সিলেটপোস্ট ডেস্ক::বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর শাখার ডাকে নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতাকামি ফিলিস্তিনিদের উপর ইহুদিবাদী ঈসরাইলী বাহিনীর বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) বাদ জুমআ নগরীর ঐতিহাসিক সিলেট কোর্ট পয়েন্টে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ মাসরুর আহমদ এবং ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ফরিদ আহমদ।
মহানগর সেক্রেটারি মাও: সিরাজুল ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি মাও: মুফতি আব্দুর রহমান শাহজাহান, প্রচার সম্পাদক মাও: মাছুম আহমদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি মাও: হাবীব আহমদ শিহাব।
জুমআর নামাজের পর থেকেই সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ইমাম সাহেবদের নেতৃত্বে এবং বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সামাজিক রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে সিলেটের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের একের পর এক বিশাল বিশাল মিছিল কোর্ট পয়েন্টে জমা হতে থাকে। এমনকি বিকাল ৩ টা সমাবেশ শেষ হওয়া পর্যন্ত অনেক মিছিল এসে শরিক হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, যুগ যুগ ধরে ইসরাইলের ইহুদীরা ফিলিস্তিন দখল করে আছে। এবং সেখানে নিরিহ ফিলিস্তিনিদের উপর নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে। অথচ বিশ্বের কোন মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা কোন কথা বলতে দেখা যায়নি। কিন্তু যখনই ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পক্ষে কোন আত্মরক্ষামুলক কোন কাজ করা হয় তখনই ইহুদীদের মিত্র আমেরিকা ও তাদের দালাল পশ্চিমা দেশ গুলো মানবাধিকারের দুহাই তুলে সন্ত্রাসী ইহুদীদের আরো উস্কে দেয়। যার ফলে তারা ফিলিস্তিনের নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ নির্বিচারে সবাইকে হত্যা করে। আহত, অসুস্থ রোগীদের পর্যন্ত হাসপাতালে বোমা মেরে হত্যা করছে। ফিলিস্তিনে অবস্থিত মুসলমানদের পবিত্র স্থান মসজিদুল আকসা এর ঢুকেও মুসলমানদেরকে হত্যা করতেছে। এবং মসজিদকে ধ্বংস করছে। বক্তারা বলেন এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ সহ ইজরায়েলের মিত্র সকল রাষ্ট্রকে চিন্তা করতে হবে এরকম বর্বর গণহত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘন যুদ্ধাপরাধে মত ঘৃণিত কাজের নগ্ন পক্ষাবলম্বন করে তারা নিজেদেরকে কি মানবতার শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করছেন? কেন তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলছেন না? এ সকল অপরাধ মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণহত্যার দায় কি তারা নিবেন? তারা যদি সত্যিকার অর্থে মানবাধিকার এবং মানবতার পক্ষের বলে নিজেদেরকে মনে করেন তাহলে তাদের উচিত ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার জন্য এই অত্যাচার থেকে মুক্ত করার জন্য জাতিসংঘের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করা। মসজিদে আকসাকে নিরাপদ ভাবে মুসলমানদের জন্য ছেড়ে দেওয়া। তা না হলে মুসলমান সকল রাষ্ট্রগুলোকে একজোট হয়ে মানবতার পক্ষে মজলুমের পক্ষে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা উদ্ধারে যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাব বলেন, ফিলিস্তিনের গাজার অভ্যন্তরে নিরীহ নিরস্র জনগণকে দিনের পর দিন অবরুদ্ধ করে রাখা হচ্ছে। নারী ও শিশুদেরকে নির্যাতন করা হচ্ছে। গর্ভবতী মায়েদের বাচ্চা কে নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে। এ সকল দৃশ্য সহ্য করার মতো নয়। মুসমিম রাষ্ট্র গুলোর প্রতিনিধিত্ব কারী সংগঠন ও.আই.সির নিকট আমরা আবেদন করছি, আপনারা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে সাথে নিয়ে ফিলিস্তিনের যুদ্ধ বন্ধ করার এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ঘোষণা করার জন্য জাতিসংঘের সাথে আলোচনা করুন, এবং চাপ সৃষ্টি করুন। আমরা বলতে চাই জাতিসংঘ বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষী বাহিনী প্রেরণ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। অথচ ফিলিস্তিনের এই মানবাধিকার লঙ্ঘন, যুদ্ধাপরাধ কি জাতিসংঘের চোখে পড়ে না? এখানে কি মানুষ বসবাস করে না? তাদের শান্তি রক্ষার জন্য তাদের জীবন রক্ষার জন্য সেখানে কি কোন শান্তি রক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রয়োজন তারা মনে করে না। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সকল দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে আমরা অনুরোধ করবো, আহত ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, ঔষুধ, এবং রসদ প্রেরণের ব্যবস্থা করুন। এবং আমরা সরকারকে আশ্বস্ত করতে চাই, বাংলাদেশের মুসলমানগন নির্যাতিত ফিলিস্তিনের পক্ষে সরকার ব্যবস্থা করলে, সরকার আমাদেরকে সুযোগ দিলে যেকোনো সময় ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করার জন্য মুসলমানদের প্রথম কিবলাকে রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশের মুসলমানগন জিহাদ করে জীবন দিতে প্রস্তুত। তিনি আরো বলেন সকল মুসলমানগণ ইসরাইলি সন্ত্রাসীদের পণ্য বর্জন করতে হবে। এ সকল পণ্য বিক্রি করে বিশ্বের মার্কেট থেকে মুনাফা অর্জন করে এই টাকা দিয়েই গারা মুসলমানদেরকে নির্যাতন ও হত্যা করছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা এডভোকেট শাহিনুর পাশা চৌধুরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, জমিয়ত সিলেট জেলা উত্তরের সভাপতি শায়খুল হাদিস আতাউর রহমান কোম্পানীগঞ্জী, সিলেট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোস্তাক আহমদ খান, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাক্তার মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, জাতীয় ইমাম সমিতির সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা এহসান উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন নেতা সাবেক মেয়র পদপ্রার্থী মাওলানা এডভোকেট মাহমুদুল হাসান, সিলেট মহানগর জমিয়ত সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, ইমাম সমিতি মহানগর সহ সভাপতি মাওলানা শহীদ আহমদ, মাওলানা শাহ আশরাফ আলী মিয়াজানী,মাও:এখলাসুর রহমান, মাওলানা আব্দুস সালাম, মাওলানা নুর আহমদ কাসেমী, মাওলানা আহমদ হোসেন, ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মুহিত জাবেদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আফসার আজিজ, সিলেট কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা কামাল আহমদ, কুদরতউল্লাহ জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা মিফতাহ উদ্দিন, শাহ আবু তুরাব মসজিদের ইমাম মাওলানা মুফতি বেলাল আহমদ, বাইতুল আমান জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি রশিদ আহমদ, সিলেট মহানগর খেলাফত মজলিস সভাপতি তাজুল ইসলাম হাসান, সিলেট কল্যাণ সংস্থার সভাপতি এহসানুল হক তাহের, শাহচট মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা জামাল উদ্দিন আজমি, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সিলেট বিভাগের সভাপতি, ১১ নং ওয়ার্ড লামাপাড়া মসজিদের মুতাওয়াল্লী, ১০ নং ওয়ার্ড এর মুতাওয়াল্লী, ইমাম সমিতি মহানগর নেতা হাফেজ মাওলানা আব্দুস সামাদ, হাফিজ মাওলানা ছুহাইব আহমদ, মাওলানা আব্দুর রহমান শাহজাহান, মাওলানা আবিদ হাসান, ডক্টর মোতাহের হুসেন, খতিব আহমদ কবির খলিল, মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মিসবাহ উদ্দিন, মাওলানা শুয়াইবুর রহমান, হাফেজ মাওলানা আব্দুল আহাদ, মুফতি আজমল হোসেন, মাওলানা লিয়াকত হোসাইন, মাওলানা জরিফ উদ্দিন, মাওলানা মুফতি ইলিয়াস, মুফতি কামাল আহমদ, মাওলানা রায়হান আহমদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে, জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগরী একই সাথে সিলেট নগরীর প্রবেশ মুখে প্রতিটি পয়েন্টে আজ বাদ জুমআ’ বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিলের কর্মসূচি প্রদান করে। সেই লক্ষ্যে সিলেট মহানগর টুকের বাজার তেমুখী পয়েন্ট, মদিনা মার্কেট পয়েন্ট,চৌখেদিখী, শাহপরান, মেজরটিলা, চন্ডীরপুল, বাইপাস পয়েন্ট, কুচাই পয়েন্ট সহ প্রায় দশটি পয়েন্টে জাতীয় ইমাম সমিতির স্থানীয় ওয়ার্ডের দায়িত্বশীলদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
পঠিত : 57