নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ঘড়ির কাটা তখন ১২টা ২০ মিনিটে। হঠাৎ করেই কেঁপে উঠলো সিলেট নগরীর দরগা গেইটে ১৪ তলা ভবনের নূরজাহান হাসপাতাল। আতঙ্কে হাসপাতালের রোগী, তাদের স্বজন ও কর্মকর্তা কর্মচারিরা নিরাপদে কেউবা টেবিলের নিচে, কেউ কেউ শক্ত বিমের নিচে অবস্থান নেন। ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড হয়ে যায় বিভিন্ন বিভাগ। আহতদের আতঙ্ক আহাজারিতে রূপ নেয়। সুউচ্চ ভবনে আটকে পড়া ও আহতদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের সাথে যোগ দেন অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবী।’বুধবার নগরীর দরগা গেইটস্থ নূরজাহান হাসপাতালে ভূমিকম্পে দূর্যোগ মোকাবেলায় মহড়ার দৃশ্য ছিলো এ রকম।
ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কমাতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহড়ায় ভূমিকম্প হলে বহুতল ভবন ধ্বসে গেলে সেখান থেকে যতটুকু সম্ভব কম সময়ে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারের কৌশলের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মহড়া চলাকালে বহুতল ভবনে আটকে পড়াদের উদ্ধার ও তাদের চিকিৎসা কৌশল ছাড়াও দুর্যোগকালীন মুহূর্তে কিভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করার কৌশলও প্রদর্শিত হয় মহড়ায়।
সকাল ১১টা থেকে মহড়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রস্ততি শেষে বেলা ১২টা ২০ মিনিটে শুরু হয় চুড়ান্ত মহড়া। এ সময় ভূমিকম্পে ভবস ধ্বস ও এতে আটকে পড়াদের উদ্ধারের কৌশল ও তাৎক্ষনিক চিকিৎসাসেবা প্রদানের বিষয়টি উঠে আসে। অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবীর সাথে নূরজাহান হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারিরাও মহড়ায় অংশ নেন। স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে শিখে নেন দূর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি। এ সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান, ইন্সপেক্টর হুমায়ুন কারনাইন, নূরজাহান হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. নাসিম আহমদ, পরিচালক (প্রশাসন) সাফী মোহাম্মদ নাহিয়ান, পরিচালক (অর্থ) সারা বিনতে নাসিম, সিএমও ডা. সাইফুল্লাহ, আরএমও ডা. সুমন লাল দে, নির্বাহী প্রশাসক হাবিবুর রহমান, অর্থ শাখার শ্রিপ্রা চক্রবর্তী, সম্পা দে, আজিজুর রহমান রুবেল, হসপিটাল সুপারভাইজার হুমায়ুন কবির, মোজ্জামেল চৌধুরী কনক ও কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার এবং ফায়ার সার্ভিসের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে নূরজাহান হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. নাসিম আহমদ বলেন, প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। সরকারের আন্তরিকতায় দেশে বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি একনেকে ৬৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবী গড়ে তোলার বিষয় পাশ হয়। ফায়ার সার্ভিসের দক্ষ কর্মকর্তাদের সহায়তায় এ ধরণের হাতে কলমে শিক্ষা দূর্যোগ মোকাবেলায় কাজে আসবে।
এ ব্যাপারে সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভির ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সিলেট ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ একটি নগরী। সম্ভাব্য দূর্যোগ মোকাবেলা প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকের বিকল্প নেই। আর এ কারণে স্বেচ্ছাসেবকদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ ও জনসচেতনা বৃদ্ধিতে নগরীতে ধারাবাহিক মহড়া দেয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে নূরজাহান হাসপাতালেও মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।