সিলেটপোস্ট রিপোর্ট :প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে করায় মেয়ের নয়া জামাইকে পিস্তল ধরিয়ে দিয়ে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর অপচেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (শ্বশুর) আবদুল কাদিরের বিরুদ্ধে। আর একাজে তাকে সহযোগিতা করেছেন যাত্রাবাড়ী থানার এসআই জামান ও জসিম। এসআই আবদুল কাদের মুগদা থানায় কর্মরত রয়েছেন। মেয়ে মরিয়াম এর স্বামী ইমরানকে ডেকে নিয়ে হাতে পিস্তল দিয়ে ছবি তোলে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেছেন ইমরান। একইসঙ্গে তার (ইমরান) দুই বোনকে ডেকে নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগও পাওয়া গেছে। গত তিন ডিসেম্বর বেলা ১২টায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী থানার ১৯ নম্বর উত্তর কুতুবখালীর বাসিন্দা মো: ইমরান হোসেন মুগদা থানার এসআই কাদিরের মেয়ে মারিয়ামকে গত ৪ অক্টোবর প্রেম করে বিয়ে করেন। এই বিয়েতে মেয়ের পরিবার রাজি না থাকায় মেয়ের মা হাবিবা সুলতানা গত সাত অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর ১৬।
এর আগে গত চার অক্টোবর মরিয়ামের স্বামী ইমরানের বড় ভাই টুটুলকে পুলিশ ধরে নিয়ে থানায় আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে জেল হাজতে পাঠায়। ১১ অক্টোবর ইমরান ও তার স্ত্রী মরিয়াম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন পাওয়ার পরে ইমরান যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনী শংকর কর, এসআই জসিম ও এসআই জামান এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তারা ইমরানের কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় গত ৩ ডিসেম্বর বেলা ১২টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার এসআই জামান ও মুগদা থানার এসআই কাদিরসহ ৬/৭ জন অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে উত্তর কুতুবখালির একটি বাড়ির ৬তলায় নিয়ে আটকের পর তাকে মারধর করে। পরে একপর্যায়ে তারা ইমরানের হাতে ১টি পিস্তল দিয়ে ছবি তোলেন এবং ৩/৪টি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন।ইমরানের বড় বোন তাসমিনা অভিযোগ করে বলেন, আমাকে ও আমার ছোট বোন শিলাকে মোবাইল ফোনে উক্ত ভবনের ৬তলায় ডেকে নেওয়া হয়। পরে সেখানে যাত্রাবাড়ী থানার এসআই জসিম, এসআই জামান ও এসআই কাদির তদেরকে রুমে আটক করে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে।একপর্যায়ে আমাদের চিৎকারে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসলে এসআই জামান বলেন, ঘটনাটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলে জানাজানি হয়েছে। তাই এদেরকে এখন ছাড়া যাবেনা। এরপর তার দুই বোনকে পুলিশের গাড়ি যোগে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তারা ২৮ হাজার টাকা দিয়ে থানা থেকে ছাড়া পান।ইমরান অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হাতে অস্ত্র দিয়ে তোলা ছবির ভিত্তিতে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয়। এ অবস্থায় তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান ইমরান।
এ ব্যাপারে যাত্রাবাড়ী থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) জসিম শীর্ষ নিউজকে বলেন, ইমরানের বড় ভাই ধর্ষণ মামলার আসামি, তার বোনেরা মাদক ব্যবসায়ী, আর তার নামে নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি মামলা রয়েছে। মামলার আসামিরা জামিনে রয়েছেন। আর ওই ছেলেটি একটি অপ্রাপ্ত মেয়েকে বিয়ে করেছেন। আমি সেখানে যাইনি এবং তাদের কাছ থেকে কোন কিছু আদায় করা হয়নি। বিষয়টি এসআই নুরুজ্জামান দেখছেন। পরে এসআই নুরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।