তিনি বলেন, আজকে গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে কথা বলছে। তারা দেখতে চায় সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন।

বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট নগরীর সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে একদফা দাবীতে সিলেট অভিমুখে শুরু হওয়া তারণ্যের রোড মার্চের সর্বশেষ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষ ভোট দিতে পারে না। দিনের ভোট রাতে হয়ে যায়, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। তাই মানুষ শেখ হাসিনাকে আর এক মুহূর্তও ক্ষমতায় দেখতে চায় না। বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য আন্দোলন করছে না, আন্দোলন করছে গণতন্ত্রের জন্য, ভোটাধিকারের জন্য। তাই সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন দিতে হবে। শেখ হাসিনার অধিনে দেশে কোন নির্বাচন হবে না, দেশের মানুষ হতে দেবে না।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘যে দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষ ভোট দিতে পারে না, দিনের ভোট রাতে হয়, অর্থ পাচার হয়, তাই বিশ্ববাসী তাদের পক্ষে নেই। গোটা বিশ্ব অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়। আমরা ৭১ সালে শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার, সাম্য ও সামাজিক নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। এখন গণতন্ত্রের জন্য, বাক স্বাধীনতার জন্য এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সূচিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খছরু মাহমুদ চৌধুরী।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খছরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এক দফা এক দাবীতে এই রোডমার্চ, তা হলো এই সরকারের পদত্যাগ। এই সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে, নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দিতে হবে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, এই দাবীতে মানুষ জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছে। দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে বিদায় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা এই সরকারের অধিনে নির্বাচনে যাবে না।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেখ হাসিনার অধিনে নির্বাচন হলে কোন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। কারন তারা জানে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন পরিবেশ নাই। বিশ্ববাসী একটি গ্রহনযোগ্য, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য একটি নির্বাচন চায়। তাই সরকারের ভোট চুরি করার প্রকল্প ভেঙ্গে দিতে হবে, তাদেরকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ভোট চোর ও তাদের সহযোগী সকলের তালিকা করতে হবে। তাই সরকারকে বিদায় করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পরে এটি সবচেয়ে বড় মুক্তির সংগ্রাম। এজন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, আরিফুল হক চৌধুরী ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব হাবিবুন্নবী খান সোহেল ও খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন ও এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী ও হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী।

রোডমার্চকে বরণ করতে বিকেল ৩টা থেকেই আলিয়ার মাঠে ঝড়ো হতে থাকেন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী সহ মুক্তিকামী হাজার হাজার জনতা। বিকেল ৪টার পূর্বেই মুহুর্মুহু বৃষ্টি উপেক্ষা করে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষমান নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে মঞ্চ থেকে বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন জাসাস এর শিল্পীবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস.এম জিলানী, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- এডভোকেট আশিক উদ্দিন, মামুনুর রশিদ মামুন, মিফতাহ সিদ্দিকী, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, নজিবুর রহমান নজিব, হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, শামীম আহমদ, সৈয়দ সাফেক মাহবুব, মকসুদ আহমদ, এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, শাহনেওয়াজ বক্ত তারেক, মির্জা সম্রাট হোসেন, মাহবুবুল হক চৌধুরী, শাকিল মোর্শেদ, আফসর খান, তাহসিন শারমিন তামান্না, নিগার সুলতানা ডেইজী, নিজাম উদ্দিন তরফদার, সুরমান আলী, জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন, সুদীপ জ্যোতি এষ, দেলোয়ার হোসেন দিনার, ফজলে রাব্বি আহসান প্রমূখ।

বৃহষ্পতিবার সকালে ভৈরর শুরু হওয়া রোডমার্চ রাত পৌনে ৮টায় সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে এসে পৌঁছে। এসময় সমেবেত জনতা মুহুর্মুহু করতালি ও শ্লোগান দিয়ে রোডমার্চের গাড়ি বহরকে স্বাগত জানান।