সংবাদ শিরোনাম
গোয়াইনঘাটে পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু  » «   যাদুকাটায় নৌকা ডুবে পাথর শ্রমিকের মৃত্যু  » «   দোয়ারাবাজারে অবৈধ ভাবে বসত ঘরসহ দোকান পার্ট নির্মান ও রাস্তার গাছ কাটার অভিযোগ  » «   সিলেটে জন্ম নিবন্ধন করাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন অভিভাবকরা  » «   সিলেটে তালামীযে ইসলামিয়ার মীলাদুন্নবী (সা.) র‍্যালি অনুষ্ঠিত  » «   দক্ষ জনশক্তি দেশ বিদেশের শ্রমবাজারে অবদান রাখবে-শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি  » «   খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশযাত্রা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে-নাসিম হোসাইন  » «   দোয়ারাবাজারে ভারতীয় চিনিসহ আটক ২    » «   দোয়ারাবাজারে চোরাইপথে আসা ভারতীয় ৩৬ গরুসহ আটক ৮  » «   চুনারুঘাটে বানের পানির মত আসছে বিভিন্ন প্রকার মাদক  » «   জামালগঞ্জের শান্তিপুর গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী ও তিন সন্তানের বিষপান,তিন সন্তানের মৃত্যু,স্বামী আটক  » «   বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবে না : খন্দকার মুক্তাদির  » «   জৈন্তাপুর সীমান্ত: চোরাচালানের অভয়ারণ্যে,  আসছে গরু,মহিষ, মাদকদ্রব্য:শীর্ষে নিজপাট ও জৈন্তাপুর ইউনিয়ন  » «   মানুষ আজকে শেখ হাসিনাকে এক মিনিটের জন্য ক্ষমতায় দেখতে চায় না-গয়েশ্বর চন্দ্র রায়  » «   দেশের সাধারণ মানুষ ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন চায় : কাইয়ুম চৌধুরী  » «  

মুজিববর্ষে ‘ভিক্ষুক ও পতিতামুক্ত বাংলাদেশ’ ঘোষনা চাই

মোঃ আব্দুল মালিক::ইংরেজ সরকার কতর্ৃক পাশকৃত সেই ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের পতিতাবৃত্তি আইনে এখনো দেশে দু/একটি পতিতালয় চালু আছে। পূর্বে অনেকগুলো পতিতালয় ছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঢাকা, নারায়নগঞ্জ সহ প্রায় সকল স্বীকৃত পতিতালয় বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পতিতালয়টি রয়েছে। এর বাইরে তেমন বড় কোন পতিতালয় নেই। ধর্ম এবং সমাজ কোনটিই পতিতাবৃত্তি সমর্থন করে না। ধর্মের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের ২৪ বছর, স্বাধীন বাংলাদেশের ধর্ম নিরপেক্ষ সরকারের সাড়ে তিন বছরের পর সংবিধানে ধর্মের লেবাস দেয়া শুরু হয়। প্রথমে সংবিধানে বিসমিল্লাহ, আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস এবং সর্বশেষ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ইসলামে নিষিদ্ধ পতিতাবৃত্তি আইনটি এখনো বাতিল করা হয় নি। এমনকি সংবিধানের ১৮(২) উপধারায় ‘রাষ্ট্র গণিকাবৃত্তি নিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিবেন’ লিখা থাকলেও আজও গণিকাবৃত্তি নিরুধ করা হয় নি। অথচ কথায় কথায় দেশে ধর্মের নামে, ইসলামের নামে আন্দোলন হয়। ইসলাম সমর্থিত রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি সংসদে গিয়েছেন, মন্ত্রীত্ব করেছেন কিন্তু এ ব্যাপারে কোন দিন কোন বক্তব্য দেন নি। পতিতালয় আবার সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীন। আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই স্লোগানধারী আলী আহসান মোহাম্মদ মোজাহিদ সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে থেকেও এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেন নি। পতিতাবৃত্তিতে যারা জড়িত তারা সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম মানুষ। তাদেরকে সহজেই চাকুরী দিয়ে, বিদেশে পাঠিয়ে বা স্ব-কর্ম সংস্থানের মাধ্যমে পুনবার্সন করা সম্ভব। এটা করা হলে জোর করে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ বন্ধ হবে। যৌন রোগের বিস্তার রোধ হবে।

