সিলেটপোস্ট ডেস্ক::সিলেট বিএনপিতে নানা গ্রুপ-উপগ্রুপ আছে। প্রতিটি গ্রুপ-উপগ্রুপ আবার মুক্তাদির ও আরিফুল হক বলয়ে বিভক্ত।
উভয়েই বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। রাজনীতিতে আধিপত্যের পাল্লাও সমানে-সমান। প্রকাশ্যে বিভেদ না দেখালেও আড়ালে একে অপরকে ‘কাবু করায়’ ব্যস্ত থাকেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। বিশেষত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্থানীয় ক্ষমতার বলয় নিয়ন্ত্রণে নিতে উভয়েই এখন তৎপর। এ অবস্থায় তাঁদের মধ্যে চলছে ‘ঠান্ডা লড়াই’।
এ দুই নেতা হচ্ছেন খন্দকার আবদুল মুক্তাদির ও আরিফুল হক চৌধুরী। প্রথমজন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছেন। দ্বিতীয়জন দলের মনোনয়নে দুই দফায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হন। উভয়েরই দলে শক্তিশালী বলয় আছে। তাঁদের মধ্যে মুক্তাদির মহানগর বিএনপির সম্মানিত সদস্য’ এবং আরিফুল জেলা বিএনপির সদস্য।
তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, মুক্তাদিরের বাবা খন্দকার আবদুল মালিক ১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ সদস্য হন। পাশাপাশি সিলেটের বনেদি পরিবার হিসেবেও তাঁদের ব্যাপক নামডাক আছে। ভদ্র ও সজ্জন হিসেবে পরিচিত মুক্তাদির বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘সুনজরে’ আছেন বলেও স্থানীয়ভাবে আলোচনা আছে।
অন্যদিকে আরিফুল শহর ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য, বিএনপির সিলেট মহানগরের সভাপতি ও জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। অভিজ্ঞ এই রাজনীতিক প্রয়াত বিএনপি নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের আস্থাভাজন হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। এ ছাড়া নগরের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে আরিফুলের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা আছে।
বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে দলে নানা গ্রুপ-উপগ্রুপ আছে। প্রতিটি গ্রুপ-উপগ্রুপ আবার মুক্তাদির ও আরিফুল হক বলয়ে বিভক্ত। একই অবস্থা অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর। পাশাপাশি সিলেটে অবস্থানকারী বিএনপির যেসব কেন্দ্রীয় নেতা আছেন, তাঁরাও এ দুই নেতাকে ঘিরে বিভক্ত। ফলে স্থানীয় বিএনপিতে মুক্তাদির আর আরিফুলের অনুসারীদেরই এখন একচ্ছত্র দাপট।
ভবিষ্যতে সিলেট-১ আসনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা ছিল। মুক্তাদির রাজনীতিতে আসায় আরিফুলের স্বপ্নে চিড় ধরেছে। মূলত এ কারণেই দুই নেতার বিরোধের সূত্রপাত। এখন ক্রমেই তা বাড়ছে।
যোগাযোগ করলে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন,আমার কারও সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব-বিভেদ নেই। আমরা সবাই বিএনপি পরিবারের কর্মী, এটাই বড় পরিচয়। তবে যাঁরা দলের দুর্দিনে ছিলেন, অর্থাৎ ত্যাগী ও পরীক্ষিত, তাঁদের মূল্যায়ন হওয়া উচিত। সদ্য ঘোষিত বিএনপির মহানগর কমিটিতে এর প্রতিফলন ঘটেনি।
খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলেন, ‘আমি এখানে বিএনপি করি। আমি বিএনপির একজন। এ রকম সব মিলিয়েই আমরা বিএনপি। এখানে সবাই আমরা একে অপরের কাছের মানুষ। বিএনপির স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েই আমরা রাজনীতি করি। এখানে আলাদা বলয় করার কোনো সুযোগ নেই।