সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::সুনামগঞ্জের ৩ টি উপজেলার প্রায় ১৫ টি স্পটে চলছে অবৈধ সহশ্রাধিক ক্র্যাশার মেশিনের তান্ডব, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়ে এই ক্রাশার মেশিন চালিয়ে গুটিকয়েকজন লোক লক্ষ কোটি টাকার মালিক বনলে ও সরকারের খাস জায়গা দখল করে প্রতিনিয়ত এমন মোনাফা নিলে ভোগান্তীতে স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে আশপাশের বাড়িঘরে কম্পন,নদীভাঙ্গনের শিকার
লোকজন,স্কুলগামি ছেলেমেয়ে ও শ্রমিকরা সর্দি,কাশিসহ নানান রোগবালাইয়ে আক্রান্ত
হচ্ছেন। সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। পরিবেশের ছাড়পত্র নেই, নেই প্রশাসনের
অনুমতি, অবৈধভাবে সুনামগঞ্জের সুরমা ও যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী ১৫ টি স্পটে চলছে সহশ্রাধিক পাথর ভাঙ্গার অবৈধ ক্র্যাশার মেশিনের তান্ডব। মেশিনে পাথর ভাঙ্গার প্রকট শব্দ হওয়ার
কারনে ঘুমাতে পারেন না স্থানীয় বাসিন্দারা, পড়ালেখার বিঘœ ঘটছে শিক্ষার্থীদের,ভেঙ্গে
যাচ্ছে আশপাশের বসতভিটা। পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রভাবশালী চক্র ক্র্যাশার মেশিন
চালিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব।
সরেজমিনে ঘুরে এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়,জেলার সীমান্তবর্তী
বড়ছাড়া ও বাগলী এলাকা থেকে চুনাপাথর নৌকা যোগে নিয়ে আসা হয় জেলার তাহিরপুর
উপজেলার ফাজিলপুর, মিয়ারচড় ও লাওড়েরগড়, আনোয়ারপুর। জামালগঞ্জ উপজেলার লালপুর, সোনাপুর,চানপুর, গজারিয়া, হোসেনপুর, মমিনপুর, ছাতক উপজেলা ২ টি স্পটে। এসব চুনাপাথর ক্র্যাশারমেশিন দিয়ে ভেঙ্গে তৃফোর সাইজ, ১৬ মিনি সাইজ,হাফ ইঞ্চি, ১৬ মিনি, পাইভটানসহ বিভিন্ন সাইজ করে ঢাকা, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়।
অবৈধভাবে ক্র্যাশার পরিচালনা করছেন জামালগঞ্জের চানঁপুরের আমিনুল ইসলাম,মহিতোষ পাল,কাওসার, বিনয় পাল,রাজনপাল,উকিল, তাহিরপুর উপজেলার বালিজুড়ি গ্রামের তারা মিয়া, লুৎফুর,রুবেল, কামরুল, সামছুল, দুলা মিয়া, মিয়ারচড় এলাকায় আব্দুল গনি, আব্দুস সালাম,
কাওসার,সুমন, সেন্টুসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেশিন যখন চালানো হয়, তখন বাজারসহ আশপাশ এলাকায় কাঁপুনি শুরু হয়। যখন তখন মেশিন চালানোর কারনে বিকট শব্দ হয়। আমরা কষ্টে আছি,রাতে ঘুমানো যায় না এবং সন্তানদের পড়ালোখার সমস্যা হয়। অপর এক ব্যবসায়ী জানান, যতগুলো ক্র্যাশার মেশিন চলছে সব অবৈধ। এদের পরিবেশের ছাড়পত্র নেই, সরকারী কোন অনুমোদন নেই।
প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ক্র্যাশার মেশিনের অবিরাম তান্ডব চলছে। আমি
এগুলো বন্ধের দাবী জানাই।
এ ব্যাপারে পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)’র সুনামগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক জসিম উদ্দিন বলেন,
নদীর তীরে ক্র্যশার মেশিন স্থাপন করে পাথর ভাঙ্গা সম্পুর্ন অবৈধ। আমরা সার্ভে করেছি, এদের কোন বৈধতা নেই, অচিরেই এদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, জেলার ছাতক,জামালঞ্জ ও
তাহিরপুরে সহশ্রাধিক ক্র্যাশার মেশিন চলছে। এগুলোর কোন অনুমতি নেই,পরিবেশেরও ছাড়পত্র নেই। এসব ক্র্যাশার চালানোর জন্য নিদিষ্ট একটি ক্রাশান জোন এলাকা নির্ধারন করে পরিচালনার
জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি।