সিলেটপোস্ট ডেস্ক::এই দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি এসোসিয়েশন ,সিলেট শাখার উদ্যোগে ,ুক্রবার সকাল সাড়ে দশটায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এক আনন্দ র্যালী ও শোভাযাত্রা বের করা হয় এবং র্যালী পরবর্তী শেষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে । জালালাবাদ রোটারি হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চীফ ফিজিওথেরাপিষ্ট মোঃ জহিরুল ইসলাম এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জনাবা সৈয়দা জেবুন্নেছা হক ।
বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন সিলেট জেলা শাখার সম্মানিত সদস্যবৃন্দ ও ফিজিওথেরাপি এলামনাই এসোসিয়েশন, আইএইচটি এর সম্মানিত সদস্যবৃন্দ ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ রোটারি হাসপাতালের কনসালটেন্ট ফিজিওথেরাপিস্ট ডাঃ আল মামুন উর রশীদ,নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চীফ ফিজিওথেরাপিস্ট ডাঃ নিসর্গ দাস অন্তু, মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের ফিজিওথেরাপি অফিসার মরিয়ম আক্তার ,আল হারামাইন হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ফিজিওথেরাপিস্ট ফিরোজা অজরা, ফিরোজা অজরা, এসসিপিআর শ্রীমঙ্গল এর ক্লিনিক্যাল ফিজিওথেরাপিস্ট জুম্মান মালাকার,ফিজিওথেরাপি এলামনাই এসোসিয়েশন, আই এইচ টির সভাপতি মাহফুজুর রহমান মাহিদঅন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোঃ আশিকুর রহমান, আমিনুর রহমান, মারজিয়া আক্তার,মোঃ তারেকুল ইসলাম, মোঃ আবু তাহের ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন প্রতিটা মানুষই জীবনে কোন না কোন সময় ব্যথায় আক্রান্ত হোন ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে পড়েন । এইসব ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপিই একমাত্র নিরাপদ ও সম্পূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন চিকিৎসা যেটা মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য করে। সরকার ফিজিওথেরাপিস্টদের যথাযথ মূল্যায়ন করবে বলে তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন।
এছাড়া উপস্থিত বক্তাগণ তাদের বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের সিনিয়র নাগরিকদের মধ্যে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন বাত-ব্যথায় আক্রান্ত এবং তাদের চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি প্রধান ভূমিকা পালন করে।
বাত-ব্যথা ও অস্থি সন্ধির প্রদাহ/অস্টিওআর্থারাইটিস একটি জয়েন্ট এর প্রদাহ জনিত সমস্যা এবং এটি বয়স্ক মানুষের বেশি হয়। শরীরের সব জয়েন্টে এই সমস্যা হতে পারে এবং সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে হাটুতে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে পুরুষের চেয়ে মহিলাদের বেশি হয়। এছাড়া বাড়তি ওজন,ডায়াবেটিস, হরমোনের সমস্যা, জিনগত সমস্যা ও আঘাতের কারনেও এই রোগ হতে পারে।
যা নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন,নিয়মিত ব্যায়াম চর্চা ও সঠিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় করা সম্ভব। এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হলে ফিজিওথেরাপিস্টদের শরণাপন্ন হয়ে সুপরামর্শ ও সুচিকিৎসা গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে দিবসটির প্রাতিপাদ্যকে সামনেরেখে আরটিএম মেডিকেল টেকনোলজি ইনইষ্টিটিউট এর বিএসসি ইন ফিজিওথেরাপি অনুষদ বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস নানা কর্মসুচি পালন করেছে। কর্মসুচির মধ্যে রয়েছে বেলা সাড়ে ১১ টায় নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় বণার্ঢ্য র্যালী,ক্যোম্পাসে আলোচনা সভা ও ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান।
আরটিএম মেডিকেল টেকনোলজি ইনইষ্টিটিউট এর শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেনের পরিচালনায় ব্যালী পরবর্তি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, আরটিএম মেডিকেল টেকনোলজি ইনইষ্টিটিউট এর অধ্যক্ষ ডাঃ এমএম ফরিদুল ইসলাম। বিএসসি ইন ফিজিওথেরাপি অনুষদ এর কো-অডিনেটর ডাঃ সুব্রত কুমার সিনহা(পিটি), বক্তব্য রাখেন বিএসসি ইন র্যাবরেটারি মেডিসিন অনুষদের কোর্স কো-অডিনেটর আলমগীর হোসেন আলম, লেকচারার ডাঃ মাহমুদা রহমান পিংকি, ডাঃ মুক্তি সরকার(পিটি)। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আনন্দ সরকার, মোসারফ হোসেন, মহরম আলী, মাহবুব উদ্দিন প্রমুখ।
বক্তাগণ আরো বলেন বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী ৫২৮ মিলিয়ন মানুষ এই রুগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবন্ধী হচ্ছে অথবা প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে পড়ছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য ফিজিওথেরাপিস্ট ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফিজিওথেরাপি) দের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ,কিন্তু দুঃখের বিষয় সরকার এই ক্ষেত্রে ডাক্তার ও নার্সদের মত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত গুরুত্ব দিচ্ছে না বিধায় দিন যত যাচ্ছে মানুষের ভোগান্তি তত বাড়ছে। ১৯৭২ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে এই পেশা বিকশিত হয় । বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসডিজি গোল(SDG Goal) -২০৩০ অর্জন ও প্রতিবন্ধী মুক্ত সমাজ ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা জনগণের সুস্থ ,সবল ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের জন্য অনতিবিলম্বে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপি টেকনোলজিস্ট নিয়োগ প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানান এবং বাংলাদেশ রিহেবিলিটেশন কাউন্সিল আইন ২০১৮ অতি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবী করেন।