সিলেটপোস্ট রিপোর্ট:: নিউইয়র্কের জনসমাগমস্থলে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আকায়েদ উল্লাহর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হলো ফেডারেল চার্জ। এতে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত আকায়েদ বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহযোগিতা করছিলেন।
অভিযোগগুলোরে মধ্যে ফেডারেল চার্জকেই গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তাই আকায়েদের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ম্যানহাটন ফেডারেল কোর্টে তার বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়াও আকায়েদের বিরুদ্ধে জনসমাগমস্থলে বোমা হামলা, ধ্বংসাত্মক ডিভাইস ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ফেডারেল প্রসিকিউটরদের ওই লিখিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণের পর আকায়েদ পুলিশকে বলেছেন, ‘আমি এটা ইসলামিক স্টেটের জন্য করেছি।’
২৭ বছর বয়সী আকায়েদ নিজের সঙ্গে রাখা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণে আহত হয়ে এখন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন। তিনি আত্মঘাতী হামলার চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে পুলিশের অভিযোগ। তবে হাসপাতালে তার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে পুলিশ কিছু জানায়নি।
প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে ইন্টারনেটে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের বিভিন্ন প্রচারপত্র দেখে উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকতে থাকেন আকায়েদ। এখন তিনি এ হামলা করেছেন মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ থেকে।
এদিকে, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট আকায়েদের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখা, পাইপ বোমার বিস্ফোরণ এবং সন্ত্রাসবাদী হুমকির অভিযোগ এনেছে।
অন্যদিকে, বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার হামলার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পকে সতর্ক করে পোস্ট দিয়েছিলেন অভিযুক্ত আকায়েদ উল্লাহ।
হামলার কিছুক্ষণ আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রাম্প করে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প, তুমি তোমার জাতিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ।’
এর আগে সোমবার সকালে স্থানীয় সময় সোয়া ৭টার দিকে নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটনে পোর্ট অথরিটি টার্মিনাল স্টেশনের ভূগর্ভস্থ পথে বিস্ফোরণ ঘটান আকায়েদ। এতে তিনিসহ তিন পুলিশ আহত হন।
২৭ বছর বয়সী এ বাংলাদেশি যুবক কথিত জঙ্গি সংগঠন আইএসের আদর্শ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
আহত অবস্থায় আটক হওয়ার পর হাসপাতালে আকায়েদ বলেন, ‘তারা আমার দেশে বোমা বিস্ফোরণ করছে, তাই আমি এখানে হামলা করতে চেয়েছি।’
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার আকায়েদ ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সেখানকার ব্রুকলিনে তিনি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকেন। দীর্ঘদিন তিনি ক্যাবগাড়ি চালাতেন।
এদিকে, নিউইয়র্কে বিস্ফোরণের পর বাংলাদেশ পুলিশ তার চট্টগ্রামের বাড়িতে খোঁজখবর নিয়েছে। তবে সেখানে আকায়েদ কিংবা তার পরিবারের বিরুদ্ধে অপরাধের কোনো রেকর্ড খুঁজে পায়নি পুলিশ।