ওসমানীনগর প্রতিনিধি::নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের সমালোচিত ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদ মোবারককে যোগদানের সাত মাথায় ঢাকার পুলিশের এসবি শাখায় বদলি করা হয়েছে। সিলেট জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন সাধারণ বদলির প্রক্রিয়ায় ওসমানীনগরের ওসি রাশেদ মোবারককে অন্যত্র বদলি করা হয়। তবে ওসমানীনগরের সচেতন মহল দাবি করছেন, থানায় যোগদানের পর থেকে তিনি বাহিরে সাধু মনোভাব দেখালেও নানা বিতর্কিত ঘটনা সৃষ্টি করে সমালোচিত হওয়ায় কম সময়ের মধ্যেই তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ওসি রাশেদ মোবারক সমানীনগর থানায় যোগদানের পর নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্ম দেন। অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট ও ঘুস বাণিজ্য করে হাতিয়ে নেন বড় অঙ্কের টাকা। মানুষকে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করাই ছিল তার নেশা। উপজেলার উমরপুর ইউনিয়ন আওয়ালীগের সভাপতি শহিদ পরিবারের সদস্য দবির মিয়া, উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল আহমদ, উমরপুর ইউনিয়নের সালিশ ব্যক্তিত্ব সাবেক ইউপি সদস্য তখলিছ আলী, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক উমরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান চেরাগ আলী কোনো কারণ ছাড়াই তাদের ব্যক্তিগত মোবাইলে কল দিয়ে রশি দিয়ে থানায় বেধে আনার হুমকি দেন। এনিয়ে সর্বস্থরের মানুষ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল সমালোচনা সৃষ্টি হলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
ওসির এসব বিতর্কিত ঘটনা উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দসহ ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে পুলিশ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মৌখিকভাবে অবিহিত করা হয়। উপজেলা মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় একাধিক জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতারা নিন্দা প্রস্তাব উত্তাপন করেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, যোগদানের শুরুতেই তিনি অপরাধীদের ধরপাকড়, মাদক, জুয়াসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সহিত জড়িতদের ধাওয়া দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে টাকা আদায়ের কৌশল করতেন। থানায় কর্মরত তার অনুসারী কথিপয় এস আইদের দিয়ে অপরাধিদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে নিরবে আর্থিক সুবিধা আদায়ে লিপ্ত ছিলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। সাধারণ মানুষ ও সেবা প্রার্থীরা ওসির সামনে এসে কথা বলার সুযোগ পেতনা তার বিকৃত মনোভাবের কারণে। করোনাকালে লকডাউন বাণিজ্য করে নানা কায়দায় সাধারণ মানুষদের হায়রানি করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। কেউ প্রতিবাদ করলেই ডাইরেক্ট মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করার হুমকি দিতেন হরহামেশা। ওসির এসব অনৈতিক আচরণে থানায় কর্মরত একাধিক পুলিশ অফিসার বিব্রতরোধ করতেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়।
এদিকে সোমবার ওসি রাশেদ মোবারকের বদলির বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলার সর্বস্থরের লোকজন স্বস্তিরোধ করছেন। অনেকেই ওসির বিতর্কিত কর্মকান্ড তুলে ধরে আলোচনা-সমালোচনা করছেন।