এ বিষয়ে তিনি সোমবার (১২ জুন) সিলেট সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এই অভিযোগপত্রে আনোয়ারুজ্জামানরে প্রার্থিতা বাতিলেরও আবেদন করেছেন সাজু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ কে এম আবু হুরায়রা (সাজু) যুবলীগ নেতা। তিনি সিলেট মহানগর ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র এক নেতার গ্রুপ করেন।  ‘Akm Shaju (shaju)’ নামের তার ফেসবুক আইডিতে উল্লেখ- তিনি সিলেট মহানগর যুবলীগের যুগ্ন-আহবায়ক (১ম) এই ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। এছাড়াও সাজু ছিলেন মহানগর ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সদ্স্য।

জানা গেছে, সোমবার বিকেলে সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদেরের কাছে সাজু এ অভিযোগ জমা দেন।

সাজু তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর হলফনামায় জন্মতারিখ ১৯৭০ সালের ১ জুলাই এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ (সম্মান) উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনি ১৯৮৮ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৮৪২০৮ এবং শিক্ষাবর্ষ ১৯৮৬-১৯৮৭। রেজিস্ট্রেশন, প্রবেশপত্র ও সনদপত্র অনুযায়ী জন্মতারিখ ১৯৭২ সালের ১ জুলাই।

অভিযোগে আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর জন্মতারিখ পরিবর্তন করার জন্য কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড বরাবর আবেদন করেছিলেন, যা বোর্ড কর্তৃপক্ষ নামঞ্জুর করে। এ ছাড়া তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে ১৯৮৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১৯৯০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই বাংলাদেশ ইয়ুথ প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাজ্যে যান এবং সেখানে পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশে কোনো প্রকার পড়াশোনা কিংবা পরীক্ষায় অংশ নেননি।

এছাড়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পাসপোর্টের জন্মতারিখের সঙ্গে এসএসসির সনদে উল্লেখিত জন্মতারিখে গড়মিল আছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এ কে এম আবু হুরায়রা সাজু লিখিত অভিযোগে দাবি করেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী হলফনামায় ভুল জন্মতারিখ উল্লেখ করে এবং সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দাখিল করে নির্বাচন বিধিমালা ২০১০-এর বিধি ১৪-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন। তিনি দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ধারা ১৮১ অনুযায়ী ফৌজদারি আইনে অপরাধ করেছেন, যার সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছরের কারাদণ্ডসহ জরিমানা। লিখিত অভিযোগে হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়া এবং জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিলের পাশাপাশি ফৌজদারি আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

এদিকে, আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতা হয়েও কেন দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে এটি করলেন এবং মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের আগে কেন এ অভিযোগ করলেন না- এসব বিষয়ে জানতে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা সাজুর মুঠোফোন নাম্বারে মঙ্গলবার রাতে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাই এ ব্যাপারে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়ে মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি ভুয়া ও মিথ্যা একটি অভিযোগ। এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে। হলফনামায় সঠিক তথ্যই দিয়েছি।’

এ প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বলেন, ‘মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের আগে অভিযোগ পেলে তথ্য যাচাই-বাছাই করা যেত। এখন আমাদের আর কিছুই করার নেই।’