকম। তাই শীতকালে চা, কফি খেতে ভালোবাসেন প্রায় সবাই।
হালকা হোক বা ভারি শীতকালে এককাপ ধোঁয়া ওঠা চা হাতে নিয়ে সকালে বারন্দায় বসে কিংবা বিকালে নাশতার টেবিলে বসে কাটিয়ে দিতে পারেন দীর্ঘ সময়। প্রিয়জনের সঙ্গে চায়ের চুমুকে সেরে ফেলতে পারেন জরুরি কথা কিংবা মধুময় প্রেমালাপ। চায়ের চুমুকে দুর্দান্ত সময় কাটাতে পারেন প্রিয় বন্ধু কিংবা পরিবারের সঙ্গে। শুধুই কি আলাপ বা সময় কাটানো! এ শীতে সকাল কিংবা দিন শেষে এক কাপ চা নিমিষেই কাটিয়ে দেবে আপনার সব ক্লান্তি। ফিরে আসবে ঝিমিয়ে পড়া কর্মচাঞ্চল্য, হয়ে উঠবেন সতেজ প্রাণবন্ত।
আমাদের দেশে সাধারণ দুধ চা এবং রং চা টাই বহুল জনপ্রিয়। কফিও রয়েছে অনেকের পছন্দের তালিকায়। ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তুলসী চা, ক্যালেন্ডুলা চা, মসলা চা, মাল্টা চাসহ নানা ধরনের ভেষজ চা। ইদানিং ভেষজ চায়ের গুণাগুণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে। ভেষজ চা প্রতিষেধক হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই পরিচিত।
স্বাস্থ্যসচেতনদের কাপে এখন উঠে এসেছে ব্লাক টি আর গ্রিন টি। ব্লাক টি লিকার-ফ্লেভার দুটো স্বাদেই জনপ্রিয়। গ্রিন টিতে ক্যাটিক্যান নামক এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উৎস; যা ক্যান্সার ও হৃদরোগের প্রতিরোধক। মস্তিষ্ক গঠন এবং ওজন কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ গ্রিন টি। অনেকেই শুধু সাধারণ রং চা, দুধ চা কিংবা শুধু কফি-ই খেয়ে থাকেন। তবে সব সময় গতানুগতিক চা না খেয়ে একটু ভিন্ন স্বাদের চা খেতে পারেন মাঝে মধ্যে। চা কিংবা কফির স্বাদে ঘরেই বানাতে পারেন মাল্টা চা, তুলসী চা, পুদিনা চা, কাঁচামরিচের চা, মশলা গ্রিন টি, লেবু গ্রিনসহ নানা পদের চা কিংবা কফি।
সকালবেলার নাশতা সেরে খুব আয়েশ করে বসেছেন এক কাপ গরম চা খেতে অথবা পড়ন্ত বিকালে গরম এক মগ কফি হাতে বসেছেন, এক চুমুচ দিতেই জিভ পুড়ে গেল! কী ঝামেলা। এমন সমস্যা এড়িয়ে যেতে জিভ পুড়ে গেছে বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গে মুখের চা-কফি ফেলে দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা পানি পান করুন। পানি দিয়ে মুখ কুলকুচি করুন। পারলে ঠাণ্ডা বরফ জিভে রাখুন দুই মিনিট।
শীতে চা কফি খাওয়ার আনন্দ কিংবা উপকারিতা অনেক; কিন্তু অতিরিক্ত চা কিংবা কফি পান কিন্তু শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তা শীত কিংবা গরম যাই হোক না কেন। কারণ চা কিংবা কফিতে থাকে ক্যাফেইন। ক্যাফেইন শরীরকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করে; কিন্তু অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীরের জন্য নানাবিধ ক্ষতির কারণ হতে পারে।
মস্তিষ্ক বিজ্ঞানীদের মতে, চা-কফি ঠিকমতো খেতে হলে আপনাকে ক্রনোফার্মাকোলজি জানতে হবে। মানে, আপনার শরীরবৃত্তীয় রসায়ক কেমন এবং দেহের ভেতর তার সমন্বয় কীভাবে হয়- এসবের ওপর গুরুত্ব দিয়েই ক্যাফেইন অর্থাৎ চা-কফি গ্রহণ করতে হবে। চিনিসহ এককাপ দুধ চা ওজন বাড়ায়। গ্যাস্টিকের সমস্যা তৈরি করে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে উপকারী চিনি ছাড়া রং চা, নানা পদের ভেষজ মশলা চা।
কফি শপে গিয়ে চা-কফি অনেকেরই খুব প্রিয়। রাজধানীতে রয়েছে ভালো মানের বেশকিছু কফি শপ। যেখানে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডাতে কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে শীতসন্ধ্যা কিংবা আলসেমি দুপুরটা করে তুলতে পারেন চাঙ্গা। এরকম কিছু কফি শপের মধ্যে রয়েছে বনানীর কফি ওয়ার্ল্ড, নর্থ অ্যান্ড কফি রোস্টার্স, গুলশান, কারওয়ানবাজার ও উত্তরার বারিস্তা লাভাজ্জা, বনানী, গুলশান, উত্তরার কফি বার ইত্যাদি।