উজ্জ্বল দাশ, ওসমানীনগর(সিলেট)::দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলার প্রাণকেন্দ্র গোয়ালাবাজার সংলগ্ন পূর্ব দিকে নির্মিত হয়েছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এতে জনমনে বিরাজ করছে উৎসাহ ও উদ্দিপনা।২০১৪ সালের ২ জুন নবগঠিত ওসমানীনগর উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের বিষয়টি প্রায় উপেক্ষিতই ছিল।
এদিকে, কাছাকাছি কোন হাসপাতাল না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত ছিলেন উপজেলার প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সিলেট শহরে গিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিতে হতো। জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই যাত্রাপথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তাই সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকার। সে লক্ষ্যে ২০১৮ সালে প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে গোয়ালাবাজারের কালাসারা মৌজায় ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। প্রায় ২৬ কোটি ৯৯ লাখ ৫১ হাজার ৬৬০ টাকা ব্যয়ে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের দায়িত্ব পায় মেসার্স পোদ্দার এন্টার প্রাইজ ও রুপালী কন্সট্রাকশন। ২০২০ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন নির্মাণ শুরু হলেও চলতি বছরের জুনের দিকে কাজ শেষ হয়। বর্তমানে বিদ্যুৎ ও সাজ-সজ্জার কাজ চলছে।
ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো: মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ওসমানীনগর উপজেলা সিলেটের অন্যতম বৃহৎ উপজেলা। এর লোকসংখ্যা দুই লক্ষেরও অধিক। কিন্তু তাদের স্বাস্থ্য সেবায় উপজেলায় মানসম্মত সরকারি বা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান নেই। এতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠিসহ আর্থিকভাবে অসচ্ছলদের মারাত্মক ভোগান্তি হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মাণ হলে উপজেলার সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব।
প্রকল্পের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মিরাজ হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে হাসপাতালটির কাজ ৯৮ ভাগ শেষ হয়েছে। আশা করছি, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে আমরা কমপ্লেক্সটি সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে সমঝে দিতে পারবো।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, মেডিসিন, সার্জারী, গাইনী, অর্থোপেডিক্স, নাক-কান-গলা, চক্ষু, মা ও শিশু এই ৭টি বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, জরুরী সেবাসহ আধুনিক সবকিছুই থাকবে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অক্টোবরের মধ্যে কমপ্লেক্সটি শতভাগ প্রস্তুত হয়ে গেলে সরকার থেকে উদ্বোধনের দিনক্ষণ চুড়ান্ত করা হবে।