ইলিয়াস আকরামথেকেঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প-২০২১ এর অন্যতম লক্ষ্য দারিদ্র ও ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের আওতায় গোয়াইনঘাটে রবিশস্য চাষ করে অর্ধশতাধিক কৃষক স্বাবলম্বি হয়েছে। বদলে যাচ্ছে তাদের জীবনধারা। দারিদ্রতা বিমোচন‘র লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে গ্রামীণ জনগোষ্টীর ব্যাপক উন্নতি সাধিত হচ্ছে। এতে গ্রামীণ কৃষিক্ষেত্রে ঘটছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। হাসি ফুটছে গ্রামঞ্চলের দারিদ্রপিড়িত সাধারণ কৃষক শ্রেণীর মুখে।এ প্রকল্পের উদ্যোগে দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণোত্তর আয় বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ডে আর্থিক সহায়তা, সম্পদ সহায়তা প্রদানের প্রেক্ষিতে গ্রামীণ জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় উৎপাদিত এসব শস্য এলাকার চাহিদা মিঠিয়ে বাহিরের বিভিন্ন জেলা ও বিদেশে রপ্তানী করা হচ্ছে। আর কৃষাণ-কৃষানীদের মাঝে বইছে আনন্দ‘র বন্যা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সরজমিন উপজেলার আলীরগাঁও ইউনিয়ন‘র কাকুনাখাই গ্রামে গিয়ে দেখা যায় গ্রামের পাশে রউয়া বিল (জলমহাল) এর তীরে প্রায় ৩শত একর পতিতা ভুমি রয়েছে। এ ভুমিতে অতীতে কখনও কোন ধরনের চাষাবাদ করা হয়নি। অযতেœ আর অবহেলায় পড়ে ছিল বিলের তীরঘেষা এই সোনাফলা ভূমি। ভুমিগুলো যে অত্যান্ত উর্বর ও শস্যউৎপাদনের উপযোগী তা কেউ কল্পনাও করেনি। কাকুনাখাই গ্রামের ৪৫জন কৃষক মিলে একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের মতো ‘কাকুনাখাই গ্রাম উন্নয়ন সমিতি’ গঠন করেন। উক্ত সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান জানান নিি এবং সমিতির ম্যানাজারসহ বাকী সকল সদস্য মিলে সমিতির যাবতীয় কার্যক্রম দেখবাল করেন। একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্প‘র কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কাযক্রমের খবরাখবর রাখেন। সদস্যরা মাসিক ২শত টাকা করে চাদাঁ প্রদান করেন। এছাড়া তারা সরকার ঘোষিত একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের আওতায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে থাকেন। এসব দিয়ে শুরু করেন রবি শস্য চাষ, গাভী পালন ও ক্ষুদ্র ব্যবসা। রবি শস্য‘র মধ্যে রয়েছে ১৫একর তরমুজ চাষ, ৫একর ধনিয়া, ৫একর ফরাস, ৫একর গম, ১০একর সরিষা চাষ। সমিতির সদস্যরা তাদের মাসিক চাদাঁর সঞ্চিত টাকা এবং একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্প থেকে নেওয়া ৩লাখ ৮৪হাজার টাকা দিয়ে অর্ধশত একর ভুমির উপর রবি শস্য চাষ শুরু করেন । এতে প্রত্যেকের শস্য বাজারজাত উত্তর অর্ধকোটি টাকা আয় হবে বলে তারা আশাপ্রকাশ করেন। এতে করে সকল কৃষকগণ অল্প সময়ে সাবলম্বি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এবং এরই মাধ্যমে তারা অনুভব করছেন তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। যা সরকার ঘোষিত দারিদ্রতা বিমোচন এর বৈপ্লবিক পরিবর্তন’র বাস্তবতা। এদিকে মঙ্গল বার সকালে উক্ত এলাকায় প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন শস্য(মাঠ) পরিদর্শন করতে যান গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম। সাথে ছিলে গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব সভাতি মনজুর আহমদ ও একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্প‘র উপজেলা সমন্বয়কারী মোঃ রফিকুল ইসলাম, কাকুনাখাই গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান, ম্যনাজার মোঃ নুরুদ্দিন, সংবাদর্কমী ইলিয়াস আকরাম প্রমুখ। মাঠ পরিদর্শনকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম প্রতিবেদককে জানান ‘একটি বাড়ী একটি খামার এখন আর স্বপ্ন নয় এটি একটি বাস্তবতা, প্রকল্পের সদস্যরা সমবায় ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের লাভ জনক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এবং তাদের আর্থিক সহায়াতা, নিয়মিত বৈঠক ও কারিগরি তদারকিসহ সরকারী ভাবে সকল সহযোগিতা অব্যাহত আছে। এছাড়া যাবতীয় বিষয়াদি আমি ও আমার প্রকল্প কর্মকর্তা দেখাশোনা করে থাকি। যার ফলে সাধারণ মানুষের স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অন্যান্য লোকজনদের মাঝে নিজ চেষ্টায় দারিদ্রতা বিমোচনে এরূপ কর্মকান্ডের স্পৃহা তৈরী হচ্ছে।
গোয়াইনঘাটে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের আওতায় বদলে যাচ্ছে জীবনধারা
সিলেট পোস্ট ২৪ ডট কম
: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫ | ৩:৩৯ অপরাহ্ন
« « পূর্ববর্তী
পরবর্তী » »