নিজস্ব প্রতিবেদক : চা শ্রমিকদের আবাসন, বিদ্যুৎ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, মজুরি ও বেতনভাতা বৃদ্ধি, বিভিন্ন দিবসে ছুটি ও চাকুরী নিশ্চিতসহ ২০ দফা দাবি চলতি মে মাসের মধ্যে না মানলে লাগাতার ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে সিলেটের ২২টি চা বাগান জনগোষ্ঠী।
আর্ন্তজাতিক শ্রম দিবস উপলক্ষ্যে গত শুক্রবার দুপুরে সিলেটের এয়ারপোর্ট রোডের লাক্কাতুরা রেস্ট ক্যাম্পবাজারের সংলগ্ন মাঠে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালীর কার্যকরী পরিষদের আয়োজনে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে তারা এ ধর্মঘটের হুমকি দেন।
এর আগে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালীর সভাপতি রাজু গোয়ালার নেতৃত্বে ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড ও মাথায় লাল কাপড় বেঁধে ২২টি চা বাগানের চা শ্রমিক জনগোষ্ঠী এয়ারপোর্ট রোডে র্যালী বের করেন। র্যালীটি লাক্কাতুরা চা বাগানের বাংলো হয়ে চৌকিদেখী পর্যন্ত ঘুরে সভাস্থলে গিয়ে শেষ হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করে সিলেট উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একে একে বেশ কয়েকটি মেহনতি শ্রমিকদের চেতনা জাগরনের গান পরিবেশন করে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন তারা।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালীর সভাপতি রাজু গোয়ালার সভাপতিত্বে ও সিলেট চা জনগোষ্টী ছাত্র-যুব কল্যান পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি বরুণ সিং ছত্রীর পরিচালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ৬নং টুকেরবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদ আহমদ, সিলেট উত্তর ভ্যালীর উপদেষ্ঠা ও গোয়াইঘাট ডিগ্রী কলেজের ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক চিত্যরঞ্জন রাজবংশী, ৬নং টুকেরবাজার ইউনিয়নের সদস্য রণবাহাদুর, সিলেট উত্তর ভ্যালীর সাধারণ সম্পাদক কৃপেষ ব্যানার্জী, কেয়াছড়া চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি বনিক বাড়াই, খাদিমনগর চা বাগানের বকুল পাঞ্জা, সিলেট উত্তর ভ্যালীর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান শামীম, সিলেট চা জনগোষ্টী ছাত্র-যুব কল্যান পরিষদের সহ-সভাপতি দিলীপ রঞ্জন কর্নী, মালনীছড়া চা বাগানের জিতেন সরব, বড়জান চা বাগান কারখানার বিলাস ব্যানার্জী, খাঁন চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য বাচ্চু বাড়াই, খাদিমনগর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সজিব তাঁতি, লালাখাল চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি রাজন্দ্র বাড়াই, জাফলং চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি নিরঞ্জন গোয়ালা।
অনুষ্ঠান স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সিলেট উত্তর ভ্যালীর মাটকর্মী সুশান্ত সাহা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি, সিলেট ২২টি বাগানের জনগোষ্টীর নের্তৃবৃন্দ ও চা বাগানের কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠান শুরুতে পবিত্র গীতা পাঠ করেন, সিলেট এমসি কলেজের ইংরেজী ৩য় বর্ষের ছাত্র রিপন বাড়াই ও কোরআন তেলওয়াত করেন সিলেট চা জনগোষ্টী ছাত্র-যুব কল্যান পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।
স্বাধীনতা সংগ্রামে চা জনগোষ্ঠীনর ভুমিকা উল্লেখ করে প্রধান অতিথি সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু চা শ্রমিক জনগোষ্টীর উন্নয়নের কথা বলেছেন আর এখন তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাই আজ চা শ্রমিকদের জনগোষ্ঠী লেখা-পড়া করা সুযোগ পাচ্ছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে চা শ্রমিকদের শিশুরা স্কুলে যাচ্ছে শিক্ষার জন্য বিনামুল্যে বইও পাচ্ছে। মন্দিরগুলোতে উয়ন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সকল চা শ্রমিকদের ঘরে-ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে যাবে। এখন চা শ্রমিকরা মাথা উচু করে দাড়াঁতে পারছে।