সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::সুনামগঞ্জের পৌর শহরের ষোলঘর স্টেডিয়াম খেলার মাঠে বাণিজ্য মেলা বন্ধ দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জেলার আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার ( ২৬ ডিসেম্বর ) সকাল সাড়ে ১০ টায় সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সম্মুখে জেলা আইনজীবী ও বৃহত্তর ষোলঘর এলাকাবাসীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে জেলার আইনজীবীরা ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার ক্রীড়াপ্রেমী সচেতন নাগরিকগণ অংশগ্রহণ করেন।
এডভোকেট জিয়াউর রহমান পীরের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নজরুল ইসলাম শেফু, সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আবুল মজাদ চৌধুরী, এডভোকেট মতিয়া বেগম, এডভোকেট মাসুদুল হক সুমেল প্রমুখ।
সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নজরুল ইসলাম শেফু বলেন, বাণিজ্য মেলার কারণে রোগীর সমস্যা হয়। নামাজ-রোজা সব কিছু থেকে ব্যঘাত ঘটে, বাচ্চাদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যায়, রাস্তায় জ্যাম থাকে এলাকার পরিবেশ থাকে না। আমরা জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছি, ষোলঘর মাঠে মেলা বন্ধ করে শহরের বাহিরে কোথায় মেলা করার জন্য। আমরা দেখছি সারাবাংলা দেশে বাণিজ্য মেলা শহরের বাহিরে করা হয় কিন্তু আমাদের সুনামগঞ্জ এমনিতেই ছোট একটি শহর এর মধ্যেই কেনো একটি আবাসিক এলাকায় মেলা করতে হবে। একটি আবাসিক এলাকায় মেলা না করার আইন থাকার পরেও সুনামগঞ্জে মেলার অনুমতি দেওয়া হলো।
তিনি আরও বলেন, ষোলঘর মাঠে মেলা বন্ধের দাবিতে আমরা জেলা প্রশাসকে স্মারকলিপি দেওয়ার পরেরদিনই তুরজোর করে দুই-একটা কোটা দিয়ে মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। আমরা যারা মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন তাদের নিয়েও উপহাস করা হয়। আমরা পরিস্কার ভাবে বলে দিতে চাই মেলা যদি বন্ধ না করেন তাহলে আগামীকাল শুক্রবার জুম্মায় প্রতিটি মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিন ও মসুল্লিদের নিয়ে এই অশ্লীল মেলা বন্ধের দাবিতে কঠোর আন্দোলনে বের হবো। এতেও যদি মেলা বন্ধ না হয় তাহলে আমরা আইনজীবীরা আইনের মাধ্যমে লড়াই করবো, জজ কোর্ট, হাইকোর্ট যাবো। প্রয়জোনে রিট করে এই বেআইনি মেলা বন্ধ করবো। যদি এই আন্দোলন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে তাহলে যে বা যারা এই অবৈধ-বেহায়াপনা ক্ষেত্র মেলার অনুমোদন দিবেন তারাই দাবি থাকবেন।
মানববন্ধনে সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আবুল মজাদ চৌধুরী বলেন, আমরা দেখি প্রতিবছর বাণিজ্য মেলার নামে মাঠ বন্ধ করে মেলা আয়োজন করে গান বাজনাসহ সার্কাসের মহড়া মাধ্যমে এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট করা হয়। দীর্ঘ সময় মেলার মাঠ বন্ধ থাকায় খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হন এলাকার ক্রীড়ামোদীরা। খেলার মাঠে মেলা আয়োজনে কোনো বিধিবিধান না থাকলেও অর্থনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে প্রতিবছরই মেলার অনুমোদন দেয়া হয়। এই মাঠের পাশে স্কুল, মাদ্রাস, মসজিদ একটি আবাসিক এলাকা, এখানে মেলা কোনোভাবেই কান্য নয়। এই মেলার কারণে আমরা সড়ক দিয়ে চলাচল করতে পারি না। সারাদিন জ্যাম থাকে। নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়া আসা করা যায় না। প্রথম প্রথম বলে গানবাজানা হবে না, করে মেলার শুরু হলেই গান বাজনার জন্যে আর বাসা বাড়িতে থাকা যায় না। আমরা এই মেলাড় আপত্তি যানাচ্ছি, এই মেলা ষোলঘর মাঠে করতে দিবো না। প্রয়োজনে আমরা সুনামগঞ্জের সকল সচেতন মানুষকে নিয়ে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবো।
এসময় বক্তারা আরও বলেন শিশু-কিশোরদের মেধা বিকাশের স্বার্থে বাণিজ্য মেলার মাঠ অন্যত্র স্থানান্তরের দাবি তুলেন তারা৷ এলাকায়বাসীর দাবি উপেক্ষা করে মেলা আয়োজন করলে সাধারণ মানুষদের সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের পাশাপাশি আইনী লড়াইয়ের হুশিয়ারি প্রদান করেন সংশ্লিষ্টরা।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র এ্যাড. রফিকুল আলম, সিনিয়র এডভোকেট ফজর আলী, ড. খাইরুল কবীর রুমেন, এডভোকেট আব্দুল হামিদ,আব্দুল হক, নাজমুল হুদা হিমেল, সাদিকুর রহমান স্বপন, আব্দুল মজিদ জুয়েল, আইন উদ্দিন, ফয়সল আহমেদ, মেহরাজ উদ্দিন উৎপল, আব্দুল জলিল, শফিকুল ইসলাম, নাছিরুল হক আফিন্দী, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, এডভোকেট শফিউল্লাহ, জাবেদ নুরে আলম, জানাতুল ফেরদোস, মহিউদ্দিন, তনয় চক্রবর্তী, ইশতিয়াক আলম পিয়াল, শফিউল আলম প্রমূখ, ষোলঘরের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল ওয়াদুদ, জয়নাল আবেদীন পীর, শিক্ষক লুৎফুর রহমান, মোহাম্মদ এমদাদ, মনোয়ার চৌধুরী, ফাহমিদ চৌধুরী ফামু, জাওয়াদুর রহমান সায়েম, সাব্বির, সাকিব আহমেদ, তুহিন, সাবিত, শিহাব প্রমুখ।