সিলেটপোস্ট ডেস্ক::প্রথম আলো সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ছিল। আগামীতেও নীতিতে অটল থেকে প্রথম আলোর যাত্রা অব্যাহত থাকুক। সিলেটে প্রথম আলোর ২৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে বক্তারা এমন প্রত্যাশা করেছেন।
শনিবার বিকেল সাড়ে চারটায় সিলেট নগরের জিন্দাবাজার এলাকার নজরুল একাডেমিতে সিলেট প্রথম আলো বন্ধু সভার আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্যাপন হয়।
অনুষ্ঠানে প্রথম আলো সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমনকুমার দাশের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মোহাম্মদ জহিরুল হক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটে সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সিলেট প্রথম আলো বন্ধু সভার উপদেষ্টা এমাদুল্লাহ শহীদুল ইসলাম, গল্পকার জামান মাহবুব, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালনা পরিষদের সদস্য শামসুল বাসিত শেরো, পরিবেশ আইনবীদ সমিতির (বেলা) সিলেট বিভাগের সমন্বয়ক শাহ সাহেদা আখতার, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষাথর্ী ও জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনকারী হিসেবে ভূমিকা রাখা সাজ্জাদুর রহমান।
গীতবিতান বাংলাদেশ’র পরিচালক ও বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী অনিমেষ বিজয় চৌধুরীর পরিচালনায় এবং শিল্পীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অভিজ্ঞতা নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথর্ী সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ছাত্ররা যৌক্তিক অধিকার নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিল। কিন্তু স্বৈরাচারি সরকার নিজেদের ‘ইগো’ এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল দেশের ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ মানুষের সমর্থন পাওয়া শিক্ষাথর্ীদের যৌক্তিক সেই দাবিকে গ্রাহ্য করেনি। শিক্ষাথর্ীরা শপথ নিয়েছিল তাদের অধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবে না। শিক্ষাথর্ীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এমনও দিন গেছে শিক্ষাথর্ীরা নিজেদের রক্ষা করতে রাতে ৩-৪টি তালা বন্ধ করে থেকেছেন। যে কোনো সময় হামলা হতে পারে সে জন্য সব সময় নিজেদের সঙ্গে গামছা জড়িয়ে রেখেছেন।
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, আমরা ন্যায় বিচারের জন্য সংগ্রাম করেছি। সংগ্রাম করে সফল হয়েছি। এরপর পড়ার টেবিলে ফিরে গেছি। আমরা চাই প্রথম আলোও বিগত দিনের মতো তাদের ভয়েস জাস্টিসের পক্ষে অটুট থাকুক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, শ্রীহট্টা সাহিত্য পরিষদের সম্পাদক বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, দুনর্ীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেন, ভাষাণী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আমীন তাহমীদ, মাণবাধিকার কমর্ী লক্ষীকান্ত সিংহ, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক প্রণব কুমার দেব, শ্রুতি সিলেটের সমন্বয়ক সুমন্ত গুপ্ত, ছাড়ালোকের সম্পাদক শাহাদত হুসাইন, লেখক সঞ্জয় কুমার নাথ,বুনন সম্পাদক খালেদ উদ-দীন, গল্পকার শহিদুল ইসলাম, গাংচিল সাহিত্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি জগলুল হক, জাতীয় কবিতা পরিষদ হবিগঞ্জ জেলার সভাপদি পৃথ্বীশ চক্রবতর্ী, গ্রীন প্লান সিলেটের চেয়ারম্যান মোশতাক চৌধুরী সিলেট লিটল থিয়েটারের আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম মুকুল, সংবাদ পত্রের এজেন্ট ইসমাইল হোসেন, কবি সুমন বণিক, আবৃত্তি শিল্পী সুকান্ত গুপ্ত, শিল্পী আশরাফুল ইসলাম, কবি আয়েশা মুন্নি, জসিম বুক হাউসের প্রকাশক মো. জসিম উদ্দিন।
‘জেগেছে বাংলাদেশ’ ও ‘সত্যে তথ্যে ২৬’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে সিলেটে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে বক্তারা বলেন, প্রথম আলো সব সময় নির্ভিক ভাবে ন্যায়ের পক্ষে ছিল আগামীতেও থাকবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। প্রথম আলো বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা। কাগজটি সমাজের সকল অসংগতি তুলে ধরেছে। যে সরকরাই আসুক প্রথম আলো অতীতের মানবতাবিরোধী বিষয়গুলো তুলে সুসাংবাদিকতা বজায় রাখবে বলে আশাবাদি।
বক্তারা বলেন, প্রথম আলো শুধু পত্রিকা নয় পরিবর্তানের হাতিয়ার। প্রথম আলো সমাজ পরিবর্তনের ভূমিকা রাখছে। প্রথম আলো শুধু সংবাদ প্রকাশই করছে না সামাজের বিভিন্ন ভালো উদ্যোগের পাশে রয়েছে পত্রিকাটি। প্রথম আলো মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকবে । এসময় বক্তারা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানকে স্মরণ করে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, লিডিং ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসাইন, চন্দ সমাজ কল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক গোপাল চন্দ, ইমতিয়াজ রহমান, লেখক রিপন মিয়া, লেখক বনদীপ বসু, কবি শান্তা গুপ্তা, রাজনৈতিক কমর্ী সাহিদুজ্জামান পাপলু, ওসমানীনগর উপজেলার পরিসংখ্যান কর্মকর্তা সুব্রত রঞ্জন হাজরা, সিলেট বিভাগীয় ক্রিকেট আম্পায়ার্স অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সভাপতি আশরাফ আরমান, লেখক বিমল কর, অঞ্জন কুমার পাল, ছাদির হুসাইন, আবুল কালাম তালুকদার, সাংবাদিক আব্দুর রহিম, মিঠু দাস, বাপ্পা মৈত্র, এম এ ওয়াহিদ চৌধুরী। এ ছাড়া সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজন ছাড়াও সিলেট প্রথম আলো বন্ধু সভার বন্ধু, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি বন্ধু সভার বন্ধু ও এমসি কলেজ বন্ধু সভার বন্ধুরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।