সিলেটপোস্টরিপোর্ট:রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়ে ২ জনকে হত্যা মামলায় বখতিয়ার আলম রনির আবারো ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রনি মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি পিনু খানের ছেলে।রোববার ঢাকার সিএমএম আদালতে রিমান্ডের এ আবেদন জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি’র পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। আগামী বুধবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।এর আগেও আদালতের নির্দেশে গত ৯ থেকে ১২ জুন চারদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এমপিপুত্র রনিকে। তবে রনি তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল দিয়ে গুলির কথা স্বীকার করলেও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দেওয়ায় তাকে ফের রিমান্ডে নিতে চাইছে ডিবি পুলিশ।মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপ-কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ ও তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি’র উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস জানান, গত রিমান্ডে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল দিয়ে গুলির কথা স্বীকার করেছেন এমপিপুত্র রনি। তিনি বলেছেন, গত ১৩ এপ্রিল মধ্যরাতে রাস্তায় যানজট থাকায় বিরক্ত হয়ে কোমর থেকে পিস্তল বের করেন তিনি। মদ্যপ থাকায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। রাস্তায় এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়েন। মুহূর্তেই রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়। গাড়ি নিয়ে চলে যান তিনি। নিজে জানতেনও না, তার ছোঁড়া গুলিতেই দু’জন মারা গেছেন।প্রসঙ্গত, ১৩ এপ্রিল রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে রনি ও তার সহযোগীরা একটি সাদা মাইক্রোবাস থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়লে দৈনিক জনকণ্ঠের অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম নিহত হন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে। নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ১৫ এপ্রিল রাতে অজ্ঞাত আসামিদের নামে রমনা থানায় একটি মামলা করেন।গত ২৪ মে মামলাটির তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তা ও অন্যান্য সোর্সের মাধ্যমে রনির ব্যবহৃত গাড়িটি শনাক্ত করা হয়। গত ৩১ মে মাইক্রোবাসটির চালক ইমরান ফকিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান ফকির পুরো ঘটনার বর্ণনা দিলে রনিকে একই দিন ধানমণ্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।গত ১ জুন দু’জনকে আদালতে পাঠানো হলে ইমরান ফকির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে রনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করলে রিমান্ড আবেদন করে ডিবি পুলিশ।আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে রিমান্ডে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু রিমান্ডে এমপিপুত্র রনি অসুস্থ হলে তাকে রাজারবাগ পুলিশলাইন্স হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে ৯ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।