সিলেটপোস্ট ডেস্ক::বল পায়ে মোক্ষম সময়ে জ্বলে উঠলো যুবারা। গ্রুপ পর্বে বিবর্ণ থাকা বাংলাদেশ খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলো প্রয়োজনীয় মুহূর্তে। সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে শেষ দিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ফিরলো সমতায়। পরে টাইব্রেকারে জিতে উঠলো সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে।
শনিবার ভুটানের চ্যাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে রোমাঞ্চকর টাইব্রেকারে ৮-৭ ব্যবধানে পাকিস্তানকে হারায় বাংলাদেশ। দুই দলের নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয়েছিল ২-২ সমতায়।
শুরুর পাঁচ শটে পাকিস্তানের আব্দুল রেহমান, আব্দুল সামাদ, আবিস রেজা কাজমি, খোবাইব খান, উবাইব উল্লাহ খান পান জালের দেখা। বাংলাদেশের মোর্শেদ আলি, জয় আহমেদ, কমল মৃধা, সিয়াম অমিত, মোহাম্মদ মানিক লক্ষ্যভেদ করেন। থাকে ৫-৫ সমতা। পরে এক শটের সাডেন ডেথে পাকিস্তানের মাজিদ আলি, শারাফ খান গোল করেন। জালের দেখা পান বাংলাদেশের আকাশ আহমেদ ও মিঠু চৌধুরী।
এরপর পাকিস্তানের আব্দুল ঘানির শট নিজের ডান দিকে ঝাঁপিয়ে সেভ করেন বদলি গোলরক্ষক আলিফ রহমান ইমতিয়াজ। আর আশিকুর রহমান নিখুঁত শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করলে শঙ্কার মেঘ সরিয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠার উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ।
আসরে একমাত্র বাংলাদেশই জয়হীন ছিল গ্রুপ পর্বে। ভারতের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যাত্রা শুরুর পর মালদ্বীপের বিপক্ষে ১-১ ড্র করে সাইফুল বারী টিটুর দল।
‘এ’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মালদ্বীপ ৩-০ ব্যবধানে হারায় গোল পার্থক্যে সেমি-ফাইনালে খেলার সুযোগ মেলে বাংলাদেশের। সেরা চারের মঞ্চে এসে প্রথম জয় পেল তারা।
আগামী সোমবার শিরোপা লড়াইয়ে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। শনিবার প্রথম সেমিফাইনালে নেপালকে ৪-২ গোলে হারিয়ে মুকুট ধরে রাখার শেষ ধাপে পৌঁছেছে ভারত।
ভালো কিছুর আভাস দিয়েই শুরু করেছিল বাংলাদেশ। অষ্টম মিনিটে প্রথম ভালো আক্রমণ শাণায় দল, কিন্তু অপুর ক্রসে নাজমুল হুদা মাথা ছোঁয়ালেও বলে চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। ২৮তম মিনিটে নাজমুলের বাড়ানো দারুণ থ্রু বল অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নেন অপু। কিন্তু বক্সে ঢুকেও পরাস্ত করতে পারেননি পাকিস্তানকে গোলরক্ষককে। ৩২তম মিনিটে এগিয়ে যায় পাকিস্তান। কর্নারে উড়ে আসা বলে হেডে গোলরক্ষক নাহিদুল ইসলামকে পরাস্ত করেন শাহাব আহমেদ।
দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশকে আরও কোণঠাসা করে ফেলে পাকিস্তান। ৬০তম মিনিটে আব্দুল রেহমানের পেনাল্টি গোলে হয় ব্যবধান দ্বিগুণ। বক্সে সিয়াম অমিতের হাতে বল লাগলে স্পট কিকের বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। তিন মিনিট পর আব্দুল সামাদের শট দূরের পোস্টের বাইরের দিকে লেগে বেরিয়ে গেলে ব্যবধান বাড়েনি।
দুই গোল হজমের পর ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া বাংলাদেশ চাপ দিতে থাকে পাকিস্তানের রক্ষণে। ৭২তম মিনিটে বদলি ফরোয়ার্ড মানিকের কোনাকুনি শট পাকিস্তানের গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে আটকান। এরপরই কর্নার থেকে ম্যাচে ফেরার উপলক্ষ পায় বাংলাদেশ। কর্নারের পর বক্সের ভেতর থেকে সাইড ভলিতে জাল খুঁজে নেন বদলি ফরোয়ার্ড মিঠু চৌধুরী।
৮০তম মিনিটে সমতার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন মানিক। সতীর্থের থ্রু পাস ধরে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়া এই ফরোয়ার্ডকে আটকাতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন গোলরক্ষক, কিন্তু সরাসরি তার গায়ে মেরে বসেন মানিক। হাল না ছেড়ে লড়ার ফল সাত মিনিট যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে পায় বাংলাদেশ। রিফাত কাজীর ক্রুসে মানিকের নিখুঁত প্লেসিং শট খুঁজে নেয় ঠিকানা। সমতার উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ। আর তা পূর্ণতা পায় টাইব্রেকারে ইমতিয়াজের দারুণ সেভে।