লেখক মো: আব্দুল মালিক::শিক্ষকতা একটি আদর্শ ও মহান পেশা। এই পেশায় যিনি নিয়োজিত তাঁকে শিক্ষক বলে। শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। হ্যঁা একজন শিক্ষক সত্যিই মানুষ গড়ার কারিগর। প্রবাদ আছে,-‘মা-বাবা জন্ম দেয় ভুত, ওস্তাদে বানায় পুত।’ মা বাবার পরেই ওস্তাদের স্থান। আল্লামা ইকবাল বলেছেন, ‘স্কুলের শিক্ষক হচ্ছেন একজন মিস্ত্রি। যিনি গঠন করেন মানবাত্মা। হেনরি এড্যামস বলেছেন, ‘শিক্ষকদের প্রভাব অনন্ত কালেও শেষ হয় না।’ শিক্ষকের কাজ শিক্ষা সংক্রান্ত। পবিত্র কুরআনের প্রথম বাণীও হচ্ছে শিক্ষা সংক্রান্ত। ‘পড়ো তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন আলাক থেকে। যিনি মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন কলমের সাহায্যে যাহা সে জানতনা ।’ সূরা আলাক। এখানে শিক্ষক হচ্ছেন স্বয়ং আল্লা এবং ছাত্র হচ্ছেন রাসুলুল্লা (সাঃ)। পবিত্র হাদীসে আছে, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে তা শিক্ষা দেয়।’ সকল শিক্ষার মূলে হচ্ছে পবিত্র কুরআন। যেখানে স্রষ্টা, সৃষ্টি রহস্য এবং মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান রয়েছে। আমরা শিক্ষার যে ধারায়্ই বিচরণ করি না কেন তার মূলে পবিত্র কুরআন। একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীকে তার অজানা বিষয়েই শিক্ষা দিয়ে থাকেন। তাই শিক্ষকের মর্যাদা সবার উপরে। কবি কাজী কাদের নেওয়াজ বলেছেন, ‘শিক্ষক আমি শ্রেষ্ঠ সবার, দিল্লিপতি সে কোন ছার।’ শিক্ষকের এই যে উচ্চ মর্যাদা তা এমনিতেই হয় না। এজন্য একজন শিক্ষকের কিছু বিষেণ গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকে। শিক্ষক শব্দের ইংরেজি শব্দ হচ্ছে ঞবধপযবৎ ঞ- দ্বারা ঞৎঁঃযভঁষ/ঞধষবহঃবফ, ঊ- দ্বারা ঊহবৎমবঃরপ/ঊীপবষষবহঃ, অ দ্বারা অফড়ৎধনষব, ঈ- দ্বারা ঈৎবধঃরাব/ঈযধৎসরহম, ঐ- দ্বারা ঐবষঢ়ভঁষ/ঐঁসনষব, ঊ দ্বারা ঊভভরপরবহঃ/ ঊফঁপধঃবফ, জ দ্বারা জবংঢ়ড়হংরনষব বুঝায়। যার মধ্যে এসব গুণাবলী বা বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান তিনিই হচ্ছেন প্রকৃত শিক্ষক।
শিক্ষা গবেষকরা বলেছেন, ‘শিক্ষককে সৃষ্টি করা যায় না, তাঁরা কবির মত বিশেষ প্রতিভা নিয়ে জন্মান। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিছুটা মান উন্নত করা যায় মাত্র।’ তাই যুগে যুগে এমন সব শিক্ষকের জন্ম হয়েছে যাদের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে, মানুষ তাঁদেরকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। বিশ্ব বিজয়ী গ্রীকবীর আলেকজান্ডার তাঁর শিক্ষক এরিষ্টটল সম্পর্কে বলেছেন,‘পিতার কাছ থেকে পেয়েছি আমার এ জীবন আর গুরুর কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করেছি কীভাবে- এ জীবনকে সার্থক করা যায়।’
আনুষ্ঠানিক অর্থে পাঠদান ছাড়াও শিক্ষক মাত্রেরই যে কটি মহৎ ভাবমূর্তি ও অনুকরণীয় আদর্শ থাকে এবং একজন যথার্থ শিক্ষকের দেখাদেখি তাঁর কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যে একাধারে বিদ্বান ও মহৎ প্রাণ মানুষ হওয়ার প্রেরণা পেতে পারে এই প্রবন্ধ এ সত্যটা উপলব্ধি ও অনুশীলনে কিছুটা সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস। একথা সুবিদিত যে, শিক্ষাদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৎ মানুষ ও সুনাগরিক করার কাজে শিক্ষক ও অভিভাবকদের ভূমিকা অপরিসীম। স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, ‘শিক্ষকের কাজ মানুষ চাষ করা। আর তা যদি করতে হয় তাহলে দায়িত্বশীল শিক্ষক ও অভিভাবক হিসাবে আমাদের কেবল শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কের খোরাক দিলেই চলবে না, তাদের দেহ মন অন্তরাত্মার সার্বিক বিকাশের দিকেও মনোনিবেশ করতে হবে। এক্ষেত্রে আরো যা প্রয়োজন তা হলো শিক্ষক-অভিভাবকদের নিজেদেরই প্রথমেই আদর্শ ও নিষ্ঠাবান হওয়া চাই।”