ভিক্ষাবৃত্তি একটি অনুৎপাদনশীল ও ঘৃণ্য পেশা। এটিকেও ইসলাম সমর্থন করে না। আল্লাহর নবী কাউকে কোন দিন ভিক্ষা দেন নি। সাময়িক সাহায্য দিয়ে কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কিন্তু আজ বাংলাদেশে ভিক্ষাবৃত্তি একটি লাভজনক পেশা হয়ে দঁাড়িয়েছে। এই পেশার আড়ালে অনেক অপকর্ম-অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে। তাই জাতীয় উন্নয়ন, ধর্ম ও সামাজিক মূল্যেবোধ, আইন শৃঙ্খলার উন্নয়নে ভিক্ষাবৃত্তি নিরোধ করা একান্ত কাম্য। সংবিধানের ১৫(ক) উপধারায় বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে নাগরিকের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবন ধারনের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা করা।’ বর্তমান সরকারের নিবাচর্নী ইশতেহারে ভিক্ষুক পূর্ণবাসন কর্মসূচি ছিল। সাবেক অর্থমন্ত্রী আব্দুল মাল আব্দুল মোহিত পরপর কয়েক বছর বাজেটে এ খাতে টাকা বরাদ্দ রেখেছিলেন। কিন্তু সমাজ কল্যাণ মন্ত্রানালয় সে টাকা কাজে লাগাতে পারেনি। অর্থ বছর শেষে টাকা ফেরৎ গেছে। তাই পরবর্তীতে তিনি অনেকটা রাগ করে এখাতে আর টাকা বারাদ্দ দেননি। ঢালাওভাবে একটি কথা প্রচলিত আছে ‘ভিক্ষুকরা পূর্নবাসিত হতে চায় না’। কথাটা সম্পূর্ণ সত্য নয়। আসলে প্রকৃত ভিক্ষুকরা পূর্ণবাসিত হতে চায়। যারা চায় না তারা হচ্ছে পেশাদার ভিক্ষুক বা সিন্ডিকেট দলের সদস্য বা সৌখিন ভিক্ষুক। এরা দেখে পূর্ণবাসনের চাইতে ভিক্ষাবৃত্তিতে লাভ বেশি। তাই তারা পূর্ণবাসিত হতে চায় না।

সরকার যদি আইন করে পতিতা বৃত্তি ও ভিক্ষাবৃত্তি কঠোর শাস্তি যোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করেন, তাহলে শাস্তির ভয়ে আর কেউ এসব পেশায় যাবে না। তখন প্রকৃত ভিক্ষুক ও পতিতারা পুর্নবাসিত হবে, অন্যরা সটকে পড়বে।

সরকার পতিতা ও ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধে ইচ্ছুক হলে প্রথমেই একে নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ গণ্য করে একটি আইন পাশ করে ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে। এদের তালিকাভূক্তির জন্য অনলাইনে যেকোনো স্থান থেকে এবং ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তালিকাভূক্তির ফরম পূরণের সুযোগ করে দিতে হবে। প্রতিটি উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনে একটি করে বাছাই কমিটি থাকবে। উক্ত কমিটি প্রকৃত ভিক্ষুকদের তালিকা প্রণয়ন করে পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করবে।

বর্তমান সরকার সামাজিক সুরক্ষার আওতায় অনেক দরিদ্র, বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা, প্রতিবন্ধী ইত্যাদি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছেন। আগামী অর্থ বছর থেকে দেশের ১৫০টি উপজেলার সকল দরিদ্র বয়স্ক মানুষ, বিধবা ও স্বামী পরিত্যাক্তা নারী এবং প্রতিবন্ধীদের ভাতার জন্য ১২০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এসব সামজিক সুরক্ষার সুফলভোগীরা আবার ভিক্ষাবৃত্তিও করে থাকে। তাই সামাজিক সুরক্ষার আওতা আরো বাড়িয়ে, স্ব-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা জাতীয় উন্নয়নের জন্য জরুরী।

আওয়ামীলীগ সরকার দেশের আর্থ সামাজিক ও ধর্মীয় উন্নয়নে সবচেয়ে বেশী অবদান রেখেছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতার জন্ম শত বার্ষিকী ও স্বাধীন বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের কয়েকলক্ষ গৃহহীন ও ভূমিহীনকে বাসস্থান তৈরি করে দেওয়ার এক মেঘা ও মহৎ উদ্দ্যোগ নিয়েছেন। এদের অনেকেই সামাজিক সুরক্ষাভোগী এবং একই সাথে ভিক্ষাবৃত্তিও করে থাকে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। অদুর ভবিষ্যতে উন্নত দেশে পরিণত হবে। পদ্মা সেতু সহ বহু মেঘা প্রকল্প দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই বঙ্গবন্ধু অনুমোদিত সংবিধানের ১৫ ও ১৮ অনুচ্ছেদের উক্ত দুটি উপধারা বাস্তবায়নের জন্য পতিতাবৃত্তি ও ভিক্ষাবৃত্তি বেআইনী ঘোষনার মাধ্যমে এদের পুর্নবাসন করে ধর্ম, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী ও তাঁরই প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তীকে মহিমান্বিত করতে পতিতা ও ভিক্ষুকমুক্ত বাংলাদেশ ঘোষনা এখন সময়ে দাবি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এই ক্ষুদ্র প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে অভিজ্ঞরা মনে করেন।

 

লেখক কলামিস্ট:মোঃ আব্দুল মালিক

মোবাইলঃ ০১৭৪৯-৭৫০৫৩৫

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.