মোঃ সুজাত আলী,জগন্নাথপুর::এবারের কোরবানির ঈদ অন্য সময়ের মতো নয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি বন্যায় মানুষদেরকে বিপাকে ফেলেছে। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে মুখে মাস্ক ব্যবহার না করে এবং স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার ঢল নামছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এবার জগন্নাথপুরে ১০টি পশুর হাটে পশু ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। স্থায়ী ২টি কোরবানির পশুর হাট সহ ৮টি অস্থায়ী কুরবানীর হাটে পশু ক্রয় বিক্রয় করা হচ্ছে। রানীগঞ্জ ইউনিয়নের রানীগঞ্জ বাজার ও পাটলি ইউনিয়নের রসুলগঞ্জ বাজারে স্থায়ী পশুর হাটে পশু ক্রয় বিক্রয়ের পাশাপাশি কলকলিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দগঞ্জ বাজার, পাইলগাঁও ইউনিয়নে পল্লীগঞ্জ বাজার, ইনাতগঞ্জ বাজার, আশারকান্দি ইউনিয়নের বড়ফেছীর বাজার, নয়বান্দর বাজার, মিরপুর ইউনিয়নের কেইনবাড়ী বাজার, মিরপুর বাজার, সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর বাজারে অস্থায়ী ভাবে পশুর হাটে পশু ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে মুখে মাস্ক ব্যবহার না করে এবং স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার ঢল নামে। মাস্ক ছাড়া ঘুরছেন লোকজন। করোনাভাইরাসের কারণে হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হলেই ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়পক্ষেরই হুশ কম। তবে করোনা ও বন্যার কারণেই জগন্নাথপুরের হাটগুলোতে এবার গরুর আমদানি বেশি থাকলেও ক্রেতা কম। ফলে তুলনামূলক কমদামে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু। দামের সুবিধা পাওয়ায় পশু কিনে ক্রেতারা খুশি হলেও সারাবছর পালন করে প্রত্যাশার সমান বিক্রয়মূল্য না পাওয়ায় মন খারাপ বিক্রেতাদের। জগন্নাথপুর বাজারে মাইকিং করে বলা হচ্ছে সম্মানিত ক্রেতা-বিক্রেতাগণ আপনারা মাস্ক ব্যবহার করুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। মাইকে বার বার এমন প্রচারণা চলছিল। শুনছেন সবাই। কিন্তু মানলেন না কেউই।
ক্রেতারা জানান, করোনা ভাইরাস ও বন্যার জন্য এবার অন্য বছরের তুলনায় পশুর দাম কম। কম দামে পশু ক্রয় করায় সকলেই খুশি। গত বছরের তুলনায় এবছর গরুর দাম গড়ে ১০ হাজার টাকা কম। শেষ মহুর্তে পশু ক্রয় করবেন বলে জানান অনেকেই। কেননা পশু ক্রয় করে পশু রাখা ও খাওয়ানোর ব্যবস্থা নেই। বন্যার জন্য পশুর খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।
বিক্রেতারা জানান, সারা বছর পশু পালন করে প্রত্যাশার সমান বিক্রয়মূল্য না পাওয়ায় মন খারাপ তাদের। অনেকেই গত ঈদের পর পশু ক্রয় করেছিলেন লাভের আশায় পশু ক্রয় করে বহু টাকা খরচ করে লাভ পান নাই। করোনা পর দফায় দফায় বন্যায় গো খাদ্যের সংকট দেখা দেওয়ায় বাধ্য হয়ে পশু বিক্রয় করে দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানির হাট পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক পশুর হাটে মাইকিং করেছি যাতে সকলে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে। আমি বাজার মনিটরিং এ গিয়েছিলাম। আমাদের সহকারি কমিশনার ভূমি বাজারে আছেন মনিটরিং করছেন। সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করার জন্য বলা হচ্ছে। আমরা প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছি।