শেখ মোঃ লুৎফুর রহমান::দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ রোববার সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয়েছে বিকেল চারটায়। রাজধানী বা বাইরে ভোটের চিত্রে দেখা গেছে, ভোটার উপস্থিতি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কম।
এদিকে বেশ কিছু অভিযোগ ও ৬ প্রার্থীর বর্জনের মধ্যদিয়ে সিলেটের ৬টি আসনে শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
এদিকে, ভোট চলা অবস্থায় দুপুরে সিলেট-২ আসনে (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) একসঙ্গে ভোট বর্জন করেন ৪ প্রার্থী। তারা হলেন- গণফোরামের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), বিশ্বনাথ পৌরমেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান (ট্রাক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া (লাঙ্গল) এবং তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুর রব (সোনালী আঁশ)।
দুপর দেড়টায় ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারস্থ একটি রেস্টুরেন্টে প্রেস ব্রিফিং করে এ ৪ জন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তাদের অভিযোগ- সিলেট-২ আসনজুড়ে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের এজেন্টদের মারধরসহ হুমকি-ধমকি প্রদান করেছে। যার ফলে তারা ভোট বর্জন করেন।
একই সময়ে সিলেট-৪ আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল হোসেন (সোনালী আঁশ) ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে এ ঘোষণা দেন তিনি।
একেবারে শেষ সময়ে (বৃহস্পতিবার বিকালে) এসে সিলেট-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলালও (ট্রাক প্রতীক) ভোট বর্জন করেন। তাঁর অভিযোগ- বালাগঞ্জের প্রায় প্রতিটি কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয় এবং মারধর করা হয়। এছাড়া নৌকার প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক জাল প্রদানের অভিযোগ করেন দুলাল।
অপরদিকে, সিলেট-৩ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক ফেঞ্জুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলার ৩৬টি কেন্দ্রের ভোট প্রত্যাখ্যান করেন। নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে জাল ভোট ও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে রবিবার বিকাল পৌনে ৪টায় তিনি এসব কেন্দ্রের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন। এসময় তিনি এসব কেন্দ্রে ফের নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান ইলেকশন কমিশনের কাছে।
অন্যদিকে, সিলেট-১ আসনের অন্তর্ভুক্ত মহানগরের পাঠানটুলা এলাকার একটি ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে সিলেটের ১৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০৫ প্রার্থী। জেলায় ৩৫ জন।
সিলেটে ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠু করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনী মাঠে ছিলো দিনভর। এছাড়া মাঠে ছিলো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের অধীনস্থ স্ট্রাইকিং টিমও।
এবারের সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ছয়টি আসনে মোট ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৩১ ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ লাখ ৯২ হাজার ৩৯৫ ও মহিলা ভোটার রয়েছেন ১৩ লাখ ২২ হাজার ৯২৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১০ জন।
ভোটকেন্দ্র ছিলো এক হাজার ১৩টি ও ভোট কক্ষ ছয় হাজার ছয়টি।