পাথর ব্যবসা আমাদের রুটি-রুজি, এখানে কোনো ছাড় নয়-অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান
সিলেটপোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ৪:২২ অপরাহ্ণ
সিলেট-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ও দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান বলেছেন, আমার দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, তবে আমার ইলেকশনে পাশ করা লাগবে না। যেদিন নমিনেশন ডিক্লেয়ার হবে, আল্লাহর নামে আপনারা দাওয়াত পাওয়ার ঘণ্টার মধ্যে দেখবেন অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং মামার দোকান এলাকায় স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী এবং বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাডভোকেট জামান স্থানীয় উন্নয়নের বৈষম্য তুলে ধরে বলেন, গোয়াইনঘাট থেকে সবাই কোটি কোটি টাকা বানিয়ে নিয়ে যায়, রক্ত চুষে টাকা নিয়ে চলে যায়। আর আপনারা বসে বসে গরিবই থাকেন। এখানে হসপিটাল নাই, এম্বুলেন্স নাই। মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট করলে রক্ত ঝরতে ঝরতে মানুষ মারা যায়। এতদিন যারা মন্ত্রী-মিনিস্টার, উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন, তারা কেন এটা করলেন না? নতুন প্রজন্মকে এই প্রশ্ন করতে হবে।
জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ২৪-এর আন্দোলনে সিলেট শহর আওয়ামী লীগ দখল করে ফেলেছিল। কিন্তু গর্ব করে বলি, নাইওরপুল পয়েন্ট থেকে পূর্বাঞ্চলের (সিলেট থেকে তামাবিল) এক ইঞ্চি জায়গাও আওয়ামী লীগ প্রবেশ করতে পারেনি। আমরা প্রবেশ করতে দেইনি। আমাদের ২৪ জন সহযোদ্ধা আহত হয়েছে, আমি নিজে গুলিবিদ্ধ হয়েছি। শরীরে আড়াইশ স্লিন্টার নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এত বড় শক্তিকে যেহেতু ছাড় দেই নাই, এখানে আমাদের ভাই-ব্রাদারের কষ্ট হলে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
জাফলংয়ের পাথর কোয়ারি ও শ্রমিকদের রুটি-রুজি প্রসঙ্গে জামান বলেন, ‘যারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে যায়, তাতে দেশের পরিবেশ নষ্ট হয় না। আর জাফলংয়ে লাখ লাখ শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের একমাত্র অবলম্বন পাথর ব্যবসা পরিবেশের দোহাই দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হলো। আমি আইনের লোক, রাজনীতিও করি। আমাকে বুঝিয়ে লাভ হবে না। শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের পেটের প্রশ্নে কাউকে ছাড় দেব না।
২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, মরহুম সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম ভাইয়ের প্রতি সম্মান রেখে নমিনেশন পাওয়ার পরও আমি নির্বাচন করিনি। সেলিম ভাই বেঁচে থাকলে আজকেও তাঁর পক্ষে নির্বাচন করতাম। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এই জনপদের সাথে আমার সম্পর্ক। এই মাটির টানেই আমি বারবার ফিরে আসি।
সভায় তিনি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক ছাত্রদল নেতা আন্নু মালিক লিটনের মুক্তির বিষয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আশা করি জানুয়ারির মধ্যেই লিটনের সাজা কমিয়ে আনতে পারব এবং দ্রুতই তাকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনব ইনশাআল্লাহ।
জাফলং স্টোন ক্রাশার মিল মালিক সমিতির সভাপতি বাবলু বক্সের সভাপতিত্বে এবং যুবদল নেতা রাসেল হাসান রুবেল ও সোলেমান খাঁনের পরিচালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট মুরুব্বি হাফিজ মিয়া, জাফলং ট্রাক চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আলী, বিএনপি নেতা আব্দুর শুক্কুর, ঢাকাইয়া শহীদ, সোহেল রানা, ফরমান আলী, ওয়াসিম মিয়া প্রমুখ।
সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। সভা শেষে অ্যাডভোকেট জামান জাফলং, মামার দোকান ও বল্লাঘাট এলাকায় তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করেন এবং দণ্ডপ্রাপ্ত ছাত্রদল নেতা আন্নু মালিক লিটনের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।



