নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের জোনাল সেটেলম্যান্ট অফিসার সুব্রত পাল চৌধুরীর অবহেলা ও খামখেয়ালীর কারণে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ৫ গ্রামের শতাধিক পরিবার মৌরসী সম্পত্তি হারাতে বসেছে। ভূমিখেকো চক্রের সাথে আতাত করে জগন্নাথপুরের ইকড়ছই মৌজার ইকড়ছই, সিলিমপুর, ভবানীপুর, হবিবপুর, বলবল গ্রামের ১০ একর ভূমির দখল থাকা স্বত্তেও অন্যের নামে রেকর্ডভূক্ত করে দিয়েছেন।
রোববার বেলা ৩টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে মৌরসী সম্পত্তি হারাতে বসা শতাধিক পরিবারের পক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাজী শফিকুর রহমান লিলু বলেন, জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ইকড়ছই মৌজার ইকড়ছই, সিলিমপুর, ভবানীপুর, হবিবপুর, বলবল গ্রামের শতাধিক পরিবার বংশপরম্পরায় বসবাস করে আসছেন। ১৯৫২ সালের সেটেলমেন্ট জরিপে প্রায় উপজেলার ইকড়ছই মৌজার ২০ একর ভূমি আমাদের পূর্ব পুরুষের নামে রেকর্ডভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে ২০০০ সালের মাঠ জরিপে এ ভূমির প্রায় ১০ একর আমাদের নামে পুণরায় রেকর্ডভূক্ত হয়। এ ভূমিতে ইতিমধ্যে বাড়িঘর, দোকানপাঠ, মসজিদ, মক্তবসহ নানান স্থাপনা রয়েছে। যার মধ্যে পাঁকা, আধা পাঁকা, সেমি পাঁকা ও কাঁচা ঘর-দরজা রয়েছে। এছাড়া শতাধিক পরিবার বৈধ দখলকারক হিসাবে রেকর্ডীয় কাগজপত্র রয়েছে। তাছাড়া, এ সকল পরিবারের নামে সকল প্রকার খাজনা, বিদ্যুৎ বিল, পৌর ট্যাক্স পরিশোধ করা হচ্ছে।
কিন্তু এ মৌজার পাশ দিয়ে একটি আঞ্চলিক সড়ক হওয়ায় সুনামগঞ্জের কুখ্যাত রাজাকার আলবদর নেতা আছাব আলী ও তার লোকজন শতাধিক পরিবারের ভূমি আত্মসাতে মরিয়া হয়ে উঠে। তারা প্রথমে জগন্নাথপুরের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয়ে অভিযোগ করে। কিন্তু শুনানীকালে কোনো দালিলিক প্রমান দিতে না পারায় বিষয়টি সিলেটের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয়ে গড়ায়। এরই মধ্যে ভূমিখেকো চক্র বিষয়টি কৌশলে ঢাকায় ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে স্থানান্তর করায়। শুনানী শেষে অধিদপ্তরের উপ পরিচালক গ্রামবাসীর পক্ষে রায় দেন।
কিন্তু এ রায়কে প্রত্যাখান করে ভূমিখেকোর সিলেটের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার সুব্রত পাল চৌধুরীর সাথে আতাত করে গত ২৯ এপ্রিল শুনানী শেষে গ্রামবাসীর বক্তব্য কিংবা কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার সুব্রত পাল চৌধুরী ১২৭/১, ১২৭/২, ১২৭/৩, ১২৭/৪, ১২৭/৫, ১২৭/৬, ১২৭/৭, ১২৭/৮ মামলা একতরফা রায় দেন গ্রামবাসীর বিপক্ষে।
এর প্রতিবাদে গত ৩০ এপ্রিল গ্রামবাসী ভূমিমন্ত্রীর কাছে এক স্মারকলিপিতে সিলেটের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার সুব্রত পাল চৌধুরীর অপসারণ দাবিসহ সরেজমিনে ঘটনাস্থল তদন্তের জন্য ভূমিমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দেলোয়ার হোসেন, ছিলিমপুর গ্রামের হাজী আবদুল জব্বার, আবুল লেইছ, জামিল মিয়া, ফয়জুল ইসলাম, জুনেদ আহমদ, নুরুল আমিন, সাহেদ মিয়া, ভবানীপুর গ্রামের আবদুল লতিফ, আফাজ উদ্দিন, ইকড়ছই গ্রামের ময়না মিয়া, তকদ্দুস আলী, হাসির মিয়া, বলবল গ্রামের তোয়াজুল মিয়া, দিলদার হোসেন প্রমুখ।