সিলেটপোস্ট ডেস্ক::প্রকৃতিতে এখন ঋতুরানী শরৎ। ভাদ্র ও আশ্বিন দুই মাস মিলে বাংলা ষড়ঋতুর তৃতীয় ঋতু এই শরৎকাল।
প্রকৃতির রূপ-বৈচিত্রের পরিবর্তন ঘটলেও শরৎকাল ধরা দেয় তার আলাদা রূপ-বৈচিত্রে। শরৎ এলেই নদ-নদীর পাড়ে ফুটতে শুরু করে কাঁশফুল।
এই কাশফুলের শুভ্র হাসিই জানান দেয় শরৎ এসেছে। ভ্যাপসা-অস্বস্তিকর গরমের অবসান ঘটিয়ে আসছে শীত!।
তাই কাশফুল আর শরৎকাল যেন মিলেমিশে একাকার।
কাশফুলের সৌন্দর্য দোলা দেয় মানুষের মনেও।
আর এই সৌন্দর্য উপভোগের জন্য মানুষ ছুটে আসেন নদ-নদীর পাড়ে, বালুর চরে ফুটে থাকা কাশবনে!।
সিলেট নগরের টিলাগড় এলাকায় ফুটতে শুরু করেছে কাশফুল।দেখা গেছে টিলাগড়-শাপলাবাগের পূর্বদিকে গ্রীনল্যান্ড হাউজিং প্রকল্প এলাকায় দেখলে মনে হয় সাদা মেঘ নেমে আসছে মাটিতে!।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, এখানে প্রতি বছরই কাশফুল ফোটে। তবে দিন দিন কাশফুলের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।স্থানীয় ভ্রমণপিপাসুরা উক্ত স্থানের নাম রেখেছে কাশবন।
ঘন ঘন চিকন চিকন গাছে গাছে সাদা সাদা লম্বা ফুল প্রকৃতিকে সাজিয়ে নজর কেড়েছে মানুষজনের। কাশবন দেখতে কৌতুহলদীপ্ত শত শত মানুষ ওখানে আড্ডা দিচ্ছে। কাশবনের প্রবেশ দ্বারে পৌছে দেখা যায় , সেখানে তরুণ তরুণী, যুবক-যুবতীরা এমনকি ছোট শিশু পর্যন্ত কাশফুলের সাথে মিশে গিয়ে আড্ডা দিয়ে যে যার মত সেলফোন দিয়ে সেলফি তুলছে।
কাশবনের দু’ধারে ছোট ছোট দুটি খাল দেখা গেছে। খালগুলোতে খুব বেশি পানি নেই। কাশবনের দু’শত গজ অদূরে, দক্ষিণ দিকে একটি বিল-ঝিল দেখা গেছে। এর মধ্যে এক একর জায়গা জুড়ে শুধু ঘন কাশফুলে ভরা কাশবন বাগান। প্রকৃতি যেন ছেয়ে গেছে এই বাগানে। চোখ জুড়ালে দেখা যায় এই কাশবনের প্রকৃতি কত সুন্দর।
কাশবনের এই খবর খুব দ্রুত জানাজানি হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই আছে। প্রতি শুক্রবারে কাশফুল বাগানে প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাশফুল মূলত ছন গোত্রীয় বহুবর্ষজীবী এক ধরনের ঘাস। এরা উচ্চতায় তিন থেকে ছয় ফুটেরও বেশি হয়। ছনের কচি পাতা গরু-ছাগলের খাদ্য হিসেবেও পরিচিত। নদ-নদীর পাড়, জলাভূমি, চরাঞ্চল ছাড়াও রুক্ষ এলাকাতেও কাশ জন্মে। তবে নদ-নদীর পাড়ে এদের বেশি দেখা যায়। নদীর তীরে পলি মাটির স্তর থাকায় খুব সহজেই এর কাশের মূল সম্প্রসারিত হয়।
স্থানীয় কৃষকেরা জানায়, কাশের পাতা এবং ফুলের ডাটা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া কচি পাতা শুকিয়ে পানের বরজের ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও অনেকে শৌখিনভাবেও ঘরের ছাউনিতে কাশপাতা ব্যবহার করে।
কাশফুল বাগানে ঘুরতে আসা সাব্বির চৌধুরী বলেন, এখানে বাতাস থাকায় বেশ ভালো লাগে। আর এখন কাশফুল ফুটতে শুরু করেছে। এর সৌন্দর্য অন্যরকম। বেশ ভালো লাগে।