এই বাস্তবমুখী ও সুণীতিবোধক শিক্ষানীতিতেই আমরা উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম সেই ছোটবেলায়। এই মহৎ আদর্শেই শিক্ষার্থীদের দীক্ষিত করতেন আমাদের মহান শিক্ষক- অভিভাবকরা। আমার জীবন দর্শনের গোড়ার কথা ভাবতে গেলে পিতা মাতার পাশাপাশি আজ অবলীলায় মনে পড়ে কয়েকজন পরম হিতৈষী শিক্ষকের কথা। যাঁদের সান্নিধ্য, শিক্ষাদীক্ষায় আমার কৌতুহল নিবৃত্তি ও জ্ঞানবুদ্ধির ক্রমবিকাশে বিস্তার করেছে অফুরন্ত প্রভাব। প্রথমেই মনে পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পরম পূজ্য আবুল খায়ের মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান, মরহুম খলিলুর রহমান (লেইছ মিয়া), মোঃ আব্দুল মালিক, মোঃ হেলিমুর রাজা চৌধুরী, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মরহুম আপ্তার আলী, মরহুম মঈন উদ্দিন, মরহুম ছাদ উদ্দিন, মহাবিদ্যালয়ের মরহুম মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, মরহুম নুরুল ইসলাম, মনির উদ্দিন, পরিমল চৌধুরী, রফিক আহমদ, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ কুমিল্লার এ.এস.এম মোজাম্মিল হক, মেহের আপ্তাব প্রমুখের নাম।
এই নিবন্ধে শুধু আখতারুজ্জামান স্যার নিয়ে যৎকিঞ্চিত আলোচনা করব। অন্যদের ব্যাপারে বারান্তরে আলোচনার আশা পোষণ করছি। আখতারুজ্জামান স্যার মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও প্রকৃতই ছিলেন একজন মহৎপ্রাণ মানুষ ও প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি। তিনি আমাদের প্রায় সব বিষয়ই পড়াতেন। প্রতিদিন পাঠ শেষে বাড়ির কাজ দিতেন। পরবর্তী ক্লাসে বাড়ির কাজ আদায় করতেন, খাতা দেখে স্বাক্ষর দিতেন। পড়া শিখেছি কি না তা জিজ্ঞেস করতেন। যদি কেউ বাড়ির কাজ করতোনা বা পড়া শিখতোনা তাকে কানে ধরে উঠ বস করা, জালিবেতের বেত্রাঘাত বা অন্য কোনো শাস্তি ভোগ করতে হতো। তদুপরি ছুটির পরে পড়া শিখে দিয়ে আসতে হতো। তাঁর সেই কঠোর শাসনে আজ এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি বলে আমার বিশ্বাস। যদিও বর্তমানে বিদ্যালয়ে শাস্তি প্রদান একেবারে নিষিদ্ধ। তথাপি সারা জীবনের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয় কিছুটা শাস্তি প্রয়োজন আছে। শাস্তি প্রদান মোটেও সুখের নয়। একজন শিক্ষক ছাত্রকে শাসন করতে গেলে তাঁকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তদুপরি বিষয়টি ছাত্র-অভিভাবকের নিকট অনেক সময় গ্রহণযোগ্য হয় না। ফলে মাঝে মধ্যে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। তবে একটি কথা আছে, ‘শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে।’ স্যার কঠোর শাসন করলেও পরে ডেকে নিয়ে আদর করতেন। স্যারের প্রভাব শুধু শিক্ষার্থীদের উপর ছিল না, তিনি প্রতিটি শিক্ষার্থীর অভিভাবকের এবং এলাকাবাসীর সাথে সু সম্পর্ক রাখতেন। ছাত্রদের পড়াশোনার খোঁজে তাদের বাড়িতে চলে যেতেন। বর্তমান শিক্ষানীতি অনুযায়ী পিছিয়ে পড়া দুর্বল শিক্ষার্থীদের বাছাই করে ফি এর বিনিময়ে বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ক্লাশ নেওয়া, অভিভাবকদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন এবং শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার খেঁাজ খবর রাখার কথা বলা হচ্ছে। যা এই নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক আজ থেকে ৫০ বছর আগে বিনা ফিতে, স্ব উদ্যোগ করতেন।
আজকের দিনের প্রাইভেট কোচিং প্রিয় শিক্ষকদের সামনে, আমার শিক্ষাগুরু আখতারুজ্জামানের মহান আদর্শ যদি বিস্তারিত তুলে ধরতে পারতাম তাহলে হয়তো হালের অনেক দুঃখজনক অবক্ষয় কিছুটা হলেও রোধ করা যেত। আজকাল কোন কোন শিক্ষকের কর্তব্যে অবহেলা ও অর্থের প্রতি সীমাহীন মোহের কথা যখন শুনি বা দেখি, ঠিক তখনই অবলীলাক্রমে স্যারের সৌম্য স্নিগ্ধ চেহারাটা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে। কারণ তাঁর মতো আদর্শবান শিক্ষকরা সেই অজ পাড়াগঁায়ে নীরবে নিভৃতে শিক্ষকতা পেশাকে যে গৌরবময় স্তরে পৌঁছে দিয়েছিলেন আজকাল তা আর সে স্তরে নেই। ফলে শিক্ষকদের প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধা আকর্ষণের অতীতের দৃষ্টান্ত অনেকটা কল্প কাহিনীর মতোই অবাস্তব অবিশ্বাস্য শোনায় বৈকি। তবে শিক্ষকদের একেবারে হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই। কয়েক বছর পূর্বে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা এক জরীপ পরিচালনা করে। জরীপে জানতে চাওয়া হয় সাধারণ মানুষ কোন পেশার মানুষকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে। সেখানে শিক্ষকদের অবস্থান ছিল প্রথম। বর্তমানে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার প্রতি জোর দেওয়া হচ্ছে। আমার এই শিক্ষাগুরু প্রতি দিন যোহরের নামাজের সময় ছাত্রদেরকে নিয়ে মসজিদে যেতেন, মেয়েদেরকে বিদ্যালয়ে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করতেন। তিনি খুবই পূত পবিত্র উচ্চ নৈতিক চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। জ্বীনভূতের আছর বা শারিরীক অসুস্থতায় বিনা মূল্যে তিনি যে তদবির দিতেন তা অনেকটা অব্যর্থ ছিল। ইত্যাদি কারণে ছাত্র এবং অভিভাবকরা তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনিও সময় সুযোগ পেলে তাঁর পুরাতন কর্মস্থল এলাকায় ছুটে যান। বর্তমানে তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সাতগাঁও এ খুবই পিছিয়ে পড়া একটি গ্রামে বাড়ি করে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সেই গ্রামে কোন মসজিদ ছিল না। দরিদ্র গ্রামবাসীর পক্ষে মসজিদ করা সম্ভব হয় নি। তিনি সেখানে বাড়ি করার পর ঐ গ্রামে একটি মসজিদ স্থাপন করেন প্রাক্তন ছাত্র-অভিভাবকদের অনুদানে।
আখতারুজ্জামান স্যার কেমন নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক ছিলেন তা বুঝার জন্য একটি ঘঠনা উপস্থাপন করছি। তাঁর সহোদর ভাই ছাতকে তাঁর মত নিবেদিতপ্রাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ছিলেন। তাঁরই এক ছাত্র জনাব ইমান আলী হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হওয়ার পর সতীর্থদের মাধ্যমে এই শিক্ষকের খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাঁর সেই শ্রদ্ধেয় শিক্ষক নোয়াখালীতে তাঁর গ্রামের বাড়িতে অবসর জীবন যাপন করছেন। বিচারপতি ইমান আলী তাঁর সেই শিক্ষককে দেখতে ঢাকা থেকে নোয়াখালীতে ছুটে যান। একজন শিক্ষক কতটা নিবেদিতপ্রাণ হলে উচ্চ আদালতের একজন মাননীয় বিচারপতি তাঁকে দেখার জন্য শত ব্যস্ততার মাঝে, শত খোঁজাখুজি করে এত দুরের পথ পাড়ি দিয়ে তাঁর বাড়ি যেতে পারেন তা সহজেই অনুমেয়।
আমার এই শিক্ষাগুরু ১৯৪৭ সালের ১লা মার্চ নোয়াখালী জেলার রামগঞ্জ থানার নোয়াখলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মোহাম্মদ মুসলিম মিয়া। শিক্ষাজীবনে তিনি চাটখিল আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে ১৯৫৭ সালে দাখিল, ১৯৬২ সালে আলিম, ১৯৬৬ সালে ফাজিল পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন। ১৯৭৫ সালে ইন সার্ভিস পিটিআই সিলেট থেকে সি.ইন.এড কোর্স সমাপ্ত করেন। তাছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন।
তিনি ১৯৫৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সহকারী শিক্ষক পদে গোলাপগঞ্জ থানার ঘাঘুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পান। সেই বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি বদলি হয়ে একই থানার বহর গ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। এই বিদ্যালয়ে তিনি ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০ বছর শিক্ষকতা করেন। সেই সময় এই অধমের ১৯৭২ -১৯৭৬ সাল পর্যন্ত এই গুণি শিক্ষকের সান্নিধ্যে ও কঠোর শাসনে শিক্ষা লাভের যুযোগ হয়। উল্লেখ্য আমার বড় ভাই এবং ছোট বোনও তাঁর ছাত্র ছিলেন। তাঁর স্বাভাব সুলভ নিয়ম অনুযায়ি আমার পরিবারের সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিল এবং আমার মা বাবার উপর তাঁর প্রচন্ড প্রভাব ছিল। আমাদের এলাকায় তিনি নোয়াখালী স্যার নামে সুপরিচিত ছিলেন। ১৯৭৯ সালের ৭ জুলাই তিনি প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পেয়ে বিশ্বনাথ থানার ১ নং লামাকাজি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। প্রায় দেড় বছর পর তাঁকে টুকেরকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়। প্রায় চার বছর চাকুরী করার পর তাঁকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার রায়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়। সেখানে প্রায় দেড় বছর চাকুরী করার পর তাঁকে একাটুনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়। সেই বিদ্যালয়ে প্রায় চার বছর চাকুরী করার পর তাঁকে উত্তর জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়। সেই বিদ্যালয়ে প্রায় এক বছর চাকুরী করার পর তঁাকে আকবর পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়। সেখানে প্রায় চার বছর চাকুরী করার পর তাঁকে পটকী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শ্রীমঙ্গলে বদলী করা হয়। এই বিদ্যালয়ে প্রায় ১৪ বছর চাকুরী করার পর তিনি ২০০৪ সালে অবসরে চলে যান। উল্লেখ্য পটকী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ছিল সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি খালেদা রব্বানীর পৈতৃক নিবাসের স্কুল। এই বিদ্যালয়ে থাকাকালীন খালেদা রব্বানী এমপির সাথে তাঁর পরিচয় হয় এবং তাঁর প্রতিষ্টিত মসজিদ নিমার্ণে মাননীয় এমপি যথেষ্ট আর্থিক সাহায্য করেন।
বর্তমানে এই গুণি শিক্ষক শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁওয়ের পাসে একটি গ্রামে অবসর জীবন যাপন করছেন। তাঁর দুই ছেলে বাড়িতে একটি গরুর খামার ও একটি ছোট কম্পিউটার সার্ভিসের দোকান পরিচালনা করছেন। ৭৩ বছর বয়সী এই জ্ঞান তাপস, মানুষ গড়ার কারিগর বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন যার মধ্যে নিউরো সমস্যা প্রবল।
এই জ্ঞানী ও গুণি শিক্ষকের পদতলে শিক্ষা লাভের সুযোগ পেয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করি। একই সাথে তাঁদের মত গুণি শিক্ষক হতে না পারার দুঃখও কম নয়। আমি আমার পরম শ্রদ্ধাভাজন এই শিক্ষা গুরুর সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করি।