বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:: নবীগঞ্জের আনাছে কানাচে ইদানীং ঝাঁপটা পার্টির আতংক সাধারণ মানুষ। সেকেন্টের মধ্যেই মোটরসাইকেল যোগে দামী স্মার্টফোন হাতিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি কার, অটোরিক্সা, সিএনজি, মোটরসাইকেল ছিনতাই চক্র বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। এসব ঘটনার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তৎপর হয়ে ওঠে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে দুইজনকে আটক করে হবিগঞ্জ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়- গত সপ্তাহ খানেক ধরে ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার ব্যস্ততম জনবহুল আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে একটি চক্র নিল রংয়ের মোটরসাইকেলযোগে পথচারী, ব্যবসায়ী ও স্কুল পড়ুয়া ছাত্রদের চলতি পথে কারো হাত থেকে অথবা কারো শার্টের সামনের পকেট থেকে কয়েকটি দামী স্মার্টফোন নিয়ে পালিয়ে যায়! এ ঘটনায় ঐ এলাকায় ঝাঁপটা পাঠির আতংকে সর্ব সাধারণ।
মৌলভীবাজার জেলার ঘাটটিয়া গ্রামের ছাদ মিয়ার পুত্র সোহেল মিয়া (৪৬)। সে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আউশকান্দি হীরাগঞ্জ পূর্ব বাজারে সোহেল মটরস নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা করে আসছে। গত (৫ অক্টোবর) বুধবার প্রতিদিনের ন্যায় রাত ১১টার দিকে ঘুমিয়ে সে পড়ে। পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠে দেখে তার পুরনো ক্রয়কৃত ও মেরামতকৃত সাদা কারটি নেই!
এ ব্যাপারে সোহেল মিয়া সাথে কথা হলে সে বলে, ’ঘুম থেকে ওঠে দরজা খোলে আমার গাড়িটি না দেখে আমি হতাশ হয়ে পড়ি। আমি মেকানিক্সের কাজের ফাঁকে নষ্ট গাড়ি ক্রয় করে নিজে মেরামত করে বিক্রয় করি এবং ড্রাইভিং ও শিখাই। হারিয়ে যাওয়া গাড়িটি আমি অনেক কষ্টে দামী মালামাল লাগিয়ে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে মেরামত করেছি। গাড়িটির খোঁজে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খবর নিয়ে না পেয়ে অবশেষে নবীগঞ্জ থানায় গত (৬ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার একটি সাধারণ ডায়রী করি। এর পরদিন গত (৬ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার আউশকান্দি হীরাগঞ্জ মধ্যে বাজারে অবস্থিত স্টার ইলেক্ট্রনিক এর মালিক দেওতৈল গ্রামের জুবায়ের আহমেদ প্রতিদিনের ন্যায় রাত ১১টার দিকে তার দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার পথিমধ্যে আউশকান্দি মধ্যে বাজারে আসা মাত্রই নিল রংয়ের একটি মোটরসাইকেল যোগে দুইজন আরোহী হঠাৎ এসে তার হাতে থাকা ১টি স্মার্টফোন ঝাঁপটা মেরে নিয়ে পালিয়ে যায়। এর পরদিন (৭ অক্টোবর) শুক্রবার মিনাজপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ বাইসাইকেল যোগে বিকাল বেলা তার বাড়ি থেকে সৈয়দপুর বাজার যাওয়ার পথিমধ্যে জালালপুর ইট ভাটার সামনে আসা মাত্রই একটি মোটরসাইকেল তার বাইসাইকেলকে চাপা দিয়ে তার শার্টের সামনের পকেটে থাকা ১টি স্মার্ট ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। এছাড়া ওইদিন আউশকান্দি বাজার থেকে আরও ৪ জনের হাত থেকে ৪টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ওই চক্রটি।
আউশকান্দি ইউনিয়নের মিঠাপুর আর্দশ গেইটের সামনে মিঠাপুর গ্রামের শাহাবুদ্দিন মিয়ার পুত্র খালেদ মিয়া দোকানের সামনে দাড়ানো অবস্থায় মোটরসাইকেল যোগে আসা চক্রটি তার হাতে থেকে ১টি দামী স্মার্টফোন ঝাঁপটা মেরে নিয়ে পালিয়ে যায়। একই গ্রামের রবিন্দ্র দেব নাথের পুত্র পংক দেবনাথের হাতে থেকে একই কায়দায় আরেকটি স্মার্টফোন নিয়ে যায়। আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজার থেকে দুইজন ক্রেতার হাত থেকেও একই কায়দায় ঐ চক্রটি আরো ২টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এই ঝাঁপটা পার্টি কর্তৃক মোবাইল ছিনতাই ও গাড়ি চুরির ঘটনায় বাজারের বিভিন্ন চা-স্টল সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আলোচনার পাশাপাশি নানা আতংক বিরাজ করছে। অনেক অভিভাবকরাও তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যাওয়া-আসা নিয়েও নানান দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা এবং সবাইকে সচেতন থাকার পাশাপাশি পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগীতার দাবী করেন সচেতন মহলের লোলজন। এসব ঘটনার খবরে তৎপরতা শুরু করেছে থানা পুলিশ। এতে গত রবিবার (৯ অক্টোবর) অভিযান চালিয়ে তিমিরপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র সিতু মিয়া (২২) ও ফিরোজ মিয়া (২১) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই স্বপন চন্দ্র দাশ বলেন- ঝাঁপটা পার্টি চক্রের সাথে জড়িত দুইজনকে আটক করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরাধমুক্ত নবীগঞ্জকে গড়ে তুলতে আমরা দিন- রাত ২৪ ঘন্টাই তৎপর রয়েছি। যেকোন অপরাধের তথ্য পাওয়া মাত্রই আমরা তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নিচ্ছি। গত সপ্তাহেও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ৩জন শীর্ষ ডাকাতকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।