সিলেটপোস্ট ডেস্ক::কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমদের বিরুদ্ধে পাথর চুরি, চাঁদাবাজি, পরিবেশ ধ্বংস ও হত্যাকাণ্ডসহ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগে বারবার মামলা হলেও তিনি অব্যাহতি পেয়ে যাচ্ছেন। প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শামীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে তিনি রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। তাকে প্রধান আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছিল। কিন্তু মামলাগুলো থেকে তাকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছেন পুলিশেরই তদন্ত কর্মকর্তারা। পুলিশের করা মামলায় শামীমের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় সিলেটজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা অতীতেও দেখেছি অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের দায়ে শামীম গ্রেফতার হয়েছেন। তবে তার হাত অনেক লম্বা। তার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের বৃদ্ধ সভাপতিও আদালতে দাঁড়িয়ে নিজ জিম্মায় জামিন করান। আমরা আশা করব- পুলিশ প্রকৃত আসামিকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।
এসব ব্যাপারে মামলাগুলোর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই খাইরুল বাশার, মো. স্বপন মিয়া ও অভিজিৎ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে তারা বলেন, তাড়াহুড়ো করে এজাহার দাখিল করা হয়েছিল। পরে তদন্তে এর সত্যতা মেলেনি। এজন্য প্রতিটি মামলার প্রধান আসামিকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করেছেন।
এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ থানার নবনিযুক্ত ওসি কেএম নজরুল বলেন, কয়েকদিন হল যোগদান করেছি। এ বিষয়ে কিছুই জানা নেই। সব খতিয়ে দেখব।
জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শামীম আহমদ বলেন, তার বিরুদ্ধে করা সব মামলা মিথ্যা। এগুলো সব আবুলে (সাংবাদিক আবুল হোসেন) সাবেক ওসি আবদুল হাইকে দিয়ে করিয়েছেন। তাকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য চক্রটি উঠেপড়ে লেগেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল হোসেন বলেন, এসব মিথ্যা কথা। চেয়ারম্যান শামীমের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই। কেন তাকে মামলায় জড়াব?
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর চাঁদাবাজির অভিযোগে বর্নি গ্রামের আজির উদ্দিন বাদী হয়ে শামীম আহমদকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় তার ভাই বিল্লাল আহমদ, ভাতিজা কেয়ায়েত উল্লাহ, তার আত্মীয় আঞ্জু মিয়া ও আঞ্জু মিয়ার দুই ছেলে রাজু ও শাহরিয়ার এবং দক্ষিণ সুরমার এমদাদুল হককে আসামি করা হয়। তবে কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই স্বপন মিয়া ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রধান আসামি শামীমকে বাদ দিয়ে চার্জশিট দেন। এর আগে ২০১৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জনমনে ভয়ভীতি সৃষ্টির অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে এসআই খাইরুল বাশার বাদী হয়ে শামীমকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় শামীমের ভাই-ভাতিজা, মেয়ের জামাই, ভাগ্নেসহ তার বাহিনীর ১৯ জনকে আসামি করা হয়।
কিন্তু শামীমসহ তার আত্মীয়স্বজন ১৪ জনকে বাদ দিয়ে ২০২০ সালের ৮ এপ্রিল স্বপন মিয়া চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এসআই স্বপন মিয়া বাদী হয়ে সরকারি জায়গা থেকে অবৈধ বোমা মেশিন ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন ও চুরি করে এবং পানির গতিপথ পরিবর্তন করার অভিযোগে শামীমকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। এছাড়া ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট এসআই খাইরুল বাশার বাদী হয়ে শামীমকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। এ মামলার চার্জশিট থেকেও শামীমকে বাদ দেয়া হয়।
সুত্র:যুগান্তর