সিলেটপোস্ট ডেস্ক::সম্প্রতি একটি গোলটেবিল বৈঠকে সমশের মবিন চৌধুরী মিথ্যাচার করেছেন বলে দাবি করেছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী।
আজ শনিবার দুপুরে সিলেট নগরীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।
ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘সমশের মবিন আমার ও স্থানীয় বিএনপি সম্পর্কে নানা বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন। তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ফোনে কিংবা সরাসরি আমার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। কিন্তু গোলটেবিল বৈঠকে তিনি চরম মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে আমার সাথে ফোনালাপের বিষয়ের অবতারণা করেছেন। আমি নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে এই বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।’
সমশের মবিন চৌধুরীকে দলছুট, নীতিহীন এবং পথভ্রষ্ট রাজনীতিবিদ আখ্যা দিয়ে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘রাজনীতিতে আমার পথচলা তাঁর মতো ডিগবাজির মাধ্যমে নয়। আমি জাতীয়তাবাদী দলের একজন নিবেদিত কর্মী। দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল থেকে রাজনীতি করে আসছি। দলে ত্যাগ ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আমাকে সিলেট-৬ আসনে (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
কিন্তু বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের কারচুপি এবং দিনের ভোট রাতে করে ফেলার মাধ্যমে আমার জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়।’
সমশের মবিন চৌধুরীর বর্তমান কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘তিনি এক সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। কিন্তু দলের ক্রান্তি লগ্নে সরকারের দালালি করার উদ্দেশে রাজনীতি থেকে অবসর নেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিকল্প ধারায় যোগ দিয়ে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার আসনে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষ ঘৃণাভরে তাকে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি ভোট পান মাত্র ১৯১টি। এরপর দীর্ঘদিন ঘাপটি মেরে বসে থাকেন। গণতন্ত্রকামী সকল রাজনৈতিক দল যখন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে ঠিক তখনই আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাত করার অপতৎপরতা শুরু করেছেন সমশের মবিন চৌধুরী। সরকারের ক্রীড়নক হয়ে কথিত একটি কিংস পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে আবারো সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবার খায়েস নিয়ে নানা কুটচাল ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন। যার ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ওই গোলটেবিল বৈঠকে স্থানীয় বিএনপি ও আমার সম্পর্কে চরম মিথ্যাচার করেন। আমি মনে করি তার এই মিথ্যাচারের মূলে রয়েছে আমার জনপ্রিয়তা নষ্ট করা। কিন্তু তিনি জানেন না যে, স্থানীয় বিএনপি ও তার প্রার্থীর জনপ্রিয়তাকে এভাবে মিথ্যাচরের মাধ্যমে নষ্ট করা সম্ভব নয়। তার এহেন আচরণ তাকেই আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে।
সিলেট-৬ আসনে দলের এবং নিজের তৎপরতা তুলে ধরে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সাংগঠনিকভাবে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে বিএনপি অনেক শক্তিশালী। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সকল কর্মসূচি এই দুই উপজেলায় সফলভাবে পালন করা হচ্ছে। অথচ সরকারের দালালি করতে নেমে সমশের মবিন তা দেখেও না দেখার ভান করছেন। তার এই ন্যাক্কারজনক ভূমিকার প্রতিবাদে স্থানীয় বিএনপি সম্প্রতি পৃথকভাবে মিছিল সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই দুই উপজেলায় তাকে অবা িত ঘোষণা করে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়েছে। শুধু তাই নয়; ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তার কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে। আমরা স্থানীয় বিএনপির প্রতিবাদ ও তাদের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে সুচিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সরকারেকে মনে রাখতে হবে, খালেদা জিয়ার কিছু হলে তাদেরকেই সকল দায় বহন করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক উদ্দিন আশিক, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, বিয়ানীবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রুমেল, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জুয়েল, বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুর রহমান, গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি নোমান উদ্দিন মুরাদ, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জান উজ্জ্বল, গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মামুন আহমদ রিপন, পৌর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ মুন্না প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।