রফিক আহমদ::সিলেট নগরীর ঐতিহ্যবাহি কীনব্রিজ এলাকার একটি পরিচিত চিত্র পথ শিশুদের ড্যান্ডি সেবন করার চিত্র। এছাড়া দাম কম ও সহজলভ্য হওয়ায় অন্যান্য কিশোর কিশোরীরাও এই নেশার প্রতি ঝুকঁছে। পলিথিনের ভিতর এক প্রকার আঠা অথবা সলিউশন নিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহন করে শিশুরা। মাদক দ্রবের তালিকায় এই মাদকটি অর্ন্তভক্ত না থাকায় প্রশাসন ও কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। সিলেটের সচেতন মহলের দাবী এই মরন নেশা খুব দ্রুত বন্ধ না করা গেলে সমাজে এই নেশার প্রভাব খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পরবে।
জুতা, কাঠ কিংবা ফোমে ব্যবহৃত আঠা বা সলিউশন পলিথিনে ভরে কিছুক্ষণ পরপর মুখের সামনে নিয়ে শ্বাসের সাথে এ ঝাঁজ টেনে নেয় শিশুরা। মাত্র ৩০টাকায় এক ডিবি ড্যান্ডি যেকোন হাডওয়্যার দোকানে পাওয়া যায়। বাসস্টেশন, রেলস্টেশনসহ জনবহুল এলাকাতেই তা সেবনে মত্ত থাকে তারা। এমনকি নগরীর প্রাণকেন্দ্র, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন বসেই প্রকাশ্যে সেবন শেষে অদ্ভুত এ নেশায় বুদ হয়ে থাকতে দেখা যায় তাদের। জুতা তৈরী ও অন্যান্য কারখানায় আঠা হিসেবে ব্যবহার হয় এই ড্যান্ডি। এর ফলে ব্রেইন ডেমেজ কিংবা প্রাণঘাতি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়াসহ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছে সিলেট নগরীর ছিন্নমূল এসব শিশু-কিশোর।
অপরদিকে নিষেধাজ্ঞা না থাকায় ‘আইকা’ জাতীয় এ ড্যান্ডি গাম শিশু-কিশোরদের কাছে বিক্রি বন্ধে পদক্ষেপ নিতে পারছে না প্রশাসন। ‘ড্যান্ডি’ মাদক দ্রব্যের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত না থাকায় কিছুই করতে পারছে না প্রশাসন।
ড্যান্ডির অদ্ভুদ নেশায় বুদ শিশু-কিশোররা জানায়, ৩০ থেকে ৪০ টাকায় তারা এ গাম কিনে থাকে। ক্ষুধা নিবারণের উদ্দেশ্যে তারা এটি সেবন শুরু করে এক সময় আসক্ত হয়ে যায়। অপরদিকে শিশুদের এ নেশার চাহিদার সুযোগ নেয় এক শ্রেণির হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী। অধিক লাভের আশায় জীবন ধ্বংসকারী এ গামের ডিবি তারা তুলে দেয় শিশু-কিশোরদের হাতে।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা বারের আইনজীবী সমাজকর্মী সামাজিক সংগঠক এডভোকেট ওবায়দুর রহমান ফাহমি বলেন, সামাজিক ও পারিবারিক বিচ্ছিন্নতাই এসব শিশুদের ড্যান্ডি আসক্ত করে তুলছে। এদের সরকারি ও বেসরকারী সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পুনর্বাসন করতে হবে এবং খাদ্য ও বাসস্থানের নিরাপত্তা দিতে হবে। শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাদিক বলছেন, ড্যান্ডি আসক্তির ফলে অধিক স্বাস্থ ঝুকিতে রয়েছে এসব ছিন্নমূল শিশু-কিশোর। ড্যান্ডি বা আইকা সেবন করলে তাদের একটা ঝিমুনি ও ঘুম ঘুম ভাব হয়।
যেহেতু এটা সরাসরি ফুসফুসের মধ্যে যাচ্ছে, সেহেতু নিউমোনিয়া, ক্যান্সারও হতে পারে। এছাড়াও দীর্ঘক্ষণ শ্বাস নেয়ার কারণে ধীরে ধীরে ব্রেন অকেজো হতে পারে। তবে শিশু-কিশোরদের এ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা লাগবে।
এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। শিশুদের এ প্রবণতা রুখতে হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ীদের সচেতনতা, বিত্তবান মানুষ ও বিভিন্ন সংগঠনের পদক্ষেপ প্রয়োজন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ মানজুরুল ইসলাম বলেন, ড্যান্ডির ভিতরে একধরনের মাদকের উপাদান রয়েছে।