অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী- কোন পরিচয়েই অপি করিমকে খুঁজে পাওয়া যায় না টেলিভিশনের পর্দায়। ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন নিয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে আছেন হাস্যমুখী এ শিল্পী। তবে প্রিয় এ তারকাকে মঞ্চে দেখতে পারবেন তার ভক্তরা। আজ নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ের ‘নাম গোত্রহীন মান্টোর মেয়েরা’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের কাছে ফিরছেন অপি করিম।
উর্দু ভাষার লেখক সাদাত হাসান মান্টোর ‘কালি সিলোয়ার’, ‘লাইসেন্স’ এবং ‘হাতাক’ গল্পগুলো অবলম্বনে ‘নাম গোত্রহীন মান্টোর মেয়েরা’ নাটকের নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন নাট্যজন ঊষা গাঙ্গুলি। নাটকের প্রধান তিন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অপি করিম, শ্রিয়া সর্বজয়া এবং সারা যাকের। ‘কালি সালোয়ার’ গল্পের সুলতানা, ‘লাইসেন্স’ গল্পের নীতি এবং ‘হাতাক’ গল্পের সুগন্ধী প্রতিনিধিত্ব করেছে ভারতীয় উপমহাদেশের অসংখ্য নির্যাতিত নারীর জীবনালেখ্য।
‘নাম গোত্রহীন মান্টোর মেয়েরা’ নাটকের প্রথম পর্ব ‘কালি সালোয়ার’এ অভিনয় করেছেন অপি করিম। মঞ্চে তিনিই হবেন সুলতানা, একজন দেহপসারিনী। পাকিস্থান থেকে দিল্লিতে চলে আসে সুলতানা, খোদাবক্সের মিথ্যা আশা তাকে ঠেলে দেয় অন্ধকারে। খদ্দের শংকর মিথ্যা প্রেমের ফাঁদ পেতে কেড়ে নেয় সুলতানার মায়ের স্মৃতিচিহ্ন দুল। সুলতানার বড় শখের কালো সালোয়ার এনে দেয় শংকর, বিনিময়ে প্রেমের নামে ছল করে অসহায় মেয়েটির সঙ্গে। সুলতানা বুঝতে পারে, এভাবেই হয়ত খোদাবক্স আর শংকরদের হাতের পুতুল হয়েই বেঁচে থাকতে হবে তাকে। নিজেকে বিক্রি করেই যোগাড় করে চলবে খোদাবক্সদের মুখের খাবার। ‘দুনিয়ার সবার ইচ্ছাই খোদা পূরণ করে, তবে আমার ইচ্ছা কেন অপূর্ণ থাকবে?’- এমন আর্তচিৎকার শুধু সুলতানার নয়, তথাকথিত সভ্যতার আড়ালে হাজার বছর ধরে নিষ্পেশিত অসংখ্য নারীর কথা মনে করিয়ে দেয়।
‘নাম গোত্রহীন মান্টোর মেয়েরা’ নাটকটি নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ের ৪৪তম প্রযোজনা। আজ সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে নাটকটি। অপি করিম, শ্রিয়া সর্বজয়া এবং সারা যাকের ছাড়াও নাটকে অভিনয় করেছেন পান্থ শাহরিয়ার, রাজীব দে, মোস্তাফিজ শাহীন প্রমুখ